আসামে বন্দিশালায় নিহত ২৬

প্রকাশ | ১৮ অক্টোবর ২০১৯, ১৭:১০ | আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৯, ১৮:৫১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আসাম প্রদেশের জাতীয় নাগরিক পঞ্জি বা এনআরসি তালিকা থেকে বাদ পড়াদের জন্য তৈরি বন্দিশালায় ২৬ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে প্রদেশটিতে বিজেপির গত তিন বছরের শাসনামলেই ২৪ জন মারা যায়। কিন্তু রাজ্য সরকারের দাবি অসুস্থতাজনিত কারণে সবাই মারা গেছে।

চলতি বছর আসামের চূড়ান্ত জাতীয় নাগরিক পঞ্জি বা এনআরসি তালিকা প্রকাশ করা হয়। ওই চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ পড়ে ১৯ লাখ মানুষ। এনআরসি তালিকা থেকে বাদ পড়াদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

২০১৮ সালের জানুয়ারিতে এনআরসি এর হালনাগাদ তালিকার প্রথম খসড়া প্রকাশিত হওয়ার পর সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। ‘সিটিজেন ফর জাস্টিস অ্যান্ড পিস’ সংস্থার সংগঠক জমশের আলি তালিকা প্রকাশের পর ৫১ জনের আত্মহত্যার তালিকা দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, প্রত্যেকেই নাগরিকত্ব হারানোর ভয় থেকে মানসিক আঘাত ও চাপের মধ্যে ছিলেন। 

বন্দিশালায় নিহতদের  মৃত্যু সম্পর্কে রাজ্যের মানবাধিকার কর্মীদের দাবি, সাধারণ মানুষকে বিদেশি পরিচয়ে খুন হচ্ছে। 

বন্দিশালায় নিহতদের মধ্যে ৪৫ দিনের শিশু থেকে শুরু করে ৮৬ বছরের বৃদ্ধও রয়েছেন। আসামে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি বা এনআরসি তালিকা প্রকাশের আগে তাদের আটক করা হয়েছিল। আশক্সক্ষা করা হচ্ছে, নিহতের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাবে। 

রাজ্যের মোট ছয়টি বন্দিশালা ক্যাম্পের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে তেজপুর ও গোয়ালপাড়া বন্দিশালা। দুটি বন্দিশালাতে মোট ২০ জন মারা গেছেন। শিলচর বন্দিশালায় ৩জন, কোকরাঝাড়ে ২জন, জোরহাট বন্দিশালায় ১জন নিহত হয়েছেন। 

মানবাধিকার কর্মীদের দাবি, কয়েকটি মৃত্যুর ঘটনার সঙ্গে কারারক্ষীদের নির্যাতন, খুন ও রহস্য এর অভিযোগ উঠেছে। বন্দিশালাগুলোতে প্রতিনিয়ত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে। কারাগারগুলির অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের পাশাপাশি বিভিন্ন গুরুতর অপরাধে আটক আসামের বন্দিদের ওপর নির্যাতনের কারণেই মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। 

মানবাধিকার কর্মী সাধনবাবুর মতে, বিদেশি ট্রাইব্যুনালগুলি তৈরিই হয়েছে মানুষকে বিদেশি হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য। আর বিদেশি বলে মানুষকে জেলের ভেতরে খুন করা হচ্ছে। হিন্দু বা মুসলিম বলে কোনও কথা নেই। দেশ থেকে বাঙালিদের বিতাড়নের জন্যই এই পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

গত মাসে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইর্য়ক টাইমস এর প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকার ভারতীয় বলতে নতুন সংজ্ঞা নির্ধারণ করার চেষ্টা করছে। এ কারণে সরকার কট্টর হিন্দু জাতীয়তাবাদকে সামনে আনছে। এছাড়া, মোদি বিপজ্জনক খেলা খেলছে। এ কারণে দেশটির হাজার বছরের ধর্মীয় বহুত্ববাদের চেতনা নষ্ট হতে পারে। ভারতের আসামের কথিত অবৈধ অভিবাসীর জন্য বিশাল বন্দিশালা নির্মাণের পরিকল্পনা করছে দিল্লি।

ঢাকাটাইমস/১৮অক্টোবর/আরআর