বুয়েটে ভর্তির প্রশ্নে সন্তোষ, রাজনীতি বন্ধে মিশ্র প্রতিক্রিয়া
প্রকাশ | ১৪ অক্টোবর ২০১৯, ১৬:৩৩
সুষ্ঠুভাবে শেষ হয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা। সোমবার সকাল ৯টায় শুরু হয়ে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলে এই পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় প্রশ্নের মান নিয়ে সন্তুষ্ট পরীক্ষার্থীরা। তবে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্তে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন অভিভাবকরা।
সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে আসা শাউন নামের এক পরীক্ষার্থী ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘পরীক্ষার প্রশ্ন একটু কঠিন মনে হয়েছে। তবে ম্যাথ, কেমিস্ট্রি প্রশ্ন মোটামুটি ভালোই হয়েছে।’
যাত্রাবাড়ী থেকে আসা আবির বলেন, ‘প্রশ্ন গত বছরের তুলনায় একটু কঠিনই হয়েছে। তবে যারা ভালো প্রস্তুতি নিয়েছে তারা ভালো লিখতে পেরেছে।’
বগুড়া থেকে আসা ইমরান বলেন, ‘প্রশ্ন একদম মানের হয়েছে, তবে কিছু প্রশ্ন আছে যেগুলো প্রশ্নব্যাংকেও খুঁজে পাওয়া যায়নি। সে হিসেবে একটু কঠিন হয়েছে। তবে প্রশ্ন হওয়া উচিত ছিল সেরকমই হয়েছে।’
বুয়েটে ভর্তি হতে পারলে কেমন ক্যাম্পাস দেখতে চায় জানতে চাইলে পরীক্ষার্থীরা জানান, রাজনীতিমুক্ত দেখতে চান এবং তারা পড়াশোনার মধ্যেই থাকতে চান।
আরেক পরীক্ষার্থী বলেন, ‘শুধু রাজনীতি বন্ধ করলেই হবে না, র্যাগিংও বন্ধ করতে হবে। আমরা যারা নতুন আসি তাদের জন্য এটাই সবচেয়ে বড় ভয়।’
বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ হওয়ায় চিন্তামুক্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা।
ভোলা থেকে আসা হারুনুর রশীদ নামের এক অভিভাবক বলেন, ‘বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধে আমি খুশি। কারণ বুয়েটে যেটা হচ্ছে সেটা ছাত্ররাজনীতি না। আমরা যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তাম তখনও ছাত্ররাজনীতি ছিল। তখন আমাদের মধ্যে কিন্তু পরস্পরের প্রতি সহমর্মিতা, শ্রদ্ধাবোধ ছিল । আপনার সাথে আমাদের মতদ্বৈততা থাকতে পারে, তাই বলে একজনকে পিটিয়ে হত্যা এটা বিপথগামিতা। আর এই বিপথগামিতা একদিনে তৈরি হয়নি। এটার পরিবর্তন আনতে হবে।’ এটার জন্য তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকেও দায়ী করেন।
চট্টগ্রাম থেকে আসা ইঞ্জিনিয়ার আব্দুর রশীদ নামের এক অভিভাবক বলেন, ‘এটা খুবই দুঃখজনক যে, একটি মেধাবী ছাত্রকে আরও কয়েকজন মেধাবী ছাত্র পিটিয়ে হত্যা করেছে।’ এই ঘটনার জন্য প্রশাসনকে দায়ী করে তিনি বলেন, ‘প্রশাসন যদি শুরুতেই এসব ঘটনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতো তাহলে আজকে আবরারকে মরতো হতো না। এই ছেলেগুলো খারাপ হওয়ার পেছনে ছাত্ররাজনীতির চেয়েও বুয়েট প্রশাসন বেশি দায়ী।’
তবে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ এই ধরনের ঘটনার সমাধান না বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘ছাত্ররাজনীতি বন্ধ হলে তাদের মাঝে নেতৃত্ব গড়ে উঠবে কীভাবে। এই জন্য ছাত্ররাজনীতি নয়, অপরাজনীতি বন্ধ করা উচিত।’ তবে আপাতত ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করে পরে আবার চালু করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
এদিকে আর্কিটেকচার অংশে পাঁচ ঘণ্টার পরীক্ষার দ্বিতীয় অংশ দুপুর ২টা থেকে শুরু হয়েছে। চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।
প্রসঙ্গত, এবছর এক হাজার ৬০টি আসনের বিপরীতে ১২ হাজার ১৬১ জন পরীক্ষা দিচ্ছেন। আসনপ্রতি লড়ছেন ১১ জন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে ৮৮৯৬ জন ছাত্র ও ৩২৬৫ জন ছাত্রী।
(ঢাকাটাইমস/১৪অক্টোবর/এমআই/জেবি)