তুরস্ককে একদিকে হুমকি অপরদিকে নমনীয় চিঠি যুক্তরাষ্ট্রের
সিরিয়ার যুদ্ধ পরিস্থিতি সপ্তাহখানেকের ব্যবধানে সম্পূর্ণ বদলে গেছে। কুর্দিদের বিরুদ্ধে তুরস্ক হামলা শুরুর পর নতুন মোড় নিয়েছে সিরিয়া যুদ্ধ। এমন অবস্থায় এতদিন মার্কিনিদের মিত্র থাকা কুর্দিদের পক্ষে সরাসরি সহযোগিতা না করলেও তুরস্ককে হামলা বন্ধ করতে চাপ প্রয়োগ করছে যুক্তরাষ্ট্র। একদিকে দেশটির ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা বাড়িয়ে দেয়ার হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে অপরদিকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানকে কঠিন না হওয়ার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
বুধবার মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্টিভ নুচিন বলেন, তারা নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপে প্রস্তুত। অপরদিকে এরদোয়ানকে লেখা এক চিঠিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, ‘এতটা কঠিন হবেন না। চলুন সুন্দর একটা চুক্তি করি।’ এছাড়া ট্রাম্প হুঁশিয়ারিও দেন ‘বোকার মতো আচরণ করবেন না।’
৯ অক্টোবর থেকে তুর্কি সীমান্তবর্তী সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে ‘অপারেশন পিস স্প্রিং’ নামে সামরিক অভিযান শুরু করে তুরস্ক। এ অভিযানের মাধ্যমে অঞ্চলটি থেকে আইএস জঙ্গি ও কুর্দি বিদ্রোহীদের বিতাড়িত করে সেখানে একটি সেফ জোন প্রতিষ্ঠা করতে আগ্রহী আঙ্কারা। এ সেফ জোনে দীর্ঘদিন ধরে তুরস্কে বসবাসরত সিরীয় শরণার্থীদের বসবাসের ব্যবস্থা করতে চায় আঙ্কারা। তুর্কি অভিযানের আগে সেখান থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘোষণা দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে অভিযান শুরুর পর তুরস্কের দুইজন মন্ত্রী এবং তিনজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র।
সমালোচকদের ভাষায়, গত সপ্তাহে ওই অঞ্চল থেকে যুক্তরাষ্ট্র তাদের সেনা সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেওয়ার মধ্য দিয়ে তুরস্ককে হামলার ‘সবুজ সংকেত’ দিয়েছে। এরপর থেকেই সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়েছে ট্রাম্প প্রশাসনকে। স্টিভ নুচিন বলেন, ‘তারা অস্ত্রবিরতিতে সম্মত না হলে আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। আমি আশা করছি, তারা এখন নিষেধাজ্ঞাকে গুরুত্ব দিয়ে অস্ত্রবিরতিতে সম্মত হবে।
তবে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেছেন, সিরিয়ার তুর্কি সীমান্ত এলাকায় সামরিক অভিযান বন্ধ করতে অনেক চাপ এসেছিল। কিন্তু আঙ্কারা নিষেধাজ্ঞার ভয়ে উদ্বিগ্ন নয়। তুরস্ক এসবের পরোয়া করে না।
এছাড়া মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর এরদোয়ানকে চিঠি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। সেখানে ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘আপনি নিশ্চয়ই হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করতে চাইবেন না। আর আমিও চাই না তুরস্কের অর্থনীতি ধসে পড়ুক। এবং আমি সেটা করবোই। ট্রাম্প বলেন, আমি আপনার কিছু সমস্যা সমাধানে অনেক পরিশ্রম করেছি। বিশ্বকে হতাশ করবেন না। আপনি নিশ্চয়ই ভালো একটা চিুক্তি করতে পারেন।
চিঠিতে ট্রাম্প বলেন, আপনি যদি এখন সঠিক ও মানবিক আচরণ করেন তবে ইতিহাস আপনাকে মনে রাখবে। আর যদি ভালো কাজ না হয় আপনাকে শয়তানরুপে দেখবে। এতটা কঠিন হবেন না।
ঢাকা টাইমস/১৭অক্টোবর/একে