তুহিনের মা এখন পাগলপ্রায়, বিচার চান খুনিদের

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৬ অক্টোবর ২০১৯, ২২:২২
মায়ের সঙ্গে তুহিন (ডানে)। আদালতে বাবা ও চাচারা (বামে)

সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে নৃশংসভাবে খুন হওয়া শিশু তুহিনকে হারিয়ে মা মনিরা বেগম বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। কান্না করতে করতে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন তিনি। সন্তান হারানোর শোকে বিহ্বল এই মাকে সান্ত্বনা দেয়ার মতো কোনো ভাষা খুঁজে পাচ্ছেন না প্রতিবেশী ও স্বজনরা। ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মা মঙ্গলবার রাতে চলে যান উপজেলার জকিনগর গ্রামে বাবার বাড়িতে।

কাঁদতে কাঁদতে তুহিনের মা বলছিলেন, ‘তুহিন তার বাবার পাশেই ঘুমাতো। তুহিনের বাবা এই হত্যার সঙ্গে জড়িত এটা বিশ্বাস করতে আমার কষ্ট হচ্ছে।’ তিনি জানান, ১৬ দিন আগে তার এক কন্যাসন্তানের জন্ম হয়েছে, যার জন্য তিনি এখনো অসুস্থ।

তুহিন হত্যার বর্ণনা দিয়ে তিনি জানান, রবিবার রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষে বাবার পাশেই ঘুমায় তুহিন। শেষ রাতে তুহিনের চাচাতো বোন তানিয়া বেগম ঘরের দরজা খোলা দেখতে পায়। এরমধ্যে তুহিনও ঘরে নেই। খোঁজাখুঁজি করে তুহিনকে বাড়ির পাশের রাস্তায় গাছের সাথে রশি দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।

মনিরা বেগম বলেন, ‘আমার নিষ্পাপ শিশু সন্তানকে যারা নৃশংসভাবে খুন করেছে আমি সরকারের কাছে দাবি জানাই, তাদেরকে যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হয়।’

নিহত তুহিনের মামা শামসুজ্জামান ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘নিষ্পাপ ভাগ্নেকে হারিয়ে আমার বোন অসহায় হয়ে পড়েছে। যারা তুহিনকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে তাদের যেন সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি হয়।’

উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের কেজাউড়া গ্রামে সোমবার ভোরে গাছে ঝুলেছিল তুহিনের লাশ। পেটের মধ্যে ঢোকানো ছিল দুটি ছুরি। ডান হাতটি গলার সঙ্গে থাকা রশির ভেতরে ঢোকানো আছে। বাম হাতটি ঝুলেছিল লাশের সঙ্গে। কেটে নেওয়া হয় শিশুটির কান ও লিঙ্গ। আর তার পুরো শরীর ভিজে যায় রক্তে।

বীভৎস এই খুনের ঘটনাটি ছুঁয়ে যায় দেশবাসীকে। তবে শিশুটির খুনের সঙ্গে যখন বাবা এবং চাচাদের সম্পৃক্ততার কথা জানায় পুলিশ, তখন তাদের ধিক্কার জানানোর ভাষা ছিল না কারো কাছে। প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর জন্য এমন বর্বরতম পথ কেউ বেছে নিতে পারে তা মানতে কষ্ট হচ্ছিল সবার।

এই ঘটনায় তুহিনের মা বাদী হয়ে মঙ্গলবার ১০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। মঙ্গলবার বিকালে পুলিশ আসামিদের পাঁচ দিনের রিমান্ড চাইলে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শ্যামকান্ত সিনহা বাবা বাছির ও দুই চাচার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডের আসামিরা হলেন-তুহিনের বাবা আব্দুল বাছির, চাচা আব্দুর মুছাব্বির এবং জমশেদ আলী।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের কেজাউরা গ্রামের সাবেক মেম্বার আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে তুহিনের বাবা আব্দুল বাছিরের আধিপত্য বিস্তার ও জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। তুহিন হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিতে যে দুই ব্যক্তির নাম লেখা ছিল ছালাতুল ও সোলেমান; তারা আনোয়ার হোসেনের লোক। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এমন নৃশংস ঘটনা ঘটেছে বলে তাদের ধারণা।

(ঢাকাটাইমস/১৬অক্টোবর/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

বিল বকেয়ায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন, অবৈধ বিদ্যুতে চলছে ইউপি কার্যালয়

কেজি দরে অপরিপক্ব তরমুজ, পিস চাইলে দাম আকাশ ছোঁয়া

লক্ষ্মীপুরে যুবলীগ নেতার চোখ উপড়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা

ফেনী সরকারি কলেজে শিক্ষার্থীদের গণইফতারে ছাত্রলীগের হামলা, আহত ১০

মধ্যরাতে ফের মিয়ানমারের গুলির শব্দে কেঁপে উঠল টেকনাফ সীমান্ত

উত্তরবঙ্গের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক, দুর্ঘটনা তদন্তে ৪ সদস্যের কমিটি

বরগুনা প্রেসক্লাবের নামে ভুয়া কমিটি গঠনের অভিযোগ 

ঝিনাইদহে বাজার নিয়ন্ত্রণে ভোক্তা অধিকারের অভিযান, ৩ প্রতিষ্ঠানে জরিমানা

যারা ট্রেনে আগুন দেয় তারাই ভাড়া বৃদ্ধির গুজব ছড়ায়: রেলমন্ত্রী

আলফাডাঙ্গায় দিনব্যাপী ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :