আবরার হত্যা: সবাইকে এড়িয়ে চলছেন জেমির মা-বাবা

আজহারুল হক, ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
 | প্রকাশিত : ১২ অক্টোবর ২০১৯, ১০:৫৭

আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনায় এখনো উত্তাল বুয়েট। বিক্ষোভ ছড়িয়েছে ঢাকার বাহিরেও। মেধাবীবের প্রতিষ্ঠান বুয়েটে এমন হত্যাকাণ্ড মেনেই নিতে পারছেন না মানুষ। রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিকসহ বিভিন্ন সংগঠনের একটাই দাবি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এই হত্যার বিচার।

দেশের আপামর জনসাধারণ যখন বর্বরোচিত এই হত্যার বিচারের দাবিতে সোচ্চার তখন হত্যার সঙ্গে জড়িতদের বাবা-মা ও স্বজনরাও হতবাক। একজন মেধাবী ছাত্র আরেকজন মেধাবী ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা করতে পারে তা মেনে নিতেই পারছেন না জড়িতদের স্বজন ও এলাকাবাসীও।

আবরার হত্যায় যাদের সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠেছে তাদের একজন মুনতাসির আল জেমি। বুয়েটের এই মেধাবী ছাত্রের বাড়ি ময়মনসিংহ নগরীর বাউন্ডারি রোডে। হত্যাকাণ্ডে ছেলের সম্পৃক্ততার খবর পেয়ে বিস্মিত ও নির্বাক তার বাবা-মা। যে সন্তানের সুখের আশায় এতো পরিশ্রম সেই সন্তান এখন পুলিশের হাতে বন্দি, যা মেনে নিতেই পারছেন না তারা। তাদের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়েছে।

ছোটকাল থেকেই নম্র-ভদ্র ও মেধাবী জেমি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়ায় বিস্ময় আত্মীয় স্বজন, কোচিং শিক্ষক অতিপরিচিতরাও।

আবরার হত্যার ১৯ নম্বর আসামি মুনতাসির আল জেমি বুয়েট ছাত্রলীগের সদস্য। সে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

জেমি ময়মনসিংহ জিলা স্কুলের ‘ফাস্ট বয়’ ছিল। তিনি আনন্দমোহন সরকারি কলেজ থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে এইচএসসি পাস করে বুয়েটে ভর্তি হন।

মুনতাসির আল জেমির বাবা আব্দুল মজিদ সোনালী ব্যাংকের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার পদে কর্মরত। তিনি স্বপরিবারে ময়মনসিংহ শহরের বাউন্ডারি রোডে বসবাস করেন।

এদিকে জেমি গ্রেপ্তারের পর ময়মনসিংহে তাদের বাসাটি স্তব্ধ সুনশান নীরব। পুরো বাসাজুড়েই শোকের পরিবেশ বিরাজমান। বাসায় অবস্থান করা নির্বাক বাবা-মা কয়েকজন নিকটাত্মীয় ছাড়া কারও সঙ্গে সাক্ষাৎ বা কথা বলছেন না। সংবাদকর্মীরা জেমির বাবা-মার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলে তিনি এড়িয়ে চলছেন। সংবাদকর্মীদের কথা বলার কোনো চেষ্টাই সফল হয়নি।

জেমির আত্মীয়, কোচিং শিক্ষক ও পরিচিত স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ময়মনসিংহ জিলা স্কুলের ‘ফাস্ট বয়’ ছিল জেমি। বুয়েটে ভর্তির আগে জেমিকে তারা নম্র-ভদ্র স্বভাবের ছেলে হিসেবে জানতেন। পড়াশোনা ও খেলাধুলা ছাড়া জেমিকে কোনো ধরণের আড্ডায় কখনো দেখা যায়নি। এমন ছেলে হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে তা বিশ্বাস করতে তাদের কষ্ট হচ্ছে।

স্থানীয় রফিকুল নামে একজন জানান, জেমিকে ছোট থেকেই নম্র-ভদ্র স্বভাবের ছিল। কারও সঙ্গে তেমন একটা মিশতো না। সবসময় পড়াশোনা ও খেলাধুলা নিয়ে ব্যস্ত থাকতো। এমন ছেলে হত্যাকাণ্ডে জড়িত তা বিশ্বাস করতে আমার কষ্ট হচ্ছে।

তবে কয়েকজন এলাকাবাসীর ভাষ্য, জেমি পরিস্থিতির শিকারও হতে পারে। কিছুদিন আগে জেমি হলের বাইরে থাকার জন্য পরিবারের কাছে নিজের ইচ্ছার কথাও জানিয়েছিল বলে দাবি করেন তারা।

ঢাকাটাইমস/১২অক্টোবর/প্রতিনিধি/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :