গ্ল্যাক্সোর মতো স্যানোফি নিয়েও ‘ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগ

প্রকাশ | ১৩ অক্টোবর ২০১৯, ১৭:২৫ | আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৯, ১৯:৩৮

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

বাংলাদেশে ৬০ বছর ধরে চলমান ফ্রান্সের ওষুধ কোম্পানি সানোফির চলে যাওয়ার উদ্যোগের পেছনে প্রতিবেশী দেশের ষড়যন্ত্র দেখছেন প্রতিষ্ঠানটির শ্রমিক-কর্মচারীরা। তারা এর সঙ্গে জার্মান কোম্পানি গ্ল্যাক্সো স্মিথক্লাইনের চলে যাওয়ার মিল খুঁজে পাচ্ছেন।

আজ রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের মওলানা আকরম খাঁ হলে সানোফি বাংলাদেশ লিমিটেড শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের সংবাদ সম্মেলনে এই সন্দেহ প্রকাশ করেন কেমিক্যাল এনার্জি অ্যান্ড এলাইড ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি কুতুবুদ্দিন আহমেদ। এতে সভাপতিত্ব করেন ইউনিয়নের সিবিএ সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক।

কুতুবুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘১৯৫৮ সাল থেকে সুনামের সঙ্গে চলে আসা সানোফিতে কখনো কোনো চেয়ারম্যানের পদ ছিল না। বছর দেড়েক আগে প্রতিবেশী একটি দেশের রামপ্রসাদ কৃষ্ণভাট নামের এক লোককে এনে চেয়ারম্যানের পদে বসানো হয়। তিনি এখানে আসার পর ওই দেশের অনেক লোককে স্যানোফিতে উচ্চ বেতনের পদে বসান। আমাদের দেশের অনেক অভিজ্ঞ কর্মচারীকে ছাঁটাই করা হয়।’

এ সময় তিনি চট্টগ্রাম থেকে কোম্পানি গুটিয়ে নেওয়া জার্মানির গ্ল্যাক্সো কোম্পানির উদাহরণ দেন। লাভজনক প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিয়ে ভারতে কারখানা স্থাপন করেছে।

কুতুবউদ্দিন বলেন, ‘স্যানোফির পেছনেও আমরা প্রতিবেশী দেশের ষড়যন্ত্র দেখছি। লাভজনক গ্ল্যাক্সো চলে যাওয়ার আগে সেখানে ওই প্রতিবেশী দেশের একজনকে উচ্চপদে বসানো হয়। এর বছর খানেক পর প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ থেকে চলে যায়। আশ্চর্যজনক হলো- সেই গ্ল্যাক্সো বাংলাদেশ থেকে বেরিয়ে গিয়ে ভারতে কারাখানা চালু করে। সানোফির ক্ষেত্রেও তাই হতে চলেছে।’

এটি বাংলাদেশের জন্য মর‌্যাদাহানিকর ও স্বার্থপরিপন্থী বলে উল্লেখ করে তিনি এ ব্যাপারে সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করেন।

এর আগে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান সিবিএর সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা।

তাতে বলা হয়, ফ্রান্সভিত্তিক ওষুধ কোম্পানি স্যানোফি ১৯৫৮ সালে টঙ্গীতে কারখানা স্থাপনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে ব্যবসা করে আসছে। এখন পর্যন্ত কোম্পানিটি কখনো ক্ষতির মুখে পড়েনি। চলতি বছরও তারা ৭২ কোটি টাকার অধিক মুনাফা করেছে।

লিখিত বক্তব্যে সিবিএ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সম্প্রতি গণমাধ্যমের খবরে আমরা জানতে পারি সানোফি বাংলাদেশ থেকে তাদের ব্যবসা গুটিয়ে চলে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ রহস্যজনকভাবে নীরবতা ও লুকোচুরির আশ্রয় নিয়েছে। তারা সানোফিতে কর্মরত কাউকে এ বিষয়ে কোনো তথ্য জানাচ্ছে না।’

সিবিএর পক্ষ থেকে বাংলাদেশ কেমিক্যাল এনার্জি অ্যান্ড এলাইড ফেডারেশনের (বিসিইএফ) মাধ্যমে সানোফির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও সানোফির লোকাল কান্ট্রি চেয়ারম্যান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালককে সর্বশেষ অবস্থা জানতে চেয়ে চিঠি দেওয়া হলেও কর্তৃপক্ষ তাতে কোনো সাড়া দেয়নি বলে অভিযোগ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।

স্যানোফি কর্তৃপক্ষের নীরবতায় উদ্বেগ প্রকাশ করে সংবাদ সম্মেলনে ‘কারখানা বন্ধের চক্রান্তের প্রতিবাদে’ ১৮ অক্টোবর টঙ্গীতে কারখানার সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সেখান থেকে আরও কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে বলে জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে প্রত্যেক শ্রমিকের বয়স ৬০ বছর ধরে তার পাওনা, প্রতিবছর দুই মাসের গ্রাচুইটিসহ সব পাওনা পরিশোধসহ মোট ১৩ দফা দাবি জানানো হয়।

(ঢাকাটাইমস/১৩অক্টোবর/মোআ)