আত্মগোপনে যেতে ৬৮ লাখ টাকা তোলেন মিজান

সিরাজুম সালেকীন, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১১ অক্টোবর ২০১৯, ২৩:৩৬

হাবিবুর রহমান মিজান। এলাকার সবাই যাকে পাগলা মিজান বলেই চেনে। টানা ২৫ বছর ধরে তিনি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। তাই বিভিন্ন সময় আলোচনায় থেকেছেন। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবনে হামলা এবং মাদক ব্যবসার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ আছে। ব্যক্তিগত জীবনে ক্ষমতার অপব্যবহার করে গড়েছেন দেশে-বিদেশে অঢেল সম্পত্তি। সবশেষ রাজধানীর মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পে পুলিশের সঙ্গে বিহারিদের সংঘর্ষের প্রধান উস্কানিদাতা ছিলেন এই কাউন্সিলর।

সুনির্দিষ্ট অভিযোগে গত মঙ্গলবার ও বুধবার মিজানকে ধরতে অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কিন্তু বিষয়টি আগে থেকে আঁচ করতে পেরেছিলেন। গ্রেপ্তার এড়াতে চলে যান আত্মগোপনে। এক সময় পরিকল্পনা করেন দেশত্যাগের। দীর্ঘদিন দেশের বাইরে থাকতে হতে পারে ভেবে ব্যাংক থেকে মোটা অঙ্কের টাকাও তোলেন। মঙ্গলবার ও বুধবার পৃথকভাবে একটি বেসরকারি ব্যাংক থেকে উত্তোলন করেন ৬৮ লাখ টাকা।

কাউন্সিলর মিজানের দেশের বাইরে দুটি বাড়ি ও দামি গাড়ি আছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব। এরমধ্যে একটি আমেরিকায় ও আরেকটি অস্ট্রেলিয়ায়। এসব সম্পদ তিনি অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ থেকে করেছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে নিজের গ্রেপ্তার এড়াতে দুইদিন আগে টাকা নিয়ে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে চলে যান মিজান। ওঠেন তার বান্ধবীর বাড়িতে। সেখান থেকে পাশ্ববর্তী দেশ হয়ে অস্ট্রেলিয়া কিংবা আমেরিকা যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু তার পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়। শুক্রবার ভোরে আটক হন তিনি। এ সময় তার কাছ থেকে উদ্ধার হয় নগদ দুই লাখ টাকা, একটি অবৈধ বিদেশি পিস্তল, চার রাউন্ড গুলি ও ম্যাগজিন। পরে তাকে দুপুরে ঢাকায় এনে তার নিজ কাউন্সিলর অফিস এবং মোহাম্মদপুরের আওরঙ্গজেব রোডের বাসায় তল্লাশি চালানো হয়। বাসা থেকে উদ্ধার হয় বিভিন্ন ব্যাংকের ৬ কোটি ৭৭ লাখ টাকা সম-মুল্যের চেক বউ, এককোটি টাকার এফডিআরের কাগজপত্র।

অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার ঢাকাটাইমস কে বলেন, 'জেনেভা ক্যাম্পে বিহারিদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের মূল হোতা ছিলেন মিজান। ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে বিহারি ক্যাম্পে মাদক ব্যবসা, জমিদখলসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যখন তাকে খুঁজছিল বিষয়টি টের পেয়ে আত্মগোপন করেন। দেশ থেকে পালিয়ে দীর্ঘদিন থাকা লাগতে পারে তাই প্রিমিয়ার ব্যাংক থেকে গত দুইদিনে ৬৮ লাখ টাকা উত্তোলন করেছিল। এর মধ্যে দুই লাখ টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তবে বাকি টাকা কোথায় রেখেছেন এখনও আমরা জানতে পারিনি। বিভিন্নভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও তিনি এখনও মুখ খোলেননি।'

মিজানের বিরুদ্ধে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, ভূমি দখল, মোহাম্মদপুর বিহারি ক্যাম্পে মাদক ও চোরাই গ্যাস-বিদ্যুতের ব্যবসার অভিযোগ রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে।

ঢাকাটাইমস/১১অক্টোবর/এসএস/ইএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজধানী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজধানী এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :