দুই ব্রিজে ফাটল

ঝুঁকি নিয়ে চলছে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের ২০টি ট্রেন

রানা আহমেদ, সিরাজগঞ্জ
 | প্রকাশিত : ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৮:৩১

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলায় দুটি রেলব্রিজের অবস্থায় সংকটাপন্ন। ব্রিজ দুটিতে ফাটল দেখা দেয়ার পর লোহা ও কাঠের অ্যাঙ্গেল বসিয়ে কোনওভাবে সচল রাখা হয়েছে। ফলে ২০টি ট্রেন প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। দেড় মাস ধরে এ অবস্থার সৃষ্টি হলেও সংশ্লিষ্ট রেল কর্তৃপক্ষ এখনও মেরামত কাজ না করায় এখানে বড় ধরণের দূর্ঘটনার আশংকা করছেন এলাকাবাসি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার লাহিড়ীমহোনপুর ইউনিয়নের বঙ্কিরোট এলাকার ২৮নং ও কয়ড়া ইউনিয়নের মহিষাখোলা কামারপাড়া এলাকার ২৯নং রেলব্রীজ দুটির গাডারে ফাটল ও লোহার পাতে মরিচা ধরে ক্ষয় হয়ে যাওয়ায় চরম ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ফলে এ ব্রীজ দুটি পাপারের সময় থেমে থেমে ও ধীরগতিতে চলছে ঢাকার সাথে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের প্রায় ২০টি ট্রেন।

ক্ষতিগ্রস্থ কয়ড়া ইউনিয়নের মহিষাখোলা কামারপাড়া ব্রীজ ঘুরে দেখা যায়, এর গাডারে বেশ কয়েকটি ফাটল দেখা দিয়েছে। ফলে রেল বিভাগ ওই ক্ষতিগ্রস্থ ব্রীজের নিচে লোহার এ্যাঙ্গেল, কাঠের স্লিপারের ঠেকনা (সিসি ক্লিক) দিয়ে কোনমতে ঠেকিয়ে রেখেছে। এ ছাড়া এ দুটি ব্রীজের দুপাশে ট্রেনের সর্বচ্চ গতি সীমা ২০ কিলোমিটার লেখা সতর্ক সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে। এমন কি সেখানে রেল বিভাগ থেকে দুইজন ওয়েম্যানও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে ওয়েম্যান রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি এক সপ্তাহ ও জাহাঙ্গীর আলম নামের অপরজন এক সপ্তাহ কারে এখানে দায়িত্ব পালন করছেন। ট্রেন আসা দেখলেই তারা লাল ও সবুজ পতাকা উড়িয়ে ট্রেনের গতি কমিয়ে চলার সংকেত দেয়। চালক এ সংকেত পেয়ে এ ব্রীজের অদূরে ট্রেন থামিয়ে দেয়। এরপর গতি কমিয়ে ব্রীজটি পার হয়।

তিনি বলেন, ‘এতে এ রুটে চলাচলকারী প্রায় ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে। ট্রেনগুলো সঠিক সময়ের মধ্যে গন্তব্যে পৌছাতে পারছে না।

এই ব্রীজ দিয়ে প্রতিটি ট্রেন মাত্র ঘন্টায় ৫ কিলোমিটার বেগে চলছে। এর উপরে গেলেই ব্রীজটি ঝাঁকুনি দিয়ে কেঁপে উঠছে। ফলে বড় ধরণের দূর্ঘটনার আশংকা দেখা দিয়েছে।

উল্লাপাড়া রেলস্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার রফিকুল ইসলাম জানান, ঢাকা-ঈশ^রদী রেল রুটের সিরাজগঞ্জ থেকে ঈশ^রদী পর্যন্ত যত গুলো ব্রীজ আছে এর অধিকাংশই বৃটিশ আমলে নির্মিত। ফলে এ দুটি ব্রীজের বয়স প্রায় ১০০ বছর পাড় হয়েছে।

এ ছাড়া উল্লাপাড়া ও ভাঙ্গুড়া উপজেলার রেলপথ অংশটি চলনবিলের মধ্যে হওয়ায় প্রতি বছর বন্যা মৌসুমে পানির তীব্র স্রোত ও ঢেউয়ে ধাক্কায় এ ব্রীজ দুটির গাডার দুর্বল হয়ে এর কোথাও কোথাও ফাটলেরও সৃষ্টি হয়েছে। ফলে গাডার গুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে অনেকটাই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, ‘এ রেলপথে ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেস সহ প্রায় ১৪টি আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেন ও ৬টি তেল, কয়লা ও মালবাহী ট্রেন চলাচল করে। এ সব গুলোই এখন ঝুকি নিয়ে চলাচল করছে।

এ বিষয়ে পাকশী রেলওয়ে বিভাগের বিভাগীয় রেলপথ ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) আহসান উল্লাহ ভূইঁয়া ক্ষতিগ্রস্ত ব্রীজ দুটির উপর দিয়ে ঝুকি নিয়ে ট্রেন চলাচলের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমে চলনবিলের বন্যার পানির তীব্র স্রোত ও প্রচন্ড ঢেউয়ের আঘাতে ব্রীজ দুটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বর্ষা শেষ হলেও এখনো সেখানে অনেক পানি।

তাই এ অবস্থায় সেখানে মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া এ রেলপথটি রাজধানী ঢাকার সাথে উত্তর ও দক্ষিণ অঞ্চলের রেল যোগাযোগের একমাত্র পথ। তাই এ পথে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে আপাতত এ ব্রীজের নিচে অস্থায়ী ভাবে সিসি ক্লিক নির্মাণ করা হয়েছে। ওই ব্রীজের পাশে বিকল্প ট্রেন চলাচল ব্যবস্থা তৈরী করে ক্ষতিগ্রস্থ ব্রীজ দুটি নতুন করে নির্মাণ করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/২২সেপ্টেম্বর/ডিএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :