যুবলীগের দায়িত্ব নিতে চেয়ে সমালোচনায় ভিসি মীজান

প্রকাশ | ১৯ অক্টোবর ২০১৯, ১৬:৪৬ | আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০১৯, ১৬:৫৯

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

উপাচার্যের পদ ছেড়ে যুবলীগ চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিতে চেয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) উপাচার্য মীজানুর রহমান। ভিসি পদের চেয়ে যুবলীগের চেয়ারম্যান পদকে প্রাধান্য দেয়ায় তাকে নিয়ে তোলপাড় চলছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। অনেকে ‘ভিসির পদ বড় না যুবলীগের সভাপতি পদ?- এমন প্রশ্নও তুলছেন। আবার অনেকে ফেসবুকে তার পক্ষেও অবস্থান নিয়েছেন।

টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ এখন অনেকটা বেকায়দায়। সংগঠনটির অনেক নেতাকর্মীর কর্মকাণ্ড নিয়ে বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে নেতিবাচক খবর প্রচারিত হলেও সবচেয়ে বেশি সমালোচিত হয় ক্যাসিনোকা- নিয়ে।

যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কারণেই সংগঠনটিকে এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে বলে অনেকেই মনে করছেন। ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় কাউন্সিলেরও তারিখ ঘোষণা হয়েছে। দলের জন্য ত্যাগীদের দিয়ে নতুন নেতৃত্ব আনার দাবি নেতাকর্মীদের। কেউ আবার বয়সসীমাও বেঁধে দেয়ার কথা বলছেন।

এমন অবস্থার মধ্যে টালমাটাল যুবলীগের ভাবমূর্তি ফেরাতে হাল ধরতে রাজি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও যুবলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ড. মীজানুর রহমান। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে এই দায়িত্ব দিলে তিনি ভিসি পদ ছাড়তেও প্রস্তুত বলে জানান।

আগামী ২৩ নভেম্বর যুবলীগের সম্মেলনকে সামনে রেখে সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টক শোতে এই আগ্রহ প্রকাশ করেন জগন্নাথ ভিসি। তবে আসন্ন কাউন্সিলে নিজে থেকে কোনো পদের প্রার্থী হবেন না বলে জানিয়েছেন তিনি।

জগন্নাথের ভিসি বলেন, ‘যুবলীগ নিয়ে সারাদেশে সমালোচনা শুরু হওয়ার পর অনেক নেতাকর্মী আমাকে দায়িত্ব নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন। সেই কারণে আমি বলছি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যখন আমাকে যেই দায়িত্ব দিয়েছেন তা আমি সঠিকভাবে পালন করেছি। যুবলীগের ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনতে নেত্রী আমাকে যুবলীগের দায়িত্ব দিলে আমি উপাচার্য পদ ছেড়ে দিয়ে দায়িত্ব নেব।’

টক শোতে কথা প্রসঙ্গে মীজানুর রহমান বলেন, ‘আমি উপাচার্য হওয়ার পর তাদের (যুবলীগের) কোনো মিটিংয়ে যাইনি। আমাকে যদি বলা হয়, যুবলীগের দায়িত্ব নিতে পারবেন কি না, আমি সঙ্গে সঙ্গে চাকরি ছেড়ে দিয়ে সংগঠনের দায়িত্ব নেবো। এটা এত ভালোবাসার একটা সংগঠন আমি উপাচার্যশিপ ছেড়ে দিতে রাজি আছি।’

জবি ভিসির এমন ইচ্ছার কথা জানার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে নিয়ে চলছে অনেকে আলোচনা-সমালোচনা।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অনেকে সমালোচনা করছেন তার এই অভিপ্রায়ের। তবে কেউ আবার এতে দোষের কিছু দেখছেন না। কারণ তিনি এখন যুবলীগের কেন্দ্রীয় পদেই আছেন।

মনিরুল ইসলাম নামে একজন লিখেছেন, ‘এদেরকে আর কোনো কাজ দেয়া না? পাগল ছাগল সব এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বানাতে হবে?’

প্রবাসী সাংবাদিক শকগাত আলী সাগর লিখেছেন, ‘মিজান সাহেবের আগ্রহের জায়গা হচ্ছে যুবলীগ। তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর বানানো হয়েছিল। তিনি বলেছেন যুবলীগ তার প্রাণের সংগঠন। যুবলীগের জন্য তিনি অনেক কষ্ট করেছেন। তিনি কি কখনো বলেছেন- জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় তার প্রাণের প্রতিষ্ঠান? মনে হয় না।’

তিনি বলেন, ‘আমি বরং মিজান সাহেবকে ধন্যবাদ দেব। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভাইস চ্যান্সেলরদের আকাঙক্ষার, যোগ্যতার জায়গাটা তিনি পরিষ্কার করে দিয়েছেন। জগন্নাথের ভিসিকে দ্রুত রাজনৈতিক দলে ডেপুটেশনে পাঠানো হোক।’

এস এম মুনসুর নামের একজন লিখেছেন, ‘স্যার যুবলীগের ১ নাম্বর  প্রেসিডিয়াম মেম্বার। তাই এখন চেয়ারম্যান হওয়ার স্বপ্ন দেখতেই পারেন। ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে চেয়ারম্যান হবেন ভালো কথা, কিন্তু ভাবমূর্তি সংকটের দায় কী নেবেন না? নিশ্চয় ভিসি পদের চেয়ে যুবলীগ চেয়ারম্যানের পদ অধিক লাভজনক।’

(ঢাকাটাইমস/১৯অক্টোবর/বিইউ/জেবি)