ভৈরবে টোকেন দিয়ে যানবাহনে চাঁদাবাজি

রাজীবুল হাসান, ভৈরব
 | প্রকাশিত : ০৫ অক্টোবর ২০১৯, ১০:১৪

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মহাসড়কে যানবাহনে টোকেন দিয়ে প্রভাবশালীদের নাম ভাঙিয়ে প্রকাশ্যে চলছে চাঁদাবাজি। ভৈরবের কমলপুর লোকাল বাসস্ট্যান্ড থেকে কুলিয়ারচর, বাজিতপুর, নিকলী, কটিয়াদী, কিশোরগঞ্জসহ ভৈরব উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে এই আঞ্চলিক সড়ক দিয়ে তিন হাজারেরও বেশি সিএনজি চলাচল করে। এসব সিএনজিচালিত অটোরিকশা থেকে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ভৈরব-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কসহ ভৈরব-মেন্দিপুর, আগানগর, শিমুলকান্দি, গজারিয়া, শ্রীনগর এলাকার সড়কে যাতায়াতকারী যানবাহনগুলোর চালকদেরও গুণতে হয় বাড়তি টাকা।

ভৈরব-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের কমলপুর লোকাল বাসস্ট্যান্ডসহ, মুসলিমের মোড় ও হাজী আসমত কলেজের সামনে অটোরিকশাগুলো প্রবেশ করা মাত্রই কিছু যুবক হাতে টোকেন নিয়ে চলন্ত অটোরিকশা আটকে চাঁদা আদায় করছে। তারা দৈনিক ভিত্তিতে ১০ টাকা থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে থাকে। চাঁদাবাজদের ইশারায় চলন্ত অটোরিকশাগুলো হঠাৎ ব্রেক করে। এতে পেছনে থাকা চলন্ত যানবাহন বাধ্য হয়েই হার্ডব্রেক করার ফলে বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনাও ঘটে। অবৈধ চাঁদাবাজ ও তাদের সাঙ্গপাঙ্গদের দ্বারা চালক ছাড়াও প্রায়ই যাত্রীরাও হয়রানির শিকার হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এর এসব চাঁদাবাজির মূলে ভৈরবের একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট কাজ করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

জানা যায়, ভৈরব থেকে চলাচলকারী কয়েক হাজার সিএনজিচালিত অটোরিকশার মধ্যে প্রায় অর্ধেকেরই নেই কোনো রেজিস্ট্রেশন নাম্বার। অধিকাংশ চালকের নেই কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স। রেজিস্ট্রেশন ছাড়া অটোরিকশা ও ড্রাইভিং লাইসেন্সবিহীন চালকদের টার্গেট করে মিজানসহ কয়েক চাঁদাবাজ হাইওয়ে পুলিশকে ম্যানেজ করে দৈনিক ভিত্তিতে এই চাঁদা উঠাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে সিএসজি অটোরিকশা ছাড়াও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে দিনে ও রাতে প্রকাশ্যে অন্য আরেকটি চক্র চাঁদাবাজি করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সামনে চাঁদাবাজি হলেও রহস্যজনক কারণে প্রশাসন নীরব। এটা নিয়ে জনমনে দেখা দিয়েছে প্রশ্ন।

গত ১ অক্টোবর ভৈরব-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের ভৈরব উপজেলার কালিকাপ্রসাদ বাসস্ট্যান্ডে চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে বিক্ষোভ করে চালকরা। যানবাহনে অবৈধ চাঁদা আদায় বন্ধ এবং অভিযুক্ত চাঁদাবাজ মিজান মিয়া ও মোহাম্মদ আলীসহ তাদের সহযোগীদের বিচার দাবি করেন তারা।

সিএনজি চালক রফিক মিয়া বলেন, প্রতিদিন ৭০০-৮০০ টাকা ভাড়া পেলে ২০০ টাকা চলে যায় বিভিন্ন চাঁদা। মাঝেমধ্যে ভাড়া না পেলে নিজের বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে হলেও চাঁদাবাজদের দিতে হয় বলে জানান তিনি।

আরেক চালক জানান, কোনো চালক চাঁদা না দিলে মারধরসহ তাদের সিএনজি আটক করে নানাভাবে হয়রানি করা হয়।

ভৈরব হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন রহমান ঢাকা টাইমসকে বলেন, পুলিশকে ম্যানেজ করে চাঁদাবাজি করে এমন অভিযোগ সত্য নয়। এসব চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে আগে কেউ অভিযোগ করেনি। তবে চালকরা মিজান ও মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এবিষয়ে জানতে চাইলে ভৈরব উপজেলা নির্বাহী র্কমর্কতা লুবনা ফারজানা ঢাকা টাইমসকে বলেন, চালকদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় এবং হয়রানির কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ এলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :