তিন বিয়ে করা বিনোদের জীবনে এসেছিলেন রেখারও

বিনোদন ডেস্ক
 | প্রকাশিত : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৫:৫৭

বিনোদ মেহরা। উপমহাদেশের বিখ্যাত গায়ক ও অভিনেতা কিশোর কুমারের ছোটবেলার চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তার রুপালি পর্দায় অভিষেক হয়েছিল। পরবর্তীকালে তিনি হয়ে ওঠেন বলিউডের হার্টথ্রব নায়ক। চিরকালীন রোমান্টিক নায়কের ইমেজ। কিন্তু এই অভিনেতার ব্যক্তিগত জীবনে সম্পর্কের টানাপড়েন ছিল অব্যাহত।

সুদর্শন বিনোদের জন্ম হযেছিল ১৯৪৫ সালে পাঞ্জাবের অমৃতসরে। তার বাবার নাম পরমেশ্বরীদাস মেহরা এবং মায়ের নাম কমলা মেহরা। পরে মেহরা পরিবার চলে আসে মুম্বাইতে।

বিনোদের পড়াশোনা প্রথমে সান্টাক্রুজের স্যাক্রেড হার্ট স্কুল, পরে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে। তার বড় বোন সারদা সত্তরের দশকে কিছু ছবিতে অভিনয় করেছিলেন। তারপর বিনোদের পা রাখা ইন্ডাস্ট্রিতে।

১৯৫৮ সালে শিশুশিল্পী বিনোদের প্রথম অভিনয় ‘রাগিনী’ ছবিতে কিশোর কুমারের শৈশবের ভূমিকায়। দুই বছর পরে ‘বেওকুফ’ ছবিতেও তিনি ছিলেন কিশোর কুমারের ছোটবেলার চরিত্রে।

নায়ক হিসেবে বিনোদের প্রথম ছবি ‘এক থি রীতা’ মুক্তি পায় ১৯৭১ সালে। ছবির নায়িকা ছিলেন তনুজা। এরপর ‘পর্দে কে পিছে’, ‘এলান’, ‘অমর প্রেম’, ‘অনুরাগ’, ‘লাল পাত্থর’, ‘জানি দুশমন’, ‘নাগিন’, ছবিতে নজরকাড়া পারফরম্যান্স বিনোদের।

দুই দশকের কেরিয়ারে বিনোদ অভিনয় করেন একশোটিরও বেশি ছবিতে। নায়ক ছাড়াও তাকে দেখা পার্শ্বচরিত্রেও। অমিতাভ বচ্চন, সঞ্জীব কুমার, রাজেশ খান্না, সুনীল দত্ত, ধর্মেন্দ্রর মতো তারকাদের সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করেছেন তিনি।

তারকা হওয়ার আগেই বিনোদ মেহরা বিবাহিত। পরিবারের পছন্দ করা পাত্রী মীনা ব্রোকাকে বিয়ে করেছিলেন। বিয়ের কয়েক বছর পরেই প্রথমবার হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। এরপর থেকেই মীনার সঙ্গে তার সম্পর্ক তিক্ত হতে শুরু করে।

মীনাকে ডিভোর্স করে বিনোদ বিয়ে করেন বিন্দিয়া গোস্বামীকে। কিন্তু তার দ্বিতীয় বিয়েও দীর্ঘস্থায়ী হয় না। বিনোদকে ছেড়ে চলে যান বিন্দিয়া। তিনি বিয়ে করেন পরিচালক জে পি দত্তকে।

সত্তরের দশকের মাঝামাঝি বিনোদ মেহরার সঙ্গে তখনকার সুপারহিট নায়িকা রেখার সম্পর্ক নিয়ে নানা গুঞ্জন উঠেছিল। তারা নাকি গোপনে বিয়ে করেছেন। তবে দুজনের কেউই এই সম্পর্ক স্বীকার করেননি। পরে সিমি গারেওয়ালের টক শো-য়ে এসে রেখা বলেছিলেন, বিনোদ তার শুভাকাঙ্ক্ষী ছিলেন মাত্র।

আশির দশক থেকে বিনোদ মেহরার ব্যক্তিগত জীবন এবং কেরিয়ার, দুদিকই ব্যাহত হতে শুরু করে। নায়কের ভূমিকা থেকে পার্শ্বচরিত্রে আগেই সরে গিয়েছিলেন। এবার সেই সুযোগও বন্ধ হতে শুরু করল। পাশাপাশি আবার মাথাচাড়া দেয় হৃদরোগ।

১৯৮৮ সালে তৃতীয়বার বিয়ে করেন বিনোদ। কেনিয়ার এক ব্যবসায়ীর মেয়ে কিরণকে। সে বছরেই জন্ম তাদের মেয়ে সোনিয়ার। ছেলে রোহানের জন্ম ১৯৯০ সালে। কিন্তু পুত্রসন্তানকে দেখে যেতে পারেননি বিনোদ। ১৯৯০ সালে হৃদরোগে আত্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু হয় মাত্র ৪৫ বছর বয়সে। মৃত্যুর পর জন্ম হয়পুত্র রোহানের।

১৯৯০ সালে যে সময়ে বিনোদের মৃত্যু হয়, সে সময় ‘ইনসানিয়ৎ’ ছবির শুটিং চলছিল । আশ্চর্যজনকভাবে, ছবির অভিনেতা এবং অভিনেত্রী নূতন, দুজনের কেউই এই ছবির মুক্তি দেখে যেতে পারেননি। ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৯৪ সালে। বিনোদ মেহরা অভিনীত আরও কিছু ছবি মুক্তি পেয়েছিল তার মৃত্যুর পরে।

বিনোদের অকালপ্রয়াণে তৃতীয় স্ত্রী কিরণ বাধ্য হন তার দুই শিশুসন্তানকে নিয়ে কেনিয়া ফিরে যেতে। মোম্বাসা শহরে কিরণের বাবা-মা এবং বোনের কাছে বড় হয় সোনিয়া ও রোহান। ইংল্যান্ড থেকে উচ্চশিক্ষার পরে দুজনেই পা রেখেছেন ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে।

ঢাকাটাইমস/২৪ সেপ্টেম্বর/এএইচ

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিনোদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বিনোদন এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :