দেশের পর্যটনের প্রচারণা প্রয়োজন: মহিউদ্দিন হেলাল

প্রকাশ | ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৪:৩১ | আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৪:৩৬

জহির রায়হান

মহিউদ্দিন হেলাল পর্যটন খাতে কাজ করছেন এক যুগের বেশি সময় ধরে। ছাত্রজীবনে ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় ট্যুরিস্ট সোসাইটির। ২০০৭ সাল থেকে রজধানীতে পর্যটন নিয়ে মেলার আয়োজন করে আসছেন। বিপুল সম্ভাবনার বাংলাদেশের পর্যটন স্পটগুলোকে বিশ্বে পরিচতি করে তুলতে ব্যান্ডিংয়ের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন তিনি। এ নিয়ে ঢাকাটাইমসের সঙ্গে কথা বলেছেন এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ারের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন হেলাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন জহির রায়হান।
কীভাবে এ পেশায় আসা হলো?
মহিউদ্দিন হেলাল: নেশা থেকে পেশা। ছাত্রজীবনে যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি তখন ১৯৯৬ সালের শেষ দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ট্যুরিস্ট সোসাইটি করা হয়। আমি তার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। আমি পাঁচ বছর বিশ^বিদ্যালয় থাকাকালীন সময় প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। পর্যটন নিয়ে সেই ছাত্র জীবন থেকেই সম্পৃক্ত।  এর পর নানা উদ্যোগ। একটা পর্যটন সংস্থা করেছি। পর্যটন বিচিত্রা ২০০৫ সাল থেকে প্রকাশ করে আসছি। আমরা ২০০৭ সাল থেকে মেলা করছি। তখন নাম ছিল ঢাকা ট্যুরিজম ফেয়ার। ২০১১ সালে নাম দেয়া হয় এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ার। ধারাবহিকভাবে প্রতিবছর এ মেলার আয়োজন হচ্ছে।
এশিয়ান ট্যুারিজম ফেয়ার নাম হলেও প্রতিবছরই ঢাকাতেই এর আয়োজন হচ্ছে। বিদেশে মেলা আয়োজনের পরিকল্পনা আছে কি?
মহিউদ্দিন হেলাল: হ্যাঁ, ২০২০ সালে আমাদের পরিকল্পনা হলো এশিয়ার অন্য দেশে আয়োজন করা।  একে একে এশিয়ার অন্য দেশগুলোতে আয়োজন করা হবে এ মেলা। বাংলাদেশেও আরও বড় আকারে মেলার আয়োজন হবে।
মেলায় কোন বিষয় গুরুত্ব দেয়া হয়?
মহিউদ্দিন হেলাল: এটিকে আমি শুধু মেলা হিসেবে দেছি না। আমি মনে করি পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন কর্মকা- এবং আমাদের বর্তমানে ও ভবিষ্যতে কী কী কাজ করতে হবে সে বিষয়গুলো এখানে উঠে আসে। পর্যটন শিল্পের ছোট বড় যে ব্যক্তি উদ্যোগ রয়েছে সেইগুলোকে একই প্লাটফর্মে নিয়ে একজনের ভাবনার সঙ্গে আরএকজনের ভাবনার সংযোগ ঘটিয়ে দেয়া আমাদের উদ্দেশ্য। পর্যটন শিল্পের বড় উদ্যোক্তা যেমন এয়ারলাইন্স, ফাইভ স্টার হোটেল, তাদেকেও সংযোগ করতে চাই।
পর্যটনে শিল্প উন্নয়নে কোনো বিষয় গুরুত্ব দিতে হবে?
মহিউদ্দিন হেলাল: আসলে আমাদের দেশটাকে ব্যান্ডিং করতে হবে। এটার পরিচিতি বাড়াতে হবে। আমাদের ভ্রমণ স্থানগুলো নিয়ে প্রচারণায় নামতে হবে। এ ব্যপারে সরকারকে গুরুত্ব দিতে হবে। বেসরকারি উদ্যোক্তাদের এ নিয়ে কাজ করতে হবে। আমাদের পর্যটন শিল্প কোন দিকে যাবে। বিশ^ব্যপী প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে পর্যটন। আমরা তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারছি কি না। আজ ২০১৯ এ দাঁড়িয়ে ২০৩০ এর পর্যটন শিল্প দেখতে পারছি কি না। এই বিষগুলোকে সামনে অনার জন্য আমরা সাইড লাইন অনেকগুলো কনফারেন্স করেছি মেলায়।

শিশুদের মনে কিভাবে পর্যটন সম্পর্কে ধরণা দেয়া যায়?
মহিউদ্দিন হেলাল: শিশুদের মনে প্রথমমেই পর্যটন বিষয়ে ধরণা দিতে হবে। এর ফলে তারা দেশকে ভালবাসবে। পর্যটনে ক্ষতি হয় এমন কাজ করবে না। আমরা শিশুদের মনে পর্যটনকে ধারণা দিতে মেলায় চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করি। ছবি আকার বিষয়টি শিশুদের এক থেকে দেড় মাস আগে জানিয়ে দেয়া হয়। উদ্দেশ্য হলো শিশু বিষয়টা নিয়ে ভাবুক। শিশুরা এটা প্রাকটিস করে কম্পিটিশনে আসুক। কম্পিটিশন এক দিনের, কিন্তু শিশুটি দুই মাস ধরে ভাবছেন।  এতে তাদের ভেতরে পর্যটন নিয়ে আগ্রহ জন্মাবে। আমরা গত বছর ছবি আঁকার বিষয় নির্বাচন করেছিলাম ‘নদী পর্যটন’। আমরা দেখেছি নদী বিষয়ে সুন্দর চিত্রাঙ্কন হয়েছে। প্রতিযোগিতায় বিজয়ীরা কখনো দেখেনি। তখন বিজয়ী ২০ জন শিশুকে বাবা-মা সহ আমরা নৌবিহারে নিয়ে গেছি। এরপর তারা নদীতে গিয়েও নদীর ছবি একেঁছে। এ বছর আমরা শিশুরা ঢাকা শহর কীভাবে দেখতে চায় তার ওপর ছবি আঁকতে বলেছি। থিম রেখেছি ‘আমার শহর’।  
সংস্কৃতিক আদান প্রদানে মেলা কী ভূমিকা রাখে
মহিউদ্দিন হেলাল: পর্যটন মেলা এ ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে। সংস্কিতি ও পর্যটন এক অন্যের পরিপূরক। আমরা মেলায় এশিয়ার বিভিন্ন অংশগ্রহণকারী দেশের সংস্কৃতি বিনিময়ের জন্য অনুষ্ঠান আয়োজন করি। বাংলাদেশসহ ইন্দোনোশিয়া, ফিলিপাইন, চাইনিজ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করি।
এবারে এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ার সম্পর্কে বলুন
মহিউদ্দিন হেলাল: এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ার-২০১৯। পর্যটন বিষয়ক সব তথ্য একই ছাদের নিচে দেয়া হয়।  ২৬ থেকে ২৮ সেপ্টেম্বর তারিখে বসুন্ধরার ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে চলছে মেলা। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে ৭ আটটা পর্যন্ত এই মেলা চলে। আমাদের সহযোগিতা করছে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড (বিটিবি) ও বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন (বিপিসি)। মেলায় বংলাদেশসহ ভারত, নেপাল, ভূটান, চায়না, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড ও ফিলিপাইন এবং বিভিন্ন সংস্থার মোট ১৫০টি স্টল রয়েছে। দেশ ও বিদেশে বেড়ানোর বিভিন্ন আকর্ষণীয় ভ্রমণ অফার, হোটেল, রিসোর্ট বা প্যাকেজ বুকিংসহ বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা থাকবে মেলায়। মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো মধ্যে রয়েছে হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, ট্যুর অপারেটর, ট্রাভেল শপ, থিমপার্কসহ বিনোদনের আরো অনেক প্রতিষ্ঠান।