আবরার হত্যা

অমিত আরও তিন দিনের রিমান্ডে, তোহা কারাগারে

প্রকাশ | ১৭ অক্টোবর ২০১৯, ১৯:৪৬

আদালত প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ (২২) হত্যা মামলার অন্যতম আসামি ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত আইনবিষয়ক উপসম্পাদক অমিত সাহার আরও তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।

পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে আজ বৃহস্পতিবার তদন্ত কর্মকর্তা আরও সাত দিনের রিমান্ড চাইলে ঢাকা মহানগর হাকিম হাকিম আবু সাঈদ তিন দিনের রিমান্ড আদেশ দেন।

এদিকে পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে আসামি হোসেন মোহাম্মদ তোহাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে একই আদালত।

এর আগে গত ১১ অক্টোবর বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের ১৬তম ব্যাচের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র অমিত ও ম্যাকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৭তম ব্যাবের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র তোহার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিল আদালত।

ওই রিমান্ড শেষে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর ডিবির লালবাগ জোনাল টিমের পুলিশ ইন্সপেক্টর মো. ওয়াহিদুজ্জামান আজ অমিতের সাত দিনের রিমান্ড এবং তোহাকে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করেন।

অমিতের ফের রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, অমিত সাহা ঘটনার পরিকল্পনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত। অন্য আসামিরা যে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন, সেখানে তার নাম এসেছে। তাই মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে, অন্যান্য আসামিদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের জন্য অমিতের আরও সাত দিনের রিমান্ড প্রয়োজন।

শুনানিকালে অমিত সাহার পক্ষে অ্যাডকোকেট মঞ্জুরুল আলম মঞ্জু রিমান্ড বাতিল ও  জামিনের আবেদন করে বলেন, অমিত সাহা সম্পূর্ণ নির্দোষ। এজাহারে তার নাম নেই, ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল না। সে পূজার ছুটিতে বাড়িতে ছিল। এর আগে তাকে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাই রিমান্ড নামঞ্জুর করে জামিন মঞ্জুর করা প্রয়োজন।

রাষ্ট্রপক্ষে পুলিশের জিআরও এসআই মাজহারুল ইসলাম জামিন আবেদনের বিরোধিতা করেন।

আর আসামি তোহা ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন মর্মে তার জামিন আবেদন করেন অ্যাডভোকেট আইয়ুব হোসেন।

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত অমিত সাহার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আর তোহার জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

রিমান্ড শুনানির আগে অমিত সাহা সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘ঘটনার দিন আমি সেখানে ছিলাম না। রাত দেড়টায় খবর পাই। মিথ্যাভাবে ফেঁসে গেলাম।’ এরপর তাকে অঝোরে কাঁদতে দেখা যায়। কেন কাঁদছেন এ প্রশ্ন করা হলে সেও ‘একজন মানুষ’ বলে উত্তর দেন।

এ মামলায় ছয়জন আসামি হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা হলেন,  বুয়েট ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মো. অনিক সরকার, উপ-সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক ইফতি মোশাররেফ সকাল, ক্রীড়া সম্পাদক মো. মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন, মো. মনিরুজ্জামান মনির ও শিক্ষার্থী মো. মুজাহিদুর রহমান।

মামলাটিতে রিমান্ড শেষে কারাগরে রয়েছেন বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহতামিম ফুয়াদ, কর্মী মুনতাসির আল জেমি, গ্রন্থ ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক ইসাতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির, আকাশ হোসেন ও মিজানুর রহমান। 

রিমান্ডে রয়েছেন, বুয়েটের শিক্ষার্থী শামীম বিল্লাহ, মুয়াজ ওরফে আবু হুরায়রা, সাসছুল আরেফিন রাফাত ও এএসএম নাজমুস সাদাত।

বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭তম ব্যাচ) ছাত্র আবরার ফাহাদকে গত ৬ অক্টোবর শেরেবাংলা হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেন আসামিরা। এ ঘটনায় তার বাবা বরকত উল্লাহ ১৯ জনকে আসামি করে গত ৭ অক্টোবর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

(ঢাকাটাইমস/১৭অক্টোবর/মোআ)