এলেঙ্গা-ভূঞাপুর সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্প

নষ্ট পুরনো ইট দিয়ে শত কোটি টাকার রাস্তা নির্মাণ

ফরমান শেখ, ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল)
| আপডেট : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৮:২৭ | প্রকাশিত : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৮:১৫

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর-এলেঙ্গা সড়ক উন্নয়ন ব্রীজ নির্মাণের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের সামগ্রী। আগের ব্রিজের অপসারিত নষ্ট ইট দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ডাইভারসন অ্যাপ্রোচ সড়ক। ঠিকাদারদের এমন দুর্নীতিতে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের কর্মকর্তাদের যোগসাজশ রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঠিকাদাররা অভিযোগ অস্বীকার করলেও নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের কথা স্বীকার করেছেন সওজ কর্মকর্তা।

টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এলেঙ্গা-ভূঞাপুর সড়কের এলেঙ্গা থেকে চর গাবসারা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার সড়ক ২৪ ফিট প্রশস্তকরণ ও উন্নয়নের জন্য ৪৭ কোটি টাকার কাজ করছে ২টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। আর ১০টি ব্রীজ ও ১টি কালভার্ট নির্মাণের জন্য বরাদ্দ ৫৩ কোটি টাকা। এতে ৩টি প্যাকেজে একাধিক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে কাজ করছে। ১০০ কোটি টাকার প্রকল্পটি ২০১৮ সালের ১লা নভেম্বর থেকে শুরু হয়। এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে ২০২০ সালের ২০ জুন।

গতকাল সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কের তাঁতিহারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন ব্রীজের কাজ চলছে ঢিলেঢালাভাবে। পুরাতন ভাঙা ব্রীজের নষ্ট ইট ব্রীজের অ্যাপ্রোচ নির্মাণে ব্যবহার করা হচ্ছে। এমন দৃশ্য দেখা গেছে এই সড়কের আরো কয়েকটি ব্রীজে।

জানা যায়, ব্যস্ত এ সড়ক ব্যবহার করেন প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ। এছাড়া তারাকান্দি সার-কারখানার মালবাহী যান চলাচলের প্রধান সড়কও এটি। সড়কটির শিয়ালকোল, কাগমারীপাড়া, নারান্দিয়া, ফুলতলা ও শ্যামপুর বিকল্প সড়ক একেবারে চলাচলের অনুপোযোগি দেখা গেছে। আর বিকল্প সড়কের মাথায় নেই মাটি, একটু পর পরই গর্ত এবং ভাঙ্গা ইটের আবর্জনা।

আবার সড়কের ওপরেই রাখা হয়েছে নির্মাণ সামগ্রী। ফলে ছোট-বড় যানবাহনগুলো চরম ঝুঁকি নিয়েই ডাইভারশন পারাপার হচ্ছে প্রতিনিয়ত। ঝাঁকুনি আর ধুলোয় পথচারীসহ গর্ভবতী মহিলা ও বয়স্কদের ভোগান্তির শেষ নেই। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকবার ডাইভারশনে মোটরযান উল্টে পড়ে আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তার পরও কর্তৃপক্ষ দায়সারাভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

এদিকে কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই এলেঙ্গা লুৎফর রহমান মতিন মহিলা কলেজ সংলগ্ন কালভার্টটি চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। কালভার্টের উত্তর ও দক্ষিণ এপ্রোচ সড়কের মাটি না থাকায় যানবাহন চলাচলে সমস্যার শেষ নেই।

এই সড়কে প্রতিটি ভাঙা ব্রীজের পাশে যাতায়াতের জন্য বানানো হয়েছে বিকল্প ডাইভারশন সড়ক। আগের ভাঙা ব্রীজের নষ্ট ইট-সুড়কি দিয়েই তৈরি করা হয়েছে অধিকাংশ ডাইভারশ। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় এলাকাবাসী সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদও করেছিল।

নগরবাড়ী এলাকার ব্যবসায়ী মোতালেব হোসেন জানান, এই সড়কে বিকল্প সড়কগুলো খুবই নিম্নমানের, যাতায়াতই করা যায় না। তাঁতিহারা ব্রীজে পুরাতন নষ্ট ইট ব্যবহার করা হচ্ছে। এগুলো দিয়ে কাজ করলে অল্প সময়ের মধ্যেই আবার চলাচলের অযোগ্য হয়ে যাবে।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে তাঁতিহারা ব্রীজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নবারুল ট্রেডার্স লিমিটেডের প্রকৌশলী তারেক হোসেন বলেন, ‘ব্রীজের ওপর সাময়িকভাবে যান চলাচলের জন্য এই সামগ্রীগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে।’

ডাইভারশন নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের বিষয়টি স্বীকার করে এ প্রকল্পের তত্ত্বাবধায়ক টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী সোহেল মাহমুদ বলেন, ‘এই ইটগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে সাময়িক চলাচলের জন্য।’

(ঢাকাটাইমস/৩০সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/ডিএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :