দুই মামলা দিয়ে রাজীবকে পুলিশে দিল র্যাব
প্রকাশ | ২০ অক্টোবর ২০১৯, ২০:১৫ | আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৯, ২০:১৯
অস্ত্র ও মাদকসহ গ্রেপ্তার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সদ্য বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা তারেকুজ্জামান রাজীবকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে র্যাব। অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা করা হয়েছে।
রবিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ভাটারা থানায় রাজীবকে হস্তান্তর করে র্যাব-১। গত শনিবার ‘সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্বের’ অভিযোগে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করার পর রাজীবকে সঙ্গে নিয়ে মোহাম্মদপুরে তার বাসা ও অফিসে র্যাবের অভিযান চলে।
ওই অভিযানে আগ্নেয়াস্ত্র ও মদ উদ্ধারের পাশাপাশি তার পাসপোর্ট জব্দ করা হয়। বাসা থেকে ব্র্যাক ব্যাংকের একটি অ্যাকাউন্টে একদিনে (তিনটি চেকের মাধ্যমে) তিনি পাঁচ কোটি টাকা জমা দিয়েছেন এমন কাগজ জব্দ করেন র্যাব সদস্যরা। এসময় রাজীবের সহযোগী (পিও) সাদেককে ৩ মাসের কারাদণ্ড দেয় র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
গত মাসের মাঝামাঝি ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরুর পর যুবলীগের অনেক নেতার মত গা ঢাকা দিয়েছিলেন রাজীব। গ্রেপ্তারের পর শনিবার রাতেই তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করার কথা জানিয়েছে যুবলীগ।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যমে শাখার সহকারী পরিচালক মিজানুর রহমান ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘রাজীবের বিরুদ্ধে র্যাব বাদী হয়ে ভাটারা থানায় দুটি মামলা করা হয়েছে। এরমধ্যে একটি অস্ত্র আইনে আরেকটি মাদক আইনে।’
র্যাব সূত্র জানায়, ১৩ অক্টোবর থেকে রাজীব বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় তার বন্ধুর বাসায় আত্মগোপনে ছিলেন। অভিযানের সময় তার বন্ধু দেশের বাইরে থাকায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি। জমিদখল, সন্ত্রাসবাদ, চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্বের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে রাজীবকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে অন্যান্য যেসব অভিযোগ রয়েছে, সেগুলো নিয়েও তদন্ত চলছে।
এছাড়া র্যাবের পক্ষ থেকে রাজীবের অর্জিত আয়ের উৎস মুদ্রা পাচার হয়েছে কি-না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অবৈধভাবে সম্পদ কোথায় খরচ করেছেন এবং মানিলন্ডারিং ও মুদ্রা পাচারের কোনো বিষয় থাকলে তার বিরুদ্ধে ‘মানিলন্ডারিং মামলা’ আইনেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কাউন্সিলর হয়ে রাজীব গত কয়েক বছরে হঠাৎ করেই শত কোটি টাকার মালিক বনে যান। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, দখলবাজি, টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসা, ডিশ ব্যবসা নিয়ন্ত্রণসহ নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে।
ছয় বছর আগে মোহাম্মদপুরের মোহাম্মদীয়া হাউজিং সোসাইটির একটি বাড়ির নিচতলার গ্যারেজের পাশেই ছোট এক কক্ষে সস্ত্রীক ভাড়া থাকতেন তিনি। ভাড়া দিতেন মাসে ছয় হাজার টাকা। তখনো তিনি কোনো ব্যবসা-বাণিজ্য করতেন না। এখনো করেন না। কিন্তু পরিবার নিয়ে থাকেন একই হাউজিং এলাকায় নিজের ডুপ্লেক্স বাড়িতে। আগে একটি মোটরসাইকেল নিয়ে চলাফেরা করলেও এখন কোটি টাকা দামের বিলাসবহুল গাড়িতে চড়েন। যার মধ্যে রয়েছে মার্সিডিজ, বিএমডব্লিউ, ক্রাউন প্রাডো, ল্যান্ডক্রুজার ভি-৮, বিএমডব্লিউ স্পোর্টস কারও।
(ঢাকাটাইমস/২০অক্টোবর/এসএস/ডিএম)