‘দেশদ্রোহিতায়’ ৯ কাতালান নেতাকে দণ্ড দিল স্পেন
প্রকাশ | ১৪ অক্টোবর ২০১৯, ১৯:০৩ | আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৯, ১৯:২৮
কাতালোনিয়ার স্বাধীনতাকামী নয়জন রাজনীতিককে কারাদণ্ড দিয়েছে স্পেনের সুপ্রিম কোর্ট। বিচ্ছিন্নতাবাদ ও দেশদ্রোহিতার অভিযোগে তাদেরকে ৯ থেকে ১৩ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আদালতের রায় ঘোষণার পর কাতালনের রাজধানী বার্সেলোনার রাস্তায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে স্বাধীনতাকামীরা। এ সময় তারা ‘রাজনৈতিক কারাবন্দিদের মুক্তি দিন’ ব্যানার প্রদর্শন করে সবাইকে রাস্তায় নামার আহ্বান জানায়।
গত বছরের অক্টোবর থেকে স্বাধীনতার দাবিতে কাতালোনিয়ার স্বাধীনতা ঘোষণা করে কাতালানের সাবেক প্রেসিডেন্ট পুজদেমনের নেতৃত্বাধীন স্বাধীনতাকামীরা। তারপর স্পেনের জাতীয় সরকার কাতালোনিয়া সরকার ভেঙে দেয় ও পুজদেমনকে বরখাস্ত করে। পরে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে বিদেশে পালিয়ে যান তিনি। বর্তমানে তিনি জার্মানিতে রাজনৈতিক আশ্রয় গ্রহণ করেছেন।
পরে স্পেনের কেন্দ্রীয় সরকার স্বাধীনতাকামীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহসহ বিভিন্ন অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করা হয়।
মামলায় কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি আনুগত্য অস্বীকারের অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় অন্য তিন আসামিকে শুধু জরিমানা করা হয়েছে। তবে নিজেদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন দণ্ডপ্রাপ্ত ১২ নেতা ও অধিকারকর্মী।
মামলায় কাতালোনিয়ার সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ও স্বাধীনতাকামী নেতা ওরিওল জানকুয়েরাসের ২৫ বছরের কারাদণ্ডের আবেদন জানায় রাষ্ট্রপক্ষ। কিন্তু শুনানি শেষে রাষ্ট্রদ্রোহ ও সরকারি তহবিলের অর্থ অপব্যবহারের অভিযোগে তাকে ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। অন্য আট আসামিকে সর্বোচ্চ ৯ বছরসহ বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয় স্পেনের সুপ্রিম কোর্ট।
কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ১২ কাতালান নেতার অধিকাংশই বিগত সময়ে রাজ্য সরকার ও পার্লামেন্টের গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন। গত ১২জুন আদালতে প্রত্যেক আসামিকে তাদের বক্তব্য পেশ করার সুযোগ দেয়া হয়। তখন তারা আদালতকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করে।
স্পেনের উত্তর-পূর্বের কাতালোনিয়া প্রদেশ দেশটির অত্যন্ত সমৃদ্ধ একটি অঞ্চল। এর লিখিত ইতিহাস এক হাজার বছরেরও বেশি পুরনো। এর জনসংখ্যা মাত্র ৭৫ লাখ। স্পেনের মোট জনসংখ্যার ১৬ শতাংশ এই শহরে বাস করে। এই প্রদেশের রাজধানী হচ্ছে বার্সেলোনা। তাদের নিজস্ব ভাষা রয়েছে। বার্সেলোনা ফুটবল ও পর্যটনের কারণে বিশ্বে অনেক পরিচিত। স্পেনের মোট জিডিপির এক পঞ্চমাংশ আসে এই বার্সেলোনা থেকে।
২০১৭ সালে কাতালানরা আদালতের নিষেধাজ্ঞা ও মাদ্রিদের হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে স্বাধীনতার প্রশ্নে পার্লামেন্টে একটি গণভোট আয়োজন করে। গণভোটে স্বাধীনতার পক্ষে ৭০টি ভোট ও বিপক্ষে ১০টি ভোট পড়ে।
গণভোটের ফলাফল ঘোষণার পরপরই কেন্দ্রীয় সরকার কাতালোনিয়ায় সরাসরি শাসন জারির পরিকল্পনা অনুমোদন করে। কাতালান প্রেসিডেন্ট ও পুলিশ বাহিনীর প্রধানকেও বরখাস্ত করা হয়। এখন কাতালান কেন্দ্রীয় সরকারের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
ঢাকাটাইমস/১৪অক্টোবর/আরআর