আবরার হত্যা

ছেলেকে বুয়েটে দিয়ে ধন্য হয়েছিলাম: রাসেলের বাবা

প্রকাশ | ১১ অক্টোবর ২০১৯, ০৮:১৫ | আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৯, ০৯:১৬

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার হত্যা মামলার আসামিদের বাড়িতেও এখন শোকের ছায়া। পরিবারের মেধাবী ছেলেটির বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ ও গ্রেপ্তারের খবরে মা-বাবা স্তম্ভিত। তারা বিশ্বাস করতে পারছেন না ছেলেটি এমন জঘন্য ঘটনায় জড়িত হতে পারে। পরিবারের মতোই বিস্মিত প্রতিবেশী ও এলাকার লোকজন। তাদের চোখে এলাকার সবচেয়ে শান্ত ও ভদ্র ছেলেটি কী করে এমন হলো! ফরিদুপরের প্রতিনিধির সংগৃহীত তথ্য গ্রন্থনা করেছেন বোরহান উদ্দিন।

ছেলেকে বুয়েটের মতো প্রতিষ্ঠানে পড়াতে দিয়ে মেহেদী হাসান রাসেলের বাবা সেনাসদস্য রুহুল আমিন গর্ববোধ করতেন। কিন্তু এমন জঘন্য ঘটনায় ছেলে জড়িত হওয়ায় মুষড়ে পড়েছেন তিনি। পরিবারে এখন শোকের আবহ। ছেলে এমন কাজ করতে পারে, এটা তিনি বিশ্বাস করতে পারছেন না এখনো।

বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার এক নম্বর আসামি মেহেদী হাসান রাসেল। বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাসেলের গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের সালথা উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের রাঙ্গারদিয়া গ্রামে।

এলাকার মানুষের কাছে মেধাবী ও ভালো ছেলে হিসেবে পরিচিত রাসেলকে গ্রামের সবাই তাকে শান্ত ও স্বচ্ছ ভাবমূর্তির বলে জানত।

রাসেলের বাবা রুহুল আমিনের চার সন্তানের মধ্যে রাসেল সবার বড়। বাবার চাকরির সুবাদে দেশের বিভিন্ন স্কুল-কলেজে লেখাপড়া করেন তিনি। উচ্চমাধ্যমিক শেষে  ২০১৩ সালে ভর্তি পরীক্ষায় পাস করে ভর্তি হন বুয়েটে।

রাসেলের বাবা রুহুল আমিন বলেন, ‘সামান্য বেতনে চাকরি করে ছেলেকে বুয়েটে ভর্তি করাতে পেরেছিলাম বলে নিজেকে অনেক ধন্য মনে করছিলাম। মাঝপথে এসে এমন একটা দুর্ঘটনার শিকার হবে এটা আমার অপ্রত্যাশিত, কল্পনারও বাইরে। কোনোভাবেই বিশ্বাস করতে পারছি না রাসেল এই কাজ করতে পারে।’

‘ছোটবেলা থেকে আমার ছেলেকে চিনি, সে এ ধরনের কাজ করতে পারে না। গ্রামের কোনো মানুষের সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদে জড়ায়নি কখনো।’

রাসেল ষড়যন্ত্রের শিকার বলে দাবি করছেন তার মা ঝরনা বেগম। তার যুক্তি, সিসি টিভির ফুটেজে ছেলেকে দেখা যায়নি। কান্নাজড়িত কণ্ঠে রাসেলের মা বলেন, ‘আমার ছেলে ষড়যন্ত্রের শিকার। আমার ছেলে কাউকে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে আমি বিশ্বাস করি না।’

আবরার হত্যার ঘটনায় বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃৃত নেতা রাসেলের গ্রামের ইউপি সদস্য মো. নান্নু মাতুব্বর মনে করতেন রাসেল এলাকার সম্পদ। রাসেল এলাকায় কম যেত, পড়ালেখা নিয়ে ব্যস্ত থাকত বেশি। ইউপি সদস্য বলেন, ‘আমরা তাকে এলাকার মেধাবী ছেলে ও সম্পদ হিসেবে জানতাম। কিন্তু সবকিছু কেমন হয়ে গেল।’

এলাকায় রাসেল ও তার বাবার ভালো সুনাম রয়েছে বলে জানান সোনাপুরের ইউপি চেয়ারম্যান মো. খায়রুজ্জামান বাবুল। কেন এমন ঘটনার সঙ্গে রাসেলের নাম এল এর সঠিক তদন্ত চান তিনি।

(ঢাকাটাইমস/১১অক্টোবর/মোআ)