‘রাজনীতি ঢুকাতে পারলে খুনও জায়েজ হয়’

শওগাত আলী সাগর
 | প্রকাশিত : ১০ অক্টোবর ২০১৯, ১২:২৬

যে দেশে রাজনীতিটাই মুখ্য সে দেশে মানবিকতা, মূল্যবোধ ইত্যাদি শব্দগুলো হাস্যকর শোনায়। এই যে আবরারকে পিটিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলা হলো- এমন একটা পৈশাচিক খুনকেও আমরা নোংরা রাজনীতির মধ্যেই টেনে হেঁচড়ে নামাতে চাচ্ছি। কেন চাচ্ছি? এটাই আমাদের মজ্জাগত বৈশিষ্ট্য বলে! আমরা জানি, রাজনীতি ঢুকিয়ে দিতে পারলে খুনও জায়েজ হয়ে যায়। এই নষ্ট রাজনীতিই আমাদের সম্বল!

আবরার শিবির কি না, তার ভাই শিবির কি না, তার পরিবার জামাত কি না- এইগুলো কি খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন? মোটেও না। কিন্তু নোংরা রাজনীতি এই পথেই হাটছে। আবরার যে এই দেশের একজন মানুষ, বুয়েটের একজন ছাত্র- তার চেয়েও প্রয়োজনীয় আবরার ও তার পরিবারের রাজনীতি সংশ্লিষ্টতা! যেনো এটি করা গেলেই তার খুনটাকে ‘পবিত্র’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা যায়।

অথচ এই দেশে জাতির পিতার খুনিদের বিচারও হয়েছে প্রচলিত আইনে, পরিপূর্ণ স্বচ্ছতায়। বঙ্গবন্ধুকন্যা ক্ষমতায় থেকেও বিশেষ ট্রাইব্যুনালে কিংবা তড়িঘড়ি বিচারে তাদের শাস্তি দেননি। শেখ হাসিনার সরকার কিন্তু ঘাতকদের জন্যও আইনজীবীর ব্যবস্থা করেছিলেন। সরকার মুজিব হত্যার বিচার চাননি, ন্যায়বিচার চেয়েছেন। সেই ন্যায়বিচার হয়েছে স্বচ্ছতায়, প্রশ্নহীনভাবে।

আবরার খুন হবার পর সরকারের কোনো একজন মন্ত্রীও তো আবরারের রাজনীতি সংশ্লিষ্টতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলেননি। এই প্রথমই তো সরকারের কোনো নেতা, কোনো মন্ত্রী-বিতর্ক হতে পারে, আবরারের স্বজনদের মনে কষ্ট হতে পারে- এমন কোনো বক্তব্য দেননি। এই প্রথমই তো আপরাধীদের গ্রেপ্তারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়নি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রায় সবকজন সন্দেহভাজন আসামিকেই গ্রেপ্তার করে ফেলা হয়েছে। শেখ হাসিনা তো কোনো রাজনীতি খোঁজেননি। তা হলে আমরা শেখ হাসিনার এই স্পিরিটকে সম্মান জানাতে পারছি না কেন? আমরা শেখ হাসিনার এই স্পিরিটকে ধারন করতে পারছি না কেন?

আবরার একজন মানব সন্তান- একজন মানব সন্তানের হত্যার বিচার চাওয়ার ক্ষেত্রেও নানা ‘কিন্তু’, ‘যদি’ তুলে রাজনীতির কদর্য চেহারাটাকেই যারা প্রকট করে তুলে ধরছেন, তাদের জন্য সীমাহীন করুণা!

লেখক: প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক, নতুন দেশ

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফেসবুক কর্নার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :