ক্যান্সারকে হারাতে পারে চিকিৎসক ও রোগীর আত্মবিশ্বাস
প্রাথমিক অবস্থায় রোগ শনাক্ত করা সম্ভব হলে ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর আর্থিক ক্ষতি ও মৃত্যুহার দুটোই কমানো সম্ভব বলে মনে করেন বাংলাদেশ ও ভারতের ক্যান্সার বিশেষজ্ঞরা। আর ক্যান্সারকে পরাজিত করতে চিকিৎসক এবং রোগীর আত্মবিশ্বাসের ওপরও জোর দেন তারা।
শনিবার রাজধানীতে ক্যান্সার সম্পর্কে জনসচেনতা সৃষ্টি ও ক্যান্সারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার লক্ষ্যে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় দুই দেশের চিকিৎসকরা এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটি, প্রফেসর ডা. ওবায়দুল্লাহ-ফেরদৌসী ফাউন্ডেশন ক্যান্সার হসপিটাল এন্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট, গোপালগঞ্জ ও কলকাতার অ্যাপোলো গ্লেনেগেলস হাসপাতালের যৌথ উদ্যোগে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির সভাপতি ও প্রফেসর ডা. ওবায়দুল্লাহ-ফেরদৌসী ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অধ্যাপক ডা. মোল্লা ওবায়দুল্লাহ বাকী।
অনুষ্ঠানে কলকাতার অ্যাপোলো হাসপাতালের অঙ্কোলজি বিভাগের পরিচালক ডা. প্রব্রজ্য নারায়ন মহাপাত্র পেটের ক্যান্সার চিকিৎসার বিভিন্ন পদ্ধতির কথা তুলে ধরেন। রেডিয়েশন অঙ্কোলজি বিশেষজ্ঞ ডা. আখতার জাওড়ে রেডিওথেরাপির প্রয়োগে বর্তমান সময়ের আধুনিক পদ্ধতির উপর আলোচনা করেন। আর ডা. নিপুন সাহা থাইরয়েড ক্যান্সারের আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যাখ্যা করেন। এছাড়া ডা. শুভ্রগাঙ্গুলী কলোরেক্টাল ক্যান্সার চিকিৎসায় ল্যাপারোস্কোপির ব্যবহার নিয়ে কথা বলেন।
ভারতের চিকিৎসকরা বলেন, বাংলাদেশ থেকে যেসব ক্যান্সারের রোগী তাদের কাছে চিকিৎসা নিতে যান তারা অনেকেই তৃতীয় বা চতুর্থ ধাপের রোগী। তাই শুরুতেই দেশে যদি এটা শনাক্ত করা যায় তাহলে রোগীরাই উপকৃত হবে।
দুই দেশের চিকিৎসকরাই প্রাথমিক অবস্থায় বাংলাদেশে ক্যান্সার শনাক্তের বিষয়ে কার্যিকরী নানা দিক তুলে ধরেন। ক্যান্সারের সুষ্ঠু চিকিৎসার পরিকল্পনা গ্রহণ তথা মোট রোগী শনাক্তের সংখ্যা নির্ণয়ের জন্য রেজিস্টির বিষয়ে তাগিদ দেন।
ডা. প্রব্রজ্য নারায়ন মহাপাত্র বলেন, থাইরয়েড ক্যান্সার অনেক সময় সঠিকভাবে নির্ণয় করা সম্ভব হয় না। কারণ সেসব জায়গায় ক্যান্সার নির্ণয় করার প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নেই। তবে প্রতিনিয়ত নতুন প্রযুক্তি ও পদ্ধতির উদ্ভাবন ক্যান্সার চিকিৎসায় অনেক সাফল্য এনেছে।
প্রব্রজ্য নারায়ন বলেন, লিভার ক্যান্সার ভারত ও বাংলাদেশে খুবই সাধারণ ঘটনা। প্রাথমিকভাবে এই রোগ নির্ণয় হলে বিভিন্ন বিভাগের সম্মিলিত চিকিৎসায় ভালো ফলাফল দিচ্ছে, যা ক্যান্সারের রোগীদের জন্য সুখবর।
অনুষ্ঠানে যোগ দেয়া চিকিৎসকরা বলেন, ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মানসিকতা ও সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ক্যান্সারকে পরাস্ত করার জন্য চিকিৎসক ও রোগীর আত্মবিশ্বাস থাকা প্রয়োজন।
বক্তারা বলেন, ক্যান্সারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াই করে অন্য মাত্রায় নিয়ে যেতে হবে। কলকাতার চিকিৎসকরা এক্ষেত্রে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
(ঢাকাটাইমস/২৮সেপ্টেম্বর/বিইউ/এমআর)