ঢাবিতে এসে উত্তাপ ছড়ালেন ছাত্রদল সভাপতি-সম্পাদক
ছাত্রদলের নবনির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে অনেকটা উত্তাপ ছড়িয়েছেন ক্যাম্পাসে। রাজনীতির আঁতুড়ঘর হিসেবে খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রলীগের নেতাদের সঙ্গে তারা শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন। এ সময় দুই সংগঠনের নেতাকর্মীরা পাল্টাপাল্টি স্লোগান দেন। যদিও শেষ পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
রবিবার বেলা ১১টায় ছাত্রদলের নতুন নেতৃত্ব নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে মধুর ক্যান্টিনে আসেন। আগে থেকেই মধুতে বসা ছিলেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা । এ সময় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়া, জিয়াউর রহমানকে নিয়ে স্লোগান দিলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও শেখ হাসিনা এবং শেখ মুজিবর রহমানের নামে স্লোগান দিতে থাকেন। আর এতেই মধুর ক্যান্টিনসহ আশপাশের এলাকা স্লোগানে প্রকম্পিত হয়।
জানা যায়, বেলা ১১টার দিকে ছাত্রদলের নির্বাচিত সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন এবং সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হাসান শ্যামলের সঙ্গে মধুতে আসেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। আগে থেকেই সেখানে ছিলেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য , ঢাবি ছাত্রলীগ নেতা রনজিত চন্দ্র দাশ এবং সাদ্দাম হোসেনসহ সংগঠনের বিভিন্ন ইউনিটের শতাধিক নেতাকর্মী।
ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এসেই হাত মিলিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন উপস্থিত ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক এবং ঢাবি শাখার সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে। তবে পাশ থেকে বিভিন্ন হলের নেতাকর্মীরা ‘ছাত্রদলের গুন্ডারা হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘তারেক জিয়ার দুই গালে জুতা মার তালে তালে’, ‘তারেক জিয়ার চামড়া তুলে নেব আমরা’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এরপর তারাও পাল্টা স্লোগান দিতে থাকেন। এভাবে চলতে থাকে বেশ কিছু সময়। পরে বেলা ১২টার দিকে মধুর ক্যান্টিন থেকে বেরিয়ে ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তারা ক্যাম্পাসে সব সংগঠনের সহাবস্থান দাবি করেন।
এসময় সংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন বলেন, ‘২৮ বছর পর ছাত্রদলের নতুন নেতৃত্ব গঠিত হয়েছে। ছাত্রদল সবসময় ছাত্রদের অধিকার নিয়ে কথা বলেছে এবং কাজ করেছে। বর্তমানে গোপালগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের অধিকার নিয়ে সমস্যা হচ্ছে, আমরা এটা নিয়ে কাজ শুরু করেছি। আপনার শিগগির এর বাস্তবায়ন দেখতে পারবেন।’
ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হাসান শ্যামল বলেন, ‘গণতন্ত্রের সৌন্দর্য হলো ভিন্নমতকে পাশাপাশি অবস্থান করানো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সীমিত আকারে গণতন্ত্র বিরাজ করছে, কিন্তু সেটা পর্যাপ্ত না। ভিন্নমত ধারণ করার কারণে আমাদের হল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা হলে থাকতে পারছেন না। আমরা ক্যাম্পাসের ক্রিয়াশীল সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সৌহার্দ্য বিনিময় করতে গিয়েছি, কিন্তু আমরা সেরকম সৌজন্যতা তাদের কাছ থেকে পাইনি। উল্টো বিভিন্ন উসকানিমূলক স্লোগান এবং বিভিন্ন জিনিস আমাদের দিকে নিক্ষেপ করেছে তারা।’
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, ‘ছাত্রদল বুড়োদের সংগঠন, আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও রাতের আঁধারে তারা কমিটি করেছে। কেউ যদি ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়, স্বাধীনতাবিরোধী কোনো কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকে তাহলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে আমরা তাদের প্রতিহত করব।’
আজকের এই পরিবেশ বজায় থাকবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ছাত্রদল শৃঙ্খলা বজায় রাখলে এই পরিবেশও বজায় থাকবে।
(ঢাকাটাইমস/২২সেপ্টেম্বর/এমআই/জেবি)