ছাত্রত্ব ফুরোয় তবুও ছাত্রহলের সমস্যা কাটে না

প্রকাশ | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৩:৪৪ | আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৩:৪৬

কৃষ্ণ বালা, যবিপ্রবি প্রতিনিধি
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন

প্রথম বর্ষে ভর্তির পর হলে উঠে নানা সমস্যায় পড়তে হয় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) ছাত্রদের। শহীদ মসিয়ূর রহমান হল এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের একমাত্র আবাসিক হল। হলটির সমস্যা বহুবিধ। প্রথম বর্ষ থেকে শেষ বর্ষ শেষ করে বেরিয়ে যায় ছাত্ররা। তবুও হলটির সমস্যা রয়ে যায়।

ভর্তি হয়ে নতুনরা এসেও পুরনোদের মতো ভোগান্তিতে পড়েন। হলের ডাইনিং, রিডিং রুম থেকে শুরু করে বাথরুম সব জায়গাতেই অন্তহীন সমস্যা। বছরের পর বছর ধরে সমস্যা সমাধানে কোনও উদ্যোগও নেই কর্তৃপক্ষের। তবে এসব সমস্যা তার একার দেখার কথা না বলে দায়সারা হলটির প্রাধ্যক্ষ।

জানা যায়, যবিপ্রবির একমাত্র হলটিতে ৫৫৪ জনের আবাসন সুবিধা রয়েছে। বর্তমানে ৫০৪ জন আবাসিক ছাত্র রয়েছেন। আর আসন খালি আছে ৫০টি। কিন্তু বিভিন্ন বর্ষের ৫৫৪ জনের হলের প্রধান সমস্যা হল ক্যান্টিনের খাবারের মান। ডাইনিং ও হলের একমাত্র ক্যান্টিনে একেবারে নিম্নমানের খাবার বিক্রি হওয়ার কারণে অধিকাংশই শিক্ষার্থীই ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের বাইরের হোটেলগুলোর ওপর নির্ভরশীল।

সরেজমিনে দেখা গেছে, হলের সামনের সম্প্রসারিত অংশে বেসিন, বাথরুম ও গোসলখানায় কোনো সমস্যা না থাকলেও পুরনো ভবনের প্রায় প্রতিটি তলায় অধিকাংশ বেসিনই নষ্ট। গোসলের ঝর্ণা দিয়ে পড়ে না পানি। আর গোসলখানা ও বেসিনের জায়গার মাঝে পানি জমে থাকে সর্বক্ষণ। এর জন্য সবসময় আতঙ্কে থাকেন ছাত্ররা।

এদিকে হলে ওয়াইফাই ইন্টারনেট সুবিধা দেওয়ার জন্য রাউটার স্থাপন করা হলেও তার সুবিধাও পাচ্ছেন না ছাত্ররা। ওয়াইফাই সংযোগ দিলেও রাউটার থেকে দূরের রুমগুলো সংযোগ পায় না, কিছু সময় পর পর সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। আর যদিওবা সংযোগ মিলে তবে খুবই ধীরগতিসম্পন্ন। ফলে প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়টির ছাত্ররা বঞ্চিত হচ্ছেন ইন্টারনেট সেবা থেকে।

অন্যদিকে হলে নামকাওয়াস্তে একটি রিডিং রুম থাকলেও নেই কোনো লাইব্রেরি। আরেকটি এসি রিডিং রুমের পাশেই কমনরুমের হৈ-হুল্লোড়ের কারণে ছাত্রদের পড়াশোনার কোনো পরিবেশই নেই।

ছাত্রদের দাবির প্রেক্ষিতে সম্প্রতি হলের প্রাধ্যক্ষ কিছু প্রদক্ষেপ নিলেও প্রধান সমস্যাগুলো রয়েই গেছে। সাধারণ ছাত্ররা এসব ভোগান্তি থেকে রেহাই পেতে সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়ে আসছে।

এসব বিষয়ে জানতে শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ মো. আমজাদ হোসেন বলেন, ‘কাজের সীমাবদ্ধতা থাকার কারণে সমস্ত সমস্যা আমার একার দ্বারা সমাধান করা সম্ভব না।’ তবে কার মাধ্যমে কিভাবে এসব সমস্যার সমাধান আসবে সেই প্রশ্নেরও কোনও উত্তর মেলেনি তার কাছে।

ওয়াইফাই ইন্টারনেটের সমস্যার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটার যাবতীয় কাজ সম্পূর্ণভাবে বিডি রেন নামের যে প্রতিষ্ঠানটি সার্ভিস দেয় তাদের। এটা তাদেরই দায়িত্ব।’

রিডিং রুমের পাশেই কমনরুমের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘কমনরুম হলের নতুন অংশে স্থানান্তর করা হবে। তখন আর সমস্য থাকবে না।’

এদিকে বিশ^বিদ্যালয়ে বহিরাগতদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ, ফগিং মেশিনের ব্যবহার, ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ হলের বিভিন্ন উন্নয়ন ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে গৃহীত পদক্ষেপগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি শিক্ষার্থীদের।

(ঢাকাটাইমস/১৮সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/ডিএম)