ছাত্রদলের কাউন্সিল

সিদ্ধান্তের ক্ষমতা তারেককে দিলেন কাউন্সিলররা

প্রকাশ | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ২২:৫২ | আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ২২:৫৬

বোরহান উদ্দিন, ঢাকাটাইমস

কাউন্সিল নিয়ে এখনো জটিলতা কাটেনি ছাত্রদলে। আদালতের দিকে তাকিয়ে আছেন কাউন্সিলর, প্রার্থী ও কাউন্সিল প্রস্তুতি কমিটির নেতারা। এ অবস্থার মধ্যে কাউন্সিল সম্পর্কিত সব ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দিয়েছেন ছাত্রদলের কাউন্সিলররা।

আজ মঙ্গলবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কাউন্সিলরদের এক সভায় সর্বসম্মতিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানা গেছে।

ছাত্রদলের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য জাতীয় কাউন্সিলে অংশ নিতে সারা দেশ থেকে আসা সংগঠনের ৫৮০ জন কাউন্সিলর এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন। গত ১৪ সেপ্টেম্বর এই কাউন্সিলের তারিখ নির্ধারণ ছিল। তার আগে ১২ সেপ্টম্বর সাবেক কমিটির এক নেতার  মামলায় কাউন্সিল স্থগিত করে আদালত।

ছাত্রদল সূত্র জানায়, আজকের বৈঠকে কাউন্সিলররা ছাত্রদলের গঠন, পুনর্গঠন, গঠনতন্ত্র সংশোধন, কাউন্সিল আহ্বান, কাউন্সিল মুলতবি করা, ছাত্রদলের নেতৃত্ব নির্ধারণে নির্বাচন পরিচালনা করাসহ যেকোনো সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব তারেক রহমানকে দেওয়া হয়। এ-সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের প্রতি সমর্থন জানিয়ে কাউন্সিলররা নিজ নিজ স্বাক্ষর করেন।

কাউন্সিলরদের স্বাক্ষর সংগ্রহ নিয়ে ছাত্রদলের কারও কারও মধ্যে আবার সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। বিশেষ করে দুই শীর্ষ পদের প্রার্থীদের আশঙ্কা, কাউন্সিল বাদ দিয়ে সিলেকশন প্রক্রিয়ায় কেন্দ্রীয় কমিটি হতে পারে।

এর পেছনে সিন্ডিকেট সক্রিয় হতে পারে আশঙ্কা করে কয়েকজন প্রার্থী বলেন, ‘সিন্ডিকেটের হোতারা পরিস্থিতির সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করছেন। তারা চাইছেন নির্বাচন প্রক্রিয়ায় না গিয়ে সিলেকশনের মাধমে সিন্ডিকেটের প্রার্থীদের দিয়ে কমিটি গঠনের।

কাউন্সিলরদের স্বাক্ষর সংগ্রহ সভায় উপস্থিতির স্মারক হিসেবে নেওয়া হয়েছে বলে জানান ছাত্রদলের সদ্য বিলুপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী। তিনি  কাউন্সিলরদের স্বাক্ষর নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘কাউন্সিলররা বৈঠক করেছেন, তারা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব দিয়েছেন। তারা বৈঠকে উপস্থিতির স্বাক্ষর দিয়েছেন।’

ছাত্রদলের কাউন্সিলর সরকারি বাংলা কলেজের সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসান টিটু ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘কাউন্সিল হবে এই চিন্তা থেকেই আজকের বৈঠকটি হয়েছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ছাত্রদলে নতুন নেতৃত্ব আনতে চান এটা আমরা বিশ্বাস করি। তাই তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আশা করি সুবিধাজনক সময়ে তিনি কাউন্সিলের ব্যবস্থা করবেন।’

দীর্ঘ ২৭ বছর পর গত ১৪ সেপ্টেম্বর ছাত্রদলের ষষ্ঠ কাউন্সিল হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিলুপ্ত কমিটির সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মো. আমানউল্লাহ কাউন্সিল স্থগিত চেয়ে ১২ সেপ্টেম্বর মামলা করলে এতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা ও বিএনপির মহাসচিবসহ ১০ জনকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেয় আদালত। এরপর স্থগিত হয়ে যায় ছাত্রদলের কাউন্সিল।

জানা গেছে, আরপিও অনুযায়ী বিএনপি ছাত্রদলের কাউন্সিল আয়োজন করতে পারে না আদালতে এমন অভিযোগ করা হয়েছে। দলের আইনজীবীরা নেতাদের সঙ্গে কথা বলে নোটিশের জবাব তৈরি করছেন। কাউন্সিলরদের বৈঠকের সিদ্ধান্তের কপিও আদালতে জমা দেয়া হবে।

এর আগে গত ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল গত ১৫ জুলাই। নতুন কমিটির পদে প্রার্থিতার জন্য নিয়ম করা হয়- ২০০০ সালের আগে যারা এসএসসি পাস করেছেন তারা কাউন্সিলে প্রার্থী হতে পারবেন না। এই বাধ্যবাধকতা সে সময় ছাত্রদলের সদ্য সাবেক নেতাদের ক্ষুব্ধ করে। এ নিয়ে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কিছু অনাকাক্সিক্ষত ঘটনাও ঘটে, ছাত্রদলে দেখা দেয় সংকট। ফলে নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয় ১৪ সেপ্টেম্বর।

এবার আদালতের আদেশে কাউন্সিল স্থগিতের পেছনে ক্ষমতাসীন দলের হাত রয়েছে বলে সন্দেহ বিএনপির নেতাদের। তবে তা নাকচ করে দেন আওয়ামী লীগের নেতারা।

(ঢাকাটাইমস/১৭ সেপ্টেম্বর/মোআ)