প্রমাণ পেলে শোভন-রাব্বানীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা: কাদের

প্রকাশ | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৬:৪৬ | আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ২১:৪৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
শোভন ও রাব্বানী (ফাইল ছবি)

পদ থেকে সরিয়ে দেয়া ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর ‍বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধের প্রমাণ পাওয়া গেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এই কথা জানান।

শোভন-রাব্বানীর বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা প্রসঙ্গে কাদের বলেন, ‘ছাত্রলীগের ইতিহাসে এমন ঘটনা ঘটেনি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে অনেক যাচাই-বাছাইয়ের পর নেতা নির্বাচন করা হয়েছিল। নেত্রীর নির্দেশে আমি তাদের নাম ঘোষণা করেছিলাম। তাদের ক্যারিয়ার, রেজাল্ট সবই ভালো ছিল। তারপরও এমন ঘটনায় নেত্রী অনেক মনঃক্ষুণ্ন হয়েছেন। এটি অন্যদের জন্য অনুকরণীয়।’

দুর্নীতি ও অপকর্ম প্রতিরোধে প্রয়োজনে দলের ভেতরে শুদ্ধি অভিযান চালানো হবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে বলা হয়েছে রিপোর্ট নেয়ার জন্য, কোথাও কোনো অপকর্ম হলে যথাযথ তথ্য দিতে। ভবিষ্যতে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রয়োজনে দলের ভেতরে শুদ্ধি অভিযান চালানো হবে। কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে। সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। আমাদের দলের কেউ যদি অন্যায় করে তাহলে তাকেও ছাড় দেওয়া হবে না। অপকর্ম করলে সবাইকে শাস্তি পেতে হবে।’

আগামী ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আপনিসহ আরও কয়েকজনের নামও আসছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের পার্টির সভাপতি শেখ হাসিনা। আমাদের পার্টিতে বারে বারে যেটা হয় দলের কাউন্সিলরা সব সময় নেতৃত্ব নির্বাচনে নেত্রীর মাইন্ড সেটের ওপর সবকিছু ছেড়ে দেয়। জেনারেল সেক্রেটারি পদটি পার্টি প্রধানের নির্দেশনায় চলে। এখানে প্রার্থী হওয়ার অধিকার সবার আছে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নেত্রীর ইচ্ছার বাইরে আসলে কিছু হয় না। নেত্রী জেনারেল সেক্রেটারি হিসেবে যাকেই চয়েজ করেন আওয়ামী লীগের কর্মী-কাউন্সিলররা তার প্রতি সবাই ঝুঁকে পড়ে। আরেকবার আমি থাকব কি না এটা নির্ভর করে নেত্রীর ওপর। তিনি নতুন কিছুও ভাবতে পারেন। নতুন মুখও চাইতে পারেন। তিনি যদি বলেন থাকতে, থাকব। তিনি যদি বলেন দায়িত্বের পরিবর্তন হবে, আমার কোনো আপত্তি নেই।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ভিসির পদত্যাগ কী কারণে, নৈতিক স্খলন। তিনি যদি কোনো অন্যায় করে থাকেন, এখানে যদি তার কোনো অপকর্মে সংশ্লিষ্টতা থাকে, তদন্তে যদি এটা প্রমাণিত হয় তাহলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনিও তো আইনের ঊর্ধ্বে নন।’

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইমলাম আলমগীরের জাবি ভিসির পদত্যাগ দাবির বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মির্জা ফখরুলতো সবার পদত্যাগ দাবি করছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগও দাবি করেছেন। তিনি নিজেই নিজের পদত্যাগ দাবি করেছেন। তিনি নির্বাচনে জিতেও পদত্যাগ করেছেন। আবার কথা রাখতে পারেননি, ওই শূন্য জায়গায় নিজেই আরেকজনকে মনোনয়ন দিয়ে নির্বাচিত করে সংসদে পাঠিয়েছেন।’

আওয়ামী লীগের সাধালণ সম্পাদক বলেন, ‘এই দ্বিচারিতায় তাদের যে ভালো ভালো কথার দাম নেই। তারা নিজেরা বলে একটা, করে আরেকটা। তারা নিজেরাই গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। নিজের দলের যখন গণতন্ত্রের সংকট তারা দেশের গণতন্ত্র নিয়ে যখন কথা বলে তখন সাধারণ মানুষ বিষয়টিকে হাস্যকরই মনে করবে।’

(ঢাকাটাইমস/১৭সেপ্টেম্বর/জেবি)