খালেদা জিয়া মুক্ত হলে সরকার টিকতে পারবে না: ফখরুল

প্রকাশ | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ২১:১৭ | আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ২২:০৮

মনোনেশ দাস ও আজহারুল হক, ময়মনসিংহ

খালেদা জিয়াকে মুক্ত করলে সরকার টিকতে পারবে না মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘কারণ বিএনপি নেত্রী জনপ্রিয়। আর এজন্যই সরকার তাকে আটকে রেখেছে।’

বৃহস্পতিবার বিকালে ময়মনসিংহ নগরীর রেলওয়ে কৃষ্ণচূড়া চত্বরে বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন ফখরুল।

বিএনপি নেতা বলেন, ‘জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। জালিম এই সরকারকে সরিয়ে দিতে হবে। আওয়ামী লীগ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ১০ টাকায় চাল খাওয়াবে। সেই চাল এখন ৪০ টাকা।’
পুলিশদের নিরপেক্ষ থাকার আহবান জানিয়ে ফখরুল বলেন, ‘বর্তমান শাসকগোষ্ঠী বিএনপিসহ অন্যান্য বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে নিশ্চিহ্ন করার গভীর চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে। নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বানোয়াট মামলা দিয়ে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে কারান্তরীণ করা হচ্ছে।’
‘সরকারের প্রতি জনগণের ঘৃণা তীব্র আকার ধারণ করেছে। সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের সুযোগ পেলে জনগণ তার উপযুক্ত জবাব দেবে। সেজন্য জনগণের ওপর জুলুম-নির্যাতন চালিয়ে জোর করে ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখতে চাইছে সরকার।’

তিনি বলেন, ‘সকল অন্যায়সহ দেশবিরোধী কর্মকাণ্ড থেকে জনদৃষ্টিকে ভিন্নদিকে সরানোর জন্য দেশব্যাপী হামলা-মামলা ও বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দকে গ্রেপ্তার শুরু করেছে। এজন্য বিএনপির নেতৃবৃন্দদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’

ময়মনসিংহ জেলা দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দের সঞ্চালনায় ময়মনসিংহ জেলা দক্ষিণ বিএনপির সহ-সভাপতি একে এম শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু প্রমুখ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশারফ হোসেন বলেন, ‘সরকারের প্রতিহিংসার কারনে বেগম খালেদা জিয়া জেলে। গায়ের জোরে তাকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। একাদশ সংসদ নির্বাচনে সরকার যখন দেখল দেশের ৮০ ভাগ মানুষ ধানের শীষে ভোট দিবে। তখন ২৯ তারিখ রাতেই প্রশাসনের সহযোগিতায় ভোট ডাকাতি করে ফেলেছে সরকার। মসজিদের নগরী ঢাকাকে এ সরকার বানিয়েছে ক্যাসিনোর নগরী।’

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘নেত্রীর ভয়ের কিছু নেই। বাধা এলে বাাধা অতিক্রম করেই সমাবেশ হবে। হাজার হাজার নেতা-কর্মী জেলে। এতে বিএনপির সমর্থন কমেনি, বরং বেড়েছে। মনে রাখবেন এ সরকারের কর্মকান্ডেই বেগম খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হবেন। এই সমাবেশ তাই প্রমান করে।’

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় প্রশাসনের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আর মাতব্বরী করবেন না। খালেদা জিয়ার মুক্তির সমাবেশ আর অনুমতি নিয়ে হবে না। নেতা-কর্মীরা রাজপথে নামুন, আঘাত আসলে পাল্টা আঘাত হবে। এটা সাংবিধানিক অধিকার। মনে রাখবেন খালেদা জিয়ার মুক্তি মানেই গণতন্ত্রের মুক্তি।’

প্রসঙ্গত, সমাবেশ মাত্র দুই ঘন্টা আগে ৯টি শর্তে লিখিত অনুমতি দেয় স্থানীয় প্রশাসন। কিন্তু দুপুর থেকে বিচ্ছিন্ন মিছিলে মিছিলে সমাবেশস্থলে নেতা-কর্মী ও সাধারন মানুষের সমাগম বাড়তে থাকে। তবে সমাবেশস্থলে লোক সংকুলন না হওয়ায় সারা শহরেই ছড়িয়ে পড়ে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সরব উপস্থিতি।

ঢাকাটাইমস/২৬সেপ্টেম্বর/ইএস