সম্রাটসহ কয়েকজনের ব্যাংক হিসাব তলব
ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে আলোচনায় থাকা যুবলীগ নেতা ইসমাঈল হোসেন চৌধুরী সম্রাটসহ বেশ কয়েকজনের ব্যাংক হিসাব তলব করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। এই তালিকায় ভোলার সাংসদ নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনসহ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা রয়েছেন বলে জানা গেছে। যদিও শাওনের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
জানা যায়, সোমবার দেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীর কাছে এক চিঠি পাঠিয়ে এসব ব্যক্তির হিসাবের তথ্য চায় এনবিআর।
হিসাব তলব করা ব্যক্তিদের তালিকায় প্রশান্ত কুমার হালদার, আফসার উদ্দীন মাস্টার, আয়েশা আক্তার, শামীমা সুলতানা, শেখ মাহামুদ জোনাইদ, মো. জহুর আলম, এসএম আজমল হোসেন, ব্রজ গোপাল সরকার ও শরফুল আওয়ালের নাম রয়েছে বলে জানা গেছে।
এনবিআরের চিঠিতে বলা হয়, এসব ব্যক্তির নামে কোনো হিসাব অতীতে বা বর্তমানে পরিচালিত হয়ে থাকলে সে হিসাবের যাবতীয় তথ্য (হিসাব খোলার ফর্ম, কেওয়াইসি, ট্রানজেকশার, প্রোফাইল, শুরু থেকে হালনাগাদ বিবরণী) জরুরি ভিত্তিতে এনবিআরে আগামী ২৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পাঠাতে হবে।
এছাড়া গ্রেপ্তার হওয়া যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া ও গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জিকে শামীমসহ সব ক্যাসিনো কারবারির ব্যাংক হিসাব স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
ব্যাংকগুলোতে পাঠানো বিএফআইইউ-এর চিঠিতে বলা হয়েছে, খালেদ মাহমুদ, জিকে শামীমের স্ত্রী, সন্তান ও মা বাবার ব্যাংক হিসাব স্থগিত রাখার পাশাপাশি ৫ কর্মদিবসের মধ্যে সব তথ্য বিএফআইইউকে জানাতে হবে।
এ বিষয়ে বিএফআইইউ-এর প্রধান আবু হেনা মোহাম্মদ রাজি হাসান ঢাকাটাইমসকে বলেন, যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে বা পত্রপত্রিকায় নাম এসেছে আমরা তাদের বিরুদ্ধে খতিয়ে দেখতে এনবিআরকে বলেছি। আমরা নিজেরাও খতিয়ে দেখছি।
সাংসদ শাওনের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি সরাসরি জবাব দেননি। তবে তিনি বলেন, মামলা না হলে এসব ক্ষেত্রে কিছু প্রসেসিংয়ের বিষয় আছে। আমরা খতিয়ে দেখছি। দেখা যাক কী হয়।
গত শুক্রবার র্যাব রাজধানীর নিকেতনে জি কে শামীমের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে হানা দিয়ে তাকে এবং তার সাত দেহরক্ষীকে গ্রেপ্তার করে। শামীম ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জি কে বিল্ডার্সের মালিক তিনি। তিনি নিজেকে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সমবায়বিষয়ক সম্পাদক বলে পরিচয় দিতেন। যদিও কেন্দ্রীয় যুবলীগ দাবি করছে, শামীম তাদের কেউ না।
অভিযানকালে র্যাব শামীমের অফিস থেকে এক কোটি ৮০ লাখ টাকা, ১৬৫ কোটি টাকার স্থায়ী আমানতের (এফডিআর) কাগজপত্র (তার মায়ের নামে ১৪০ কোটি), নয় হাজার ইউএস ডলার, ৭৫২ সিঙ্গাপুরি ডলার, একটি আগ্নেয়াস্ত্র এবং মদের বোতল জব্দ করে।
পরে র্যাব জি কে শামীমকে গুলশান থানায় হস্তান্তর করে তিনটি মামলা দেয়। সেই মামলায় তিনি ১০ দিনের রিমান্ডে আছেন। সঙ্গে তার সাত দেহরক্ষীও চার দিনের রিমান্ডে আছেন।
এদিকে সরকারের উচ্চ মহলের নির্দেশে চলছে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান। এতে প্রভাবশালী বিভিন্ন নেতার নাম উঠে আসছে। এর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের নাম। তাকে যেকোনো সময় গ্রেপ্তার করা হতে পারে এমন একটা গুঞ্জন রয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/২৩সেপ্টেম্বর/জেবি)