ঢাবি ছাত্রলীগের লাগাম টানুন, প্রশাসনকে ছাত্রদল

প্রকাশ | ২০ অক্টোবর ২০১৯, ১৯:৫৯

ঢা‌বি প্র‌তি‌নি‌ধি, ঢাকাটাইমস

মধুর ক্যান্টিনে নেতাকর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের লাগাম টেনে ধরতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ছাত্রদল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি আল মেহেদী হাসান তালুকদার বলেন, নয়ত আবরার হত্যাকাণ্ডের মতো আরেকটি ঘটনা ঘটিয়ে ফেলবে ছাত্রলীগ।

রবিবার দুপুরে ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয়ে বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

মেহেদী হাসান বলেন, বু‌য়েট ছাত্র আবরার‌কে তারা হত্যা করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যত কলঙ্ক তারা সংগঠিত করেছে সেই ধারা থেকে ছাত্রলীগ এখনো বের হয়ে আসতে পারে নাই। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলবো এখনো সময় আছে। তাদের লাগাম টেনে ধরুন। তা না হলে আবরারের মত হত্যাকাণ্ড এখানেও ঘটতে পারে। তখন সেটা খুবই দুঃখজনক হবে। 

আল মেহেদী বলেন, আজ সকালে আমরা এখান থে‌কে সংবাদ সম্মেলন করে বের হওয়ার পরই ডিবির ক‌য়েক‌টি টিম আমাদের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে প্রায় হাতকড়া পরিয়ে ফেলেছি‌লো। পরে আমরা সেটা প্রতিহত করেছি। এ সময় তিনি প্রশ্ন রাখেন যেখানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উপস্থিত নেই সেখানে কিভাবে পুলিশ প্রশাসন এসে শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার করতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় এসে সাদা পোশাকে শিক্ষার্থীদের তুলে নিয়ে যাবে এটা কিন্তু অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক ঘটনা। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সেজন্য তারা  বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

মেহেদী অভিযোগ করে বলেন, ‘মধুতে গে‌লে আমরা সেখানে চেয়ার টে‌বিল পাই না। ছাত্রলীগ সব দখল ক‌রে নেয়।’ মধুর ক্যান্টিন শুধু ছাত্রলীগের কিনা সে প্রশ্নও রা‌খেন তি‌নি।

তিনি ব‌লেন, আজকে মধুর ক্যান্টিনে আমাদের নারীনেত্রীদের গায়ে হাত দেওয়া হয়েছে। তাদের শ্লীলতাহানি করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে তারা ঠিক কিভাবে এ‌টি করতে পারে আমা‌দের বু‌ঝে আসে না।

সংবাদ স‌ম্মেলনে এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান বলেন, আজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর বানিয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে সহাবস্থান নিশ্চিত করে আমাদের ছাত্রদের নিয়ে কাজ করতে হবে কিন্তু সে জায়গায় আমরা বারবার বাধাগ্রস্ত হচ্ছি ছাত্রলীগের দ্বারা ।

তিন‌ি ব‌লেন, আজকের মতো আগেও আমা‌দের উপর হামলা করা হ‌য়ে‌ছে। আমরা তখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি স্মারকলিপি দিয়েছি। কিন্তু তারা এ ব্যাপা‌রে কোন পদ‌ক্ষেপ নেয়নি। যদি তখন কোনো পদক্ষেপ নেয়া হতো তাহলে আজকের এই ঘটনা ঘটত না।  

‘আমরা বিশ্বাস করি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মুক্তমনা চর্চা এবং গণতান্ত্রিক চর্চার সর্বোচ্চ স্থান। আর যারা শিক্ষক রয়েছেন আমরা মনে করি আমরা সবাই তাদের সন্তান তুল্য। সেই জায়গা থেকে আমাদের একটা বিশ্বাস থাকে যে তারা সবাইকে সমান চোখে দেখবেন। দুঃখজনক ব্যাপার তারা পক্ষপাতমূলক আচরণ করছেন এটা খুবই দুঃখজনক ব্যাপার। 

সংবাদ সম্মেলনে ডাকসু নির্বাচনে কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়া বিষয়ক সম্পাদক পদপ্রার্থী কানেতা ইয়ালামলাম সহ বিশ্ববিদ্যালয় এবং হল শাখার অনেক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। 

সকালে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা মধুর ক্যান্টিনে উপস্থিত হলে সেখানে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি ও ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলের নেতৃত্বে ছাত্রদলের উপর হামলা করা হয়। এতে ছাত্রদলের ৯ জন নেতাকর্মী আহত হন। ছাত্রদলের অভিযোগ এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস এর অনুসারীরাও জড়িত বলে জানা গেছে।

ঢাকাটাইমস/২০অক্টোবর/ইএস