‘আইএসের নজর কাড়তেই পুলিশের ওপর হামলা’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৪ অক্টোবর ২০১৯, ১৭:১৩ | প্রকাশিত : ১৪ অক্টোবর ২০১৯, ১৪:৫৮

আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই ঢাকায় পুলিশের ওপর হামলা করেছিল জঙ্গিরা। আর বিভিন্ন সময় হামলার জন্য জঙ্গিরা পুলিশ বক্সকে টার্গেট করে।

রবিবার রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে নব্য জেএমবির দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তারা হলেন মেহেদী হাসান তামিম ও আব্দুল্লাহ আজমির। পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য বেরিয়ে আসে।

সোমবার ১১টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম। বলেন, ‘নব্য জেএমবির প্রধান টার্গেট পুলিশ। আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠীর (বিশেষ করে আইএস) দৃষ্টি আকর্ষণের জন্যই জঙ্গিরা পুলিশের ওপর হামলার টার্গেট করেছিল।’

মনিরুল বলেন, ‘গ্রেপ্তারদের প্রধান টার্গেট ছিল পুলিশ। তাই বিভিন্ন সময়ে হামলার জন্য তারা পুলিশ বক্সকে টার্গেট করে হামলা করেছে। প্রতিটি হামলার আগে টার্গেট স্থানে বারবার র‍্যাকি করত তারা। পুলিশের ওপর তাদের হামলার কারণ হচ্ছে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করা। যার মধ্যে তাদের প্রথম পছন্দ ছিলো আইএস। তারা তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছিল। তবে এখন আইএস'র সঙ্গে তাদের কোনো ধরনের যোগাযোগ নেই।’

গত এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত পাঁচ মাসে রাজধানী ঢাকায় পুলিশকে লক্ষ্য করে অন্তত তিনটি সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটছে। এতে কেউ প্রাণ না হারালেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন। প্রতিটি হামলাই হয়েছে আচমকা, সন্ধ্যা বা রাতে। কিছু বুঝে উঠার আগেই পালিয়েছে হামলাকারী। আর হামলার পর অনলাইনে দায় স্বীকার করার ঘোষণা এসেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠী আই এসের নামে।

অবশ্য তাৎক্ষণিক সরকার বা পুলিশের দাবি ছিল, এগুলো আইএসের কাজ নয়। এগুলো স্থানীয় সন্ত্রাসীদের কাজ। জঙ্গি বা অপরাধীদের ‘দুর্গ’ ধ্বংস করে দেওয়ায় তারা পুলিশকে প্রতিপক্ষ ভাবছে। আর বাহিনীর মনোবল ভেঙে দেওয়ার জন্য এসব হামলা চালানো হচ্ছে।

৩১ আগস্ট রাতে সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলামের যাত্রাপথে বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। তাতে একজন এএসআই এবং একজন কনস্টেবল আহত হন।

তার চার মাস আগে ২৯ এপ্রিল রাতে গুলিস্তানে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের ওপর বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। এতে ট্রাফিক কনস্টেবল নজরুল ইসলাম, লিটন চৌধুরী ও কমিউনিটি পুলিশ সদস্য মো. আশিক আহত হন৷

২৬ মে রাত পৌনে নয়টার দিকে রাজধানীর মালিবাগের পলওয়েল ফিলিং স্টেশনের বিপরীতে ফ্লাইওভারের নিচে রাখা পুলিশের বিশেষ শাখার একটি পিক-আপভ্যানে বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। ট্রাফিক পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) রাশেদা আক্তার এবং রিকশাচালক লাল মিয়া ও পথচারী শাহনাজ শারমিন সে সময় আহত হন।

সিটিটিসি প্রধান মনিরুল বলেন, ‘গ্রেপ্তার দুজন নব্য জেএমবির সামরিক শাখার সদস্য। তারা খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় থেকেই তারা নিষিদ্ধ সংগঠনের কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত হয়। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ভোলার একটি দুর্গম চরে সামরিক প্রশিক্ষণ নেয়। ২০১৯ সালের শুরুর দিকে গত সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ থেকে আটক ফরিদ উদ্দিন রুমির ছোট ভাই রফিকের নেতৃত্বে একটি সামরিক শাখা প্রতিষ্ঠা করে।’

মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘হামলার লক্ষ্যে তারা ফতুল্লায় রফিকের বাসায় একটি কারখানায় তারা বোমা তৈরি করে আসছিল। তাদের তৈরি বোমা দিয়ে চলতি বছরের ১৯ এপ্রিল গুলিস্তানে এবং ৩১ আগস্ট মালিবাগে পুলিশের ওপর হামলা হয়েছিল।’ এছাড়া সাইন্সল্যাবে, মালিবাগ, পল্টন ও খামার বাড়ির বোমা হামলায় ব্যবহৃত বোমাও তাদের হাতেই তৈরি ছিল বলে তিনি জানান।

ঢাকাটাইমস/১৪অক্টোবর/এসএস/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :