স্ত্রীর মাধ্যমে ঘুষ নেওয়ার তথ্য ফাঁস ডিআইজি প্রিজনের

প্রকাশ | ০৬ অক্টোবর ২০১৯, ১৮:২৪ | আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০১৯, ১৯:৪৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

কারা অধিদপ্তরের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন, সদর দপ্তর) বজলুর রশীদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ তথা ঘুষের কোটি কোটি টাকা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে লেনদেনের তথ্য ফাঁস হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাঠানো এসব টাকা তুলেছেন তার স্ত্রী রাজ্জাকুন নাহার। এমনই খবর প্রকাশ করেছে একটি জাতীয় দৈনিক।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ডিআইজি (প্রিজন) বজলুর রশীদের বিষয়ে খোঁজ নিতে মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন বলে জানা গেছে।

এই অবৈধ উপার্জনের কথা স্বীকার করেছেন ডিআইজি প্রিজন বজলুর রশীদ- এমন একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে দৈনিকটি।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বজলুর রশীদ ঢাকাটাইমসের কাছে দাবি করেন, এসব অভিযোগ বানোয়াট। তিনি বলেন, ‘আমি দুটি দুর্নীতির তদন্ত করেছি। যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তারাই এই নিউজ করিয়েছে। সবকিছু বানোয়াট।’ তিনি প্রতিবেদনটির বিরুদ্ধে প্রতিবাদপত্র পাঠিয়েছেন বলে জানান।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘুষের টাকা লেনদেন করতে ডিআইজি প্রিজন বজলুর রশীদ প্রকৃত ঠিকানা গোপন করে স্ত্রীর নামে মোবাইল ফোনের সিম তোলেন। সরাসরি টাকা না পাঠিয়ে ঘুষ চ্যানেলের সোর্স ব্যবহার করেন তিনি।

ঘুষের বিষয়ে প্রথমে অস্বীকার করলেও তার স্ত্রীর কাছে পাঠানো টাকার একাধিক মানি রিসিটের কপি দেখালে ডিআইজি প্রিজন বজলুর রশিদ অপরাধ মেনে নেন বলে প্রতিবেদনে বলা হয়। এর মধ্যে এসএ পরিবহনের মাধ্যমে ঘুষের টাকা কুরিয়ার করার ২৪টি রসিদের কথা উল্লেখ করা হয়। এসব রসিদে অঙ্কের যোগফল প্রায় কোটি টাকা।

কারা অধিদপ্তরের সূত্র উল্লেখ করে তাতে বলা হয়, কারা সদর দপ্তরে ডিআইজি পদে থাকায় বজলুর রশীদ সারা দেশের বিভিন্ন কারাগার থেকে চাঁদার নামে নির্ধারিত রেটে ঘুষ নিয়ে থাকেন। এই টাকা যেত কুমিল্লার তৌহিদ নামের এক ব্যক্তির কাছে। তিনি তা পাঠাতেন বজলুল রশিদের স্ত্রী রেবার কাছে। তাদের যোগাযোগ হতো ভুয়া ঠিকানায় নেওয়া রেবার মোবাইল ফোনে। কুমিল্লা থেকে তৌহিদ হোসেন মিঠুর পাঠানো টাকা এসএ পরিবহনের কাকরাইলের প্রধান অফিস থেকে শুধু মোবাইলে মালিকানা নিশ্চিত করে তুলে নেয়া হয়।

এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বজলুর রশীদের স্ত্রী রাজ্জাকুন নাহারকে কুরিয়ারে টাকা পাঠানো হতো বলে প্রতিবেদনে তথ্য-প্রমাণ দিয়ে উল্লেখ করা হয়।

নিয়োগ-বাণিজ্য

কিছুদিন আগে কারা অধিদপ্তরে স্টোরকিপার, অফিস সহকারী, গাড়িচালক, দর্জি মাস্টারসহ বিভিন্ন পদে বেশ কিছুসংখ্যক লোক নিয়োগের ক্ষেত্রে বিপুল ঘুষ লেনদেন হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এই নিয়োগ-বাণিজ্যের লেনদেন হয় ডিআইজি প্রিজনের স্ত্রীর মাধ্যমে। এই সূত্রে জড়িয়ে যান পদস্থ কর্মকর্তাদের স্ত্রীরাও।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘নিয়োগ-বাণিজ্যের ময়মনসিংহ কারাগারের একজন কর্মকর্তার স্ত্রীর কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা নেন রাজ্জাকুন নাহার। ডিআইজি প্রিজন বজলুর রশীদের সমমর্যাদার আরেক কর্মকর্তার স্ত্রীর কাছ থেকে দুই দফায় নিয়েছেন ৬ লাখ টাকা। এ ছাড়া ঢাকায় একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা একজন কারারক্ষীর কাছ থেকে নিয়োগ-বাণিজ্যের ৫৮ লাখ টাকা নিয়ে গেছেন বজলুর রশীদ নিজেই। আরেক কারা রক্ষীর কাছ থেকে নেয়া হয়েছে ৩৮ লাখ টাকা।’

(ঢাকাটাইমস/৬অক্টোবর/মোআ)