নদী বাঁচাতে করতোয়ায় নৌকাবাইচ

প্রকাশ | ১৮ অক্টোবর ২০১৯, ২১:২০ | আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৯, ২১:২৬

বগুড়া প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

বগুড়ার মৃতপ্রায় করতোয়া নদীকে বাঁচাতে জেলা পুলিশের উদ্যোগে নৌকা বাইচের আয়োজন করা হয়েছিল শুক্রবার বিকাল ৩টায়। কমিউনিটি পুলিশিং ডে-২০১৯ উপলক্ষে বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঁঞা সচেতনতামূলক এই নৌকাবাইচের উদ্যোগ নেন। এতে সহযোগিতা করেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট বগুড়া। বগুড়ার এসপি ঘাট থেকে বেজোড়া ঘাট প্রায় দুই কিলোমিটার পর্যন্ত নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা হয়।

বগুড়া শহরের বুক চিরে বয়ে যাওয়া মৃতপ্রায় করতোয়ার বুকে নৌকাবাইচে ছয়টি নৌকা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। এগুলো হলো- বগুড়ার গাবতলী উপজেলার পারানি পাড়ার বাবু মাঝির নৌকা ‘আল্লাহ ভরসা’, আজিজার রহমান মাঝির ‘দেগুন’, হরারদীঘি গ্রামের আমিনুরের ‘পঙ্খীরাজ’, নাংলু গ্রামের ইবনে ইউসুফ সৌদের ‘নৌ রাজ’, নশিপুরের ফলজলুর রহমানের ‘তিনবন্ধু’ এবং ইটালি গ্রামের আজিজর রহমানের ‘আমিন হক’। নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা দুটি পর্বে অনুষ্ঠিত হয়। 

দুই দল করে প্রতিযোগী পর্যায়ক্রমে আল্লাহ ভরসা-দ্বেগুন, পঙ্খিরাজ- নৌ রাজ এবং তিন বন্ধু- আমিন এসপি ঘাট থেকে বেজোড়া ঘাট পর্যন্ত যায়। প্রথম পর্বের প্রতিযোগিতায় আল্লাহ ভরসা, নৌ রাজ এবং আমিন হক বিজয়ী হয়। পরবর্তী এবং চূড়ান্ত পর্বে বিজয়ী এই তিন দলের মাঝেই প্রতিযোগিতা হওয়ার কথা থাকলেও আমিন হকের নৌকা ছোট হওয়ায় তারা পরবর্তী পর্বে অংশগ্রহণ করেনি। ফলে পরবর্তী প্রতিযোগিতা শুধু আল্লাহ ভরসা এবং নৌ রাজের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়। এ পর্বে আল্লাহ ভরসা বিজয়ী হয়।

নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার অর্জন করে নৌ রাজ এবং তৃতীয় আমিন হক। প্রতিযোগিতায় বিজয়ী দলকে একটি ষাড় এবং রানার্সআপদের একটি করে খাসি দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়। 
নৌকাবাইচ চলাকালে এসপি ব্রিজ এবং বেজোড়া ব্রিজসহ নদীর আশপাশে দর্শকদের উপচে পড়াভীড় চোখে পড়ে।

নৌকাবাইচ দেখতে আসা আব্দুল আওয়াল ঢাকা টাইমসকে জানালেন, বাংলাদেশের লোক সংস্কৃতির অংশ নৌকা বাইচ। এটি হারিয়ে গেছে। সত্য কথা বলতে কি, নৌকাবাইচ সরাসরি এবারই আমার প্রথম দেখতে আসা। এর আগে টেলিভিশনে এবং পত্রিকায় ছবি দেখেছি। অনেক ইচ্ছে ছিল, সরাসরি নৌকাবাইচ দেখার। সাধ মিটেছে। খুব ভাল লাগছে। 

জেলা পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঁঞা ঢাকা টাইমসকে জানান, বাড়তি আনন্দ যোগ করতে এবং করতোয়া নদীকে বাঁচাতে সচেতনতামূলক আজকের এই নৌকাবাইচ। করতোয়া নদীকে রক্ষার দায়িত্ব সবার। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি করতোয়া নদীর নাব্য রক্ষায় কমিউনিটি পুলিশও কাজ করবে। নদীকে দূষণমুক্ত রাখতে তিনি করতোয়ায় ময়লা আবর্জনা না ফেলার জন্য আহ্বান জানান তিনি। 

জেলা পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঁঞার সভাপতিত্বে নৌকাবাইচ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন, পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল, পদোন্নতিপ্রাপ্ত মোকবুল হোসেন, পদোন্নতিপ্রাপ্ত আব্দুল জলিল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আবু সুফিয়ান শফিক, কমিউনিটি পুলিশ বগুড়ার সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক লালু, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি তৌফিক হাসান ময়না, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসএম বদিউজ্জামান, সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রেজাউল করিম, বগুড়া ডিবির অফিসার ইনচার্জ আসলাম আলী,

শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজিম উদ্দিন, বগুড়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশ বিশেষ শাখার পুলিশ পরিদর্শক আশিক ইকবালসহ আরো অনেকে। 
পুরো অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বগুড়া পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ শাহাদাৎ হোসেন ঝুনু।

(ঢাকাটাইমস/১৮অক্টোবর/এলএ)