শেষমেশ ব্রেক্সিট চুক্তির সমঝোতায় ইইউ-ব্রিটেন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৭ অক্টোবর ২০১৯, ১৭:১৯

ব্রেক্সিট চুক্তির বিষয়ে অবশেষে একটি সমঝোতায় পৌঁছেছে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এই ইস্যুতে দীর্ঘ অনিশ্চয়তায় ছিল যুক্তরাজ্য। এমনকি ব্রেক্সিট চুক্তির ইস্যুকে ঘিরে ক্ষমতার পালাবদলও ঘটে।

বৃহস্পতিবার বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানায়, লন্ডনের ব্রাসেলেসে ইউরোপীয় ইউনিয়ন নেতাদের এক রুদ্ধদার বৈঠকের পর বরিস জনসন ও ইইউ প্রতিনিধিদল একটি সমঝোতায় পৌঁছান। এখন উভয় পক্ষের প্রতিনিধিরা ব্রেক্সিট এর আইনি বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করছেন।

কিন্তু উভয় পক্ষ সমঝোতায় পৌঁছালেও ব্রেক্সিট কার্যকরের জন্য ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ও ইইউ পার্লামেন্টের অনুমোদন নিতে হবে। পার্লামেন্টে ব্রেক্সিট চুক্তি অনুমোদিত না হলে ব্রেক্সিট ইস্যুতে নতুন সংকট দেখা দেবে।

বৈঠকের পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এক টুইট বার্তায় জানান,‘‘আমরা দারুণ একটি সমঝোতায় পৌছেছি। বর্তমান পরিস্থিতির ওপর পুনরায় নিয়ন্ত্রণও ফিরেছে।’’

অপর এক টুইট বার্তায় ইইউ প্রতিনিধি জ-ক্লোদ ইয়ুংকার বলেন,‘‘ইচ্ছা থাকলেই চুক্তি স্বাক্ষর সম্ভব। আমরা সেটা পারব। এটা যুক্তরাজ্য ও ইইউ-এর মধ্যে একটি স্বচ্ছ ও ভারসাম্যপূর্ণ সমঝোতা। সংকট উত্তোরণের পথ খোঁজার ক্ষেত্রে আমাদের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। চুক্তি অনুমোদনে তৎপর হতে আমি ইউরোপীয়ান কাউন্সিলের কাছে সুপারিশ করছি।’’

মূলত ‘ব্রিটিশ এক্সিট’ কে সংক্ষেপে ব্রেক্সিট নামে ডাকা হয়। এটি হচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাবার প্রক্রিয়া।

১৯৭৩ সালে যুক্তরাজ্য ইইউতে যোগ দেয়। দীর্ঘ ৪০ বছর ইইউ এর সঙ্গে থাকার পর ২০১৬ সালের ২৩শে জুন ইইউ থেকে বেরিয়ে যাবার ইস্যুতে একটি গণভোট আয়োজন করেছিল সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। ৫২ শতাংশ ভোট পড়েছিল ইইউ থেকে বেরিয়ে যাবার পক্ষে, আর থাকার পক্ষে ছিল বাকি ৪৮ শতাংশ ভোট। গণভোটের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর পদত্যাগের ঘোষণা দেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন।

এরপর থেকেই কি উপায়ে ইইউ থেকে যুক্তরাজ্য বেরিয়ে যাবে সে বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়। থেরেসা মে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের চেষ্টা করেন। তিনি ইইউ এর সঙ্গে থাকার পক্ষেই ছিলেন।

থেরেসা মে’র দাবি ছিল,‘ইইউ থেকে বিচ্ছেদ মানে বিচ্ছেদ। যুক্তরাজ্য কোনোভাবেই ইইউর সদস্য থাকবে না এবং সর্বোচ্চ স্বার্থ নিশ্চিত করেই যুক্তরাজ্য ইইউর সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্নির্ধারণ করবে।’

কিন্তু তার পার্লামেন্টের মেয়াদ ২০২০ সাল পর্যন্ত থাকলেও ব্রেক্সিট চুক্তি বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ হওয়ায় চলতি বছর মধ্যবর্তী নির্বাচন দিতে বাধ্য হন। সেই নির্বাচনে ব্রেক্সিটপন্থী হিসেবে পরিচিত বরিস জনসন নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জয়ী হন।

বরিস জনসন নির্বাচনী প্রচারণায় ঘোষণা দিয়েছিলেন আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যেই ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন করবেন। প্রয়োজনে চুক্তি ছাড়াই ইইউ থেকে বেরিয়ে আসবে যুক্তরাজ্য।

কোন ধরনের চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিট হয়ে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে ব্রিটেনকে সাথে সাথেই ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কাস্টমস ইউনিয়ন এবং একক বাজার থেকে বের হয়ে যেতে হবে।

কিন্তু চুক্তি ছাড়াই ইইউ থেকে ব্রিটেনের বের হয়ে যাওয়ার বিরোধিতা করে ভোট দেন দেশটির পার্লামেন্টের একাধিক সংসদ সদস্য।

অন্যদিকে ব্রেক্সিট বিলের বিরোধিতাকারীদের দাবি হচ্ছে, বিলটি যুক্তরাজ্যের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ইইউ-এর প্রভাব নিয়ন্ত্রণ করার মতো সুযোগ দেয়নি। তাছাড়া, আরেকটি বড় বিষয় ছিল আইরিশ সীমান্ত নিয়ে।

ব্রেক্সিট বাতিল করার আইনি উপায়ও আছে। এজন্য শুধু সরকারকে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কাছে পাঠানো আর্টিকেল ৫০ প্রত্যাহার করতে হবে। তবে উভয় পক্ষ সমঝোতায় পৌছানোর কারণে এই পথে আর জনসনকে হাঁটতে হবে না বলে আশা বিশ্লেষকদের।

ঢাকাটাইমস/১৭সেপ্টেম্বর/আরআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ

দুবাই বিমানবন্দরে জলাবদ্ধতায় চরম বিশৃঙ্খলা, যাত্রীদের দুর্বিষহ অবস্থা

ইসরায়েলি হামলায় গাজা একটি ‘মানবিক নরকে’ পরিণত হয়েছে: গুতেরেস

ইরানের ওপর ফের যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞা

যে কারণে ৩০ এপ্রিলের আগে ইরানে হামলা চালাবে না ইসরায়েল

ইসরায়েলের সঙ্গে চুক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, ২৮ কর্মীকে বরখাস্ত করলো গুগল

আমিরাতে বৃষ্টিপাত অব্যাহত, দুবাই বিমানবন্দরে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা

ভারতে প্রথম দফায় লোকসভা নির্বাচন শুরু শুক্রবার

ইরানের হাতে রাশিয়ার এসইউ-৩৫ যুদ্ধবিমান ও এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা!

নেসলের বেবিফুডে অতিরিক্ত চিনি  

ইসরায়েল আত্মরক্ষার জন্য সবকিছু করবে: নেতানিয়াহু 

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :