আন্দোলনের মুখে বশেমুরবিপ্রবির সাবেক ভিসির ভাতিজার পদত্যাগ

বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৩ অক্টোবর ২০১৯, ২১:৫৩

আন্দোলনের মুখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক (আইআর) বিভাগের চেয়ারম্যান খোন্দকার মাহমুদ পারভেজের পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন।

রবিবার বিকাল ৪টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. নুরউদ্দিন আহমেদ।

সকাল থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে নামেন বিভাগটির শিক্ষার্থীরা। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া, শিক্ষার্থীদের সাথে স্বৈরাচারী আচরণ এবং অনৈতিকভাবে শিক্ষার্থীদের নাম্বার কম দেয়ার অভিযোগ তুলে সকালে ক্লাস বর্জন করে বিভাগের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন তারা।

বিভাগের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, খোন্দকার পারভেজ সাবেক উপাচার্য খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের ভাতিজা। ২০১৭ সালে সর্বপ্রথম সেকশন অফিসার হিসেবে বশেমুরবিপ্রবিতে যোগদান করেন তিনি। পরবর্তীতে অনার্স মাস্টার্সে দ্বিতীয় শ্রেণি থাকা সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে প্রভাষক পদে যোগদান করেন। এরপর মাত্র দেড়বছরেই সহকারী অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। প্রথম দিকে শিক্ষার্থীদের প্রতি স্নেহপূর্ণ আচরণ করলেও চেয়ারম্যান হওয়ার পর স্বেচ্ছাচারী হয়ে ওঠেন এই শিক্ষক। কথায় কথায় শিক্ষাজীবন নষ্ট করে দেয়ার হুমকি দিতে শুরু করেন তিনি। নিজের ক্ষমতা প্রদর্শনের জন্য এসাইনমেন্ট ও পরীক্ষায়ও অকারণেই নাম্বার কম দেন।

আইআর বিভাগের শিক্ষার্থী অভি রহমান বলেন, ‘তিনি সম্প্রতি একটি কোর্সের এসাইনমেন্টে ৩৪ জনকে শূন্য দিয়েছেন। আমরা যখন কারণ জানতে চেয়েছি তিনি বলেছেন তার ইচ্ছে হয়েছে তাই শূন্য দিয়েছে। একজন শিক্ষক কিভাবে এমন হতে পারে! তার আচরণে মনে হয়েছে আমরা তার খেলার পুতুল।’

আরেক শিক্ষার্থী সম্রাট জানান, তিনি ভিসির ভাতিজা হিসেবে অবৈধভাবে নিয়োগ পেয়েছেন। ক্লাসেও ঠিকভাবে পড়াতে পারেন না। উইকিপিডিয়া দেখে দেখে বানান করে পড়ান। এছাড়া কোনো বিষয়ে প্রশ্ন করলেই রেগে যান, হুমকি দেন শিক্ষাজীবন নষ্ট করে দেয়ার।

এদিকে এ সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন খোন্দকার মাহমুদ পারভেজ জানিয়েছেন, তার অনার্স মাস্টার্সে দ্বিতীয় শ্রেণি রয়েছে সত্যি কিন্তু তার নিয়োগ অবৈধ নয় কারণ নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্য প্রার্থীদের ক্ষেত্রে দুটি শর্ত শিথিলযোগ্য রয়েছে।

বশেমুরবিপ্রবিতে তার পিএইচডি চলমান থাকায় এবং রবীন্দ্র জার্নালে চারটি প্রকাশনা থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় তাকে অধিকতর যোগ্য প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

আন্দোলন শুরুর দিকে আন্দোলনস্থলে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রাজিউর রহমান। এসময় তিনি শিক্ষার্থীদের অভিযোগগুলো লিখিতভাবে জমা দিতে বলেন এবং আইনি প্রক্রিয়ায় অভিযোগগুলো প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেন শিক্ষার্থীদের।

এদিকে প্রক্টরের আশ্বাসে লিখিত অভিযোগে ৩ দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে আন্দোলন প্রত্যাহার করেন শিক্ষার্থীরা। তারা জানান, তিন দিনের মধ্যে চেয়াম্যানের পদ থেকে মাহমুদ পারভেজ পদত্যাগ না করলে তারা আরও কঠোর আন্দোলনে যাবে।

(ঢাকাটাইমস/১৩অক্টোবর/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

শিক্ষা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :