শ্বশুরবাড়ির ওয়ারিশ বিক্রিতে চাপ, রাজি না হওয়ায় স্ত্রীকে হত্যা

প্রকাশ | ০৫ অক্টোবর ২০১৯, ১৮:০১

নিজস্ব প্রতিবেদক, টাঙ্গাইল
ফাইল ছবি

টাঙ্গাইলের বাসাইলে বাবার বাড়ির ওয়ারিশ বিক্রি করে টাকা না দেয়ায় স্বামীর বিরুদ্ধে তার স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার ভোরে উপজেলার স্থলবল্লা পূর্বপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

হত্যার পর টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে লাশ রেখে নিহতের স্বামী শাহীনুর রহমান, তার বাবা আব্দুস সামাদ ও মা তারা বানু পালিয়ে যান।

বাসাইল থানার ওসি এসএম তুহীন আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নিহতের নাম স্বপ্না আক্তার। তিনি উপজেলার ভ্রাহ্মণপাড়িল এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য মুন্নান মিয়ার মেয়ে। স্বপ্না দুই সন্তানের জননী।

নিহতের পরিবার বলছে, স্বপ্না আক্তারের সঙ্গে প্রায় ১২ বছর আগে একই উপজেলার কাশিল ইউনিয়নের আব্দুস সামাদের প্রবাসী ছেলে শাহীনুর রহমানের বিয়ে হয়। বিয়ের পর কয়েক বছর ভালই চলছিল দাম্পত্যজীবন। এরমধ্যে তাদের ঘরে দুই পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। এমতাবস্থায় শাহীনুর বিদেশ থেকে দেশে চলে আসে। দেশে আসায় শাহীনুরের উপার্জন বন্ধ হয়ে যায়। হতাশাগ্রস্ত শাহীনুর এক পর্যায়ে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। শাহীনুর বিভিন্ন সময় স্বপ্নাকে তার বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনার চাপ দিলে কয়েক ধাপে টাকা এনেও দেয়। সম্প্রতি শাহীনুর তার স্ত্রীকে বাবার বাড়ির ওয়ারিশ বিক্রি করে টাকার আনার চাপ প্রয়োগ করে। স্বপ্না তার সন্তানের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে তার শেষ সম্বল বাবার বাড়ির ওয়ারিশ আনতে অসম্মতি প্রকাশ করলে শুরু হয় নির্যাতন। সপ্তাহখানেক আগে স্বপ্না মারধর করে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। পরে শাহীনুরের মা-বাবা পুত্রবধূ স্বপ্নাকে বুঝিয়ে তার বাবার বাড়ি থেকে নিয়ে আসে।

নিহত স্বপ্নার বাবা মুন্নান মেম্বার বলেন, ‘জমি বিক্রি করে টাকা না দেয়ার কারণে স্বপ্নাকে তার স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ি মিলে বর্শা দিয়ে উপর্যোপরি আঘাত করে হত্যা করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে আমরা হাসপাতালে গিয়ে দেখি লাশ পড়ে আছে। এসময় শাহীনুরসহ ওই পরিবারের কেউ হাসপাতালে ছিল না। আমার মেয়েকে নির্মমভাবে যারা হত্যা করেছে আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

বাসাইল থানার ওসি এসএম তুহীন আলী বলেন, ‘স্বপ্নাকে বর্শা দিয়ে তার স্বামী একাধিক আঘাত করে হত্যা করে। পরে লাশ টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে রেখে তারা পালিয়ে যায়। লাশ মর্গে রয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

(ঢাকাটাইমস/৫অক্টোবর/এলএ)