কালকিনিতে টাকাতেও মিলছে না বিনামূল্যের বিদ্যুৎ সংযোগ

সাগর হোসেন তামিম, মাদারীপুর
 | প্রকাশিত : ০৯ অক্টোবর ২০১৯, ০৯:২৭
ফাইল ছবি

‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগ ঘরে-ঘরে বিদ্যুৎ’-এই স্লোগানকে সামনে রেখে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হচ্ছে সারাদেশে। তবে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার কয়ারিয়া ইউনিয়নের চর আলীমাবাদ গ্রামের পাঁচ শতাধিক পরিবারকে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। যেখানে বিদ্যুৎ অফিস সংযোগপ্রতি নিরাপত্তাজনিত জামানত বাবদ ৪৫০ টাকা করে নিচ্ছে। আর স্থানীয় একটি দালাল চক্র মোটা অঙ্কের অর্থ উঠাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সাব কক্ট্রাক্টরের কাছে চাঁদা চাওয়ায় ছয় মাস ধরে বন্ধ আছে সংযোগ দেয়ার কার্যক্রম। এতে টাকা দিয়েও সংযোগ না পেয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন গ্রাহকরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কালকিনি উপজেলার কয়ারিয়া ইউনিয়নের চর আলীমাবাদ গ্রামে ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে বরিশাল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এবং মাদারীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সমন্বয়ে বিদুৎ সংযোগ দেয়ার জন্য কাজ শুরু করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান জিএন্ডজি এন্টারপ্রাইজ। কিন্তু নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার নামে গ্রামের সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ওই গ্রামের ইউপি সদস্য শহিদুল শিকদার ও তার সহযোগী মোশারফ ফকির প্রতি গ্রাহকের কাছ থেকে নগদ ৫০০ টাকা থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থ আদায় করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি মোশারফ ফকির ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সাব-কন্ট্রাক্টর সুজন মিয়ার কাছেও দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছেন। এই চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকার করায় সুজন ও তার সহযোগীদের মোশারফ তার লোকজন নিয়ে মারধর করেন বলে অভিযোগ ওঠে। যার ফলে দীর্ঘ ছয় মাস চলমান কাজ বরিশাল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বন্ধ রাখে।

এদিকে মিটারপ্রতি চাঁদা দিয়েও সময় মতো বিদ্যুৎ সংযোগ না পেয়ে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় গ্রামবাসীর। এ ভোগান্তির হাত থেকে রক্ষা পেতে এলাকাবাসী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বরিশাল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। তবে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো ফল পায়নি এলাকাবাসী।

ভুক্তভোগী বাবুল ফকির, কবির ফকির, জাকির ফকির, শেফালী বেগম ও বিউটি আক্তার জানান, পল্লী বিদ্যুতের নতুন লাইনে কাজ করার সময় শহিদুল মেম্বার প্রতিটি গ্রাহকের কাছ থেকে ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন। তার লোক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকদের কাছেও চাঁদা দাবি করেন এবং মারধর করেন। ফলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ছয় মাসের বেশি সময় কাজ বন্ধ রাখে। কিছুদিন আগে পুনরায় বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ শুরু করে। কিন্তু আমাদের গ্রামবাসীর কাছ থেকে যে চাঁদা তুলে নিয়েছে এর কোনো প্রতিকার আমরা পাইনি। আমরা ইউপি মেম্বার ও তার সহযোগীর শাস্তির দাবি জানাই।

তবে অভিযুক্ত কয়ারিয়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমি বা আমার কোনো সহযোগী পল্লী বিদ্যুতের লাইন টানার সময় কোনো টাকা নিইনি। আমার বিরুদ্ধে যে কথা বলা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।’

বরিশাল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর এজিএম পারভেজ আলম ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা উত্তোলনের বিষয়ে একটি দতন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা ওই এলাকায় গিয়ে গ্রাহকদের সাথে কথা বলে এসেছি। তদন্তের জন্য বিভিন্ন ডকুমেন্ট সংগ্রহ করা হচ্ছে। শিগগির আমরা তদন্ত রিপোর্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে পারবো। আমি কয়েক দিন আগে দেখে এসেছি ৫৬৪ জন গ্রাহকের মধ্যে ৩৫০ জনের বেশি গ্রাহক বিদ্যুৎ সংযোগ পেয়েছে। কাজ চলমান রয়েছে। বাকিরা খুব শিগগির সংযোগ পেয়ে যাবে।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :