ভাসমান হাসপাতালে দরিদ্রদের চিকিৎসা

চিকিৎসাসেবায় অনন্য ভূমিকা রাখছে ইম্প্যাক্ট ‘জীবনতরী’ ভাসমান হাসপাতাল। স্বাস্থ্যসেবায় ব্যতিক্রমধমী এ ভাসমান হাসপাতালটি স্বরূপকাঠির (নেছারাবাদ) সন্ধ্যা নদীর তীরে ছারছীনা দরবারের নদীর ঘাটে আড়াই মাস ধরে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে। এর মূল উদ্দেশ্য দরিদ্র ও অসহায় রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেয়া।

ভাসমান এ হাসপাতালে পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি পৌরসভা ও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নসহ পাশ্ববর্তী কাউখালী, নাজিরপুর, ঝালকাঠি সদর এবং বরিশালের বানারীপাড়া, উজিরপুর, আগৈলঝাড়া ও গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা থেকে রোগীরা এসে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। প্রতিদিন এখানে শত শত রোগী উন্নত চিকিৎসা সেবা নিয়ে থাকেন। গত আড়াই মাসে এ হাসপাতাল থেকে সাত সহস্রাধিক রোগী চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন। মানবসেবায়ব্রত থাকা ‘জীবনতরী’ নামে এ হাসপাতালটি ইম্প্যাক্ট ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ নামক একটি বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ১৯৯৩ সাল থেকে নদী পথে দেশজুড়ে কাজ করে আসছে।

ভাসমান হাসপাতালটির প্রশাসক আলাউদ্দিন জানান, এটি বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এনজিও বিষয়ক ব্যুরো কর্তৃক নিবন্ধনকৃত। ভাসমান এ হাসপাতালটিতে প্রতিবন্ধিতা প্রতিরোধ ও প্রতিকারের লক্ষ্যে নদীবাহিত এলাকায় বসবাসকারী সুবিধাবঞ্চিত দরিদ্র রোগীদের স্বল্প খরচে নাক, কান, গলার রোগের চিকিৎসা ও অপারেশন এবং চক্ষু রোগের চিকিৎসা, অপারেশন ও সহায়ক সামগ্রীর ব্যবস্থা, অর্থোপেডিক চিকিৎসা, কৃত্রিম হাত ও পা সংযোজন, ঠোঁটকাটা, তালুকাটা, আগুনে পোড়া রোগীদের চিকিৎসা ও প্লাস্টিক সার্জারিসহ অন্যান্য সেবা দেয়া হয়। রয়েছে অ্যাম্বুলেন্স ও প্রয়োজনে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সও। এছাড়া এখানে প্রতিবন্ধিতা বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে ধাত্রী প্রশিক্ষণ, প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ এবং স্বাস্থ্যকর্মী প্রশিক্ষণ কর্মশালা পরিচালনা করা হয়ে থাকে।

প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত প্রতি রোগীর কাছ থেকে ৫০ টাকা ফি নিয়ে সিরিয়ালের মাধ্যমে সেবায় নিয়োজিত চার চিকিৎসক (এমবিবিএস) সার্বক্ষণিক চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছেন। চিকিৎসা নিতে আসা রোগের উপর নির্ভর করে প্রয়োজন অনুযায়ী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মাধ্যমে অপারেশনসহ অন্যান্য চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়।

অপরদিকে, সাতদিনের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ধাত্রী, প্রাথমিক শিক্ষক এবং স্বাস্থ্যকর্মী প্রশিক্ষণার্থীদের সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।

ভাসমান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, ১৬ জুলাই স্বরূপকাঠিতে এসেছেন। এর আগেও এখানে দু’বার এসে চিকিৎসা সেবা দিয়েছে। এ নিয়ে তৃতীয়বার তাদের আসা। আরও ক’মাস এখানে থেকে চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। গ্রামীণ জনপদে ভাসমান ‘জীবনতরী’ হাসপাতালটি দরিদ্র রোগীদের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ।

(ঢাকাটাইমস/৩অক্টোবর/এলএ)