পঙ্গুত্ব দমাতে পারেনি বায়েজিদকে

প্রকাশ | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৮:৩৮

ক্রীড়া প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

আমরা সবাই কমবেশি ফুটবল খেলতে কিংবা দেখতে পছন্দ করি। কেউ প্রতিদিন বিকেলে শারীরিক ব্যায়ামের নেপথ্যে, কেউ বা ঝুম বৃষ্টিতে গা ভেজানো উপভোগ করতে কিংবা পেশাগতভাবে ফুটবলের সাথে জড়িত। কিন্তু শরীর বহনের একটি অঙ্গই যদি গায়েব থাকে এমন মানুষের ফুটবল খেলাটা কতটা উচ্চ আকাঙ্ক্ষার প্রকাশ, তা ভাষায় বোঝানো দায়!

এমনই এক ফুটবলার ১০ বছর পূর্বে সড়ক দুর্ঘটনায় পা হারানো কিশোরগঞ্জের বায়েজিদ বোস্তামি। মাত্র ছয় বছর বয়সে বায়েজিদ সাভারের এক রাস্তার পাশে ফুটবল খেলছিল। বল ছুটে যাওয়ায় বল সংগ্রহ করতে রাস্তার মাঝে চলে যায় সে। এমন সময় দ্রুতগতির একটি ট্রাক তার বাঁ-পায়ের উপর দিয়ে চলে যায়। দীর্ঘ দশ বছর যাবৎ পঙ্গুত্ব বরণ করলেও দমে যাননি বায়েজিদ বোস্তামি। কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে সবাই এক নামে তাকে চেনে। সুস্থ সবল খেলোয়াড়কেও টক্কর দিতে বায়েজিদের দক্ষতা ব্যাপক। প্রায়শই রেন্টে খেলতে যায় এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে।

বায়েজিদের মত এমন আরো অদম্য শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য ইমেগো স্পোর্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের প্রকল্প ‘খেলবেই বাংলাদেশ’ ও বাংলাদেশ এমপিউটি ফুটবলের যৌথ উদ্যোগে সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন বাফুফের আর্টিফিসিয়াল টার্ফে অনুষ্ঠিত হয় ‘এমপিউটি’ ফুটবল আসর।

দুর্ঘটনা কিংবা জন্মগতভাবে গোঁড়ালি বা কব্জির কাছাকাছি জায়গা থেকে শরীরের অঙ্গ হারানো ফুটবলাররাই কেবল অংশ নেয় এ ফুটবল আসরে। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সহযোগিতায় কনফিডেন্স গ্রুপ ও মুসলিম সুইটসের পৃষ্ঠপোষকতায় এই আয়োজনে অংশ নিতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে বাছাইকৃত ৫০ ফুটবলার সকালে অংশ নেন চূড়ান্ত বাছাইয়ে। বাছাইকৃত ফুটবলারদের নিয়ে বাফুফের আর্টিফিসিয়াল টার্ফে দুপুর ২টায় অনুষ্ঠিত হয় প্রীতি ফুটবল ম্যাচ।

ম্যাচ শেষে বায়েজিদ সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমি কোনোকিছুর সাহায্য ছাড়া এক পায়েই খেলতে পারি। আজকের ম্যাচের থেকেও বেশি গতিতে আমি দৌঁড়াতে পারি। আমি গাছে উঠতে, ফুটবল এবং ক্রিকেট খেলতে ভালবাসি। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করা অবশ্যই আমার জন্য গর্বের।’

দেশে এমন ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজন মঙ্গলজনকই বটে। এতে যেমন শারীরিকভাবে অক্ষম খেলোয়াড়দের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ হবে, তেমনি তাদের অর্থের যোগানেরও প্রক্রিয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/১৭ সেপ্টেম্বর/এআইএ)