‘ভিসি স্যার চিঠি নিতে নিষেধ করেছেন’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা অনুষদভুক্ত একটি কোর্সে ভর্তি পরীক্ষা না দিয়ে ভর্তি হওয়া এক নেতার বিরুদ্ধে একজন শিক্ষার্থী লিখিত অভিযোগ দিতে গেলে তা গ্রহণ করেনি ভিসির দপ্তর। তাকে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, এ-সংক্রান্ত কোনো চিঠি রিসিভ করতে উপাচার্য তাদের নিষেধ করেছেন।
অভিযোগ দিতে যাওয়া শিক্ষার্থী বিন ইয়ামিন মোল্লা গত ডাকসু নির্বাচনে স্যার এ এফ রহমান হলের ভিপি পদপ্রার্থী ছিলেন। তিনি গতকাল অভিযোগ দিতে গিয়েছিলেন ভর্তি পরীক্ষা না দিয়েই ব্যবসা অনুষদভুক্ত সান্ধ্যকালীন কোর্সে ভর্তি হওয়া ছাত্রলীগ নেতা এবং এ এফ রহমান হল সংসদের সহসভাপতি আব্দুল আলীম খানের বিরুদ্ধে।
বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার হচ্ছে, আব্দুল আলীম, ডাকসুতে নির্বাচিত আটজনসহ ছাত্রলীগের আরো ২৫ নেতা তড়িঘড়ি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এবং বাণিজ্য অনুষদের ডিন শিবলী রুবায়াতুল ইসলামের সহযোগিতায় ওই কোর্সে ভর্তি হয়েছিলেন ।
এসব ভর্তি বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন সংগঠন মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করছে।
ভিসির কাছে অভিযোগ দিতে যাওয়ার প্রসঙ্গে বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ‘ভিসির চিরকুটের মাধ্যমে ভর্তি হওয়া ৩৪ নেতার মধ্যে একজন এ এফ রহমান হল সংসদের ভিপি। গত ডাকসু নির্বাচনে আমি তার সঙ্গে ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলাম। সে হিসেবে আমি একজন সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি হিসেবে আমার ব্যক্তিগত জায়গা থেকে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করি। তার বিরুদ্ধে ডাকসুর সভাপতি, ভিসি স্যারের কাছে অভিযোগ দিতে গিয়েছিলাম।’
এর আগে উপাচার্য গণমাধ্যমকে বলেছিলেন পরীক্ষা ছাড়া ভর্তির বিষয়ে কোনো অভিযোগ তার কাছে যায়নি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আজ অভিযোগ নিয়ে যান বলে জানান বিন ইয়ামিন। কিন্তু তার অভিযোগ নেইনি ভিসি অফিস।
বিন এয়ামিন বলেন, ‘ভিসি স্যারের কার্যালয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান , চিঠিটি যেহেতু ডাকসুর সভাপতি বরাবর সেহেতু এটি ডাকসুর অফিস থেকে ইস্যু করিয়ে স্যারের কাছে পাঠাতে হবে। আমি চিঠিটি ডাকসুর অফিসে জমা দিলে কিছুক্ষণ পর ডাকসু অফিসের কর্মকর্তা বলেন, ভিসি স্যারের কার্যালয়ের কর্মকর্তার জানিয়েছেন ডাকসুর পক্ষ থেকে তারা এ সংক্রান্ত কোনো চিঠি গ্রহণ করবে না । আমাকে স্বশরীরে গিয়ে জমা দিতে হবে।
এরপর আবার ভিসি কার্যালয়ে যান বিন ইয়ামিন। তখন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা তাকে বলেন, ভিসির পক্ষ থেকে মৌখিক নির্দেশনা রয়েছে যে জালিয়াতি করে যারা ভর্তি হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগপত্র যেন জমা না নেওয়া হয়।
বিন ইয়ামিন একই অভিযোগ নিয়ে গিয়েছিলেন ডাকসু নির্বাচনের চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে। তিনি জানান, তার দায়িত্ব শেষ হয়ে গেছে। এ বিষয়ে তিনি আর কোনো কথা , কাজ এবং দায়িত্ব নিতে পারবেন না।’
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (শিক্ষা), প্রো-ভিসি (প্রশাসন) এবং এ এফ রহমান হলের প্রভোস্ট তাদের কপিটি জমা নিয়েছেন বলে জানান বিন ইয়ামিন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে হুঁশিয়ারি করে বিন ইয়ামিন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি এই ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ না নেয় তাহলে আমি আইনি প্রক্রিয়ায় যাব।’
বিন ইয়ামিনের অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বিষয়টি এড়িয়ে যান। পরে ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। অফিসের নির্দিষ্ট নিয়মে অফিস পরিচালিত হয়। কতগুলো প্রিন্সিপলস আছে অফিস পরিচালনার।’
(ঢাকাটাইমস/১৮সেপ্টেম্বর/মোআ)