শরৎ তোমার অরুণ আলোর অঞ্জলি

মহিবুল ইসলাম খান
 | প্রকাশিত : ০২ অক্টোবর ২০১৯, ২০:১৯

গত তিন দিন যাবত আকাশের মন খারাপ। সারা দিনমান থেমে থেমে বৃষ্টি, তাই শরতের ছিটেফোটাও ছিলনা। অনেকদিন ধরে উলিপুরের সাহেবের আলগার,নামাজের চর তদন্ত কেন্দ্রে যাবো ভাবছিলাম, আজকে ভাগ্য সহায় হল। অফিসে যাওয়ার পথেই দেখি ঝকঝকে আকাশ। অফিসের জরুরী কাজগুলো সেরে ধরলা সেতুর কাছে রাখা জেলা পুলিশের স্পীডবোট ঘাটে পৌঁছে দেখি ওই জায়গা থেকে ধরলা ব্রীজের পুরোটাই দৃশ্যমান।

গত কয়েকদিনে নদীর পানি কিছুটা বাড়লেও বর্ষাকালে ধরলার যে রূপ তা এখন নেই।অলসভাবে ছিপ ফেলে মাছের আশায় বসে থাকা দুইজনের রোদে পোড়া দেহ দেখলে বুঝতে অসুবিধা হয়না, তাদের দিনের পুরোভাগ কাটে রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে।

নদীতে নামতেই মাথার উপরে বিশাল আকাশ। সামনে বিস্তীর্ণ ধরলা এগিয়ে গিয়ে মিশেছে ব্রক্ষ্মপুত্রে।ঢাকা শহরের তরুণ তরুনণীরা যখন দিয়াবাড়ী গিয়ে ডিএসএলআর নিয়ে কাশবনের সাথে ছবি তুলতে ব্যস্ত, তখন এইদিকে নদীর দুইধারের চরগুলোতে সাদা সমূদ্র।কেউ নামলে নির্ঘাত হারিয়ে যাবে।

৪৫ মিনিটে পৌঁছে গেলাম নামাজের চর। এই প্রত্যন্ত অঞ্চলে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত তদন্ত কেন্দ্রটি বর্তমান সরকারের গত ১০ বছরের উন্নয়নের ধারাবাহিকতারই ফসল। সাহেবের আলগা ও বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের অধিবাসীদের নিরাপত্তায় বড় ভূমিকা রাখছে তদন্ত কেন্দ্রটি। নামাজের চরে পোস্টিং অনেকের কাছে দ্বীপান্তরের মত, এখান থেকে সহজে অন্যত্র যাতায়াতের সুযোগ কম তাই এখানে অনকেইে আসতে ইচ্ছুক হয়না।

তবে একবার ভালো লেগে গেলে কেউ সহজে যেতে চাইবে না।পরিদর্শন শেষে ফেরার পথে ভারত সীমান্ত লাগোয়া চরে কাশবনের সমূদ্র দেখে লোভ সামলাতে পারলাম না। নরম মাটিতে কাদা ভেঙ্গে নেমে পড়লাম, এ দৃশ্য তো আর সবসময় পাবোনা।

প্রকৃতির সাথে পথ চলতে চলতেই মুঠোফোনে সেরে নিচ্ছিলাম রিমান্ড, মামলা, মাদকবিরোধী অভিযানের নির্দেশনাগুলো। দুপুরের মরা রোদে,স্পীড বোটের গতির কারণে বাতাসও হিম, চোখ একটু ঢুলু ঢুলু করতে করতেই তীরে এসে নামলাম।

লেখক: পুলিশ সুপার, কুড়িগ্রাম

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফেসবুক কর্নার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :