প্রসবকালে লাখে ১৬৯ জন মায়ের মৃত্যু

প্রকাশ | ২১ অক্টোবর ২০১৯, ০০:১৭

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

বাংলাদেশে এক লাখ জীবিত শিশুর জন্ম দিতে ১৬৯ জন মায়ের মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে মহাপরিচালক কাজী আ খ ম মহিউল ইসলাম।

পরিবার পরিকল্পনা নিয়ে চতুর্থ জাতীয় যুব সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে মহাপরিচালক কাজী আ খ ম মহিউল ইসলাম স্বাস্থ্য খাতের সরকারকের বিভিন্ন রকমের পদক্ষেপ তুলে ধরে বলেন, বাল্য বিবাহ মাতৃমৃত্যুর অন্যতম কারণ। আমাদের বাল্যবিবাহ রোধ করতে সবাইকে এক যোগে কাজ করতে হবে।  

পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ে সচেতনতা ও কর্মকাণ্ডের অংশগ্রহণ বৃদ্ধির লক্ষ্যে দুই দিনব্যাপী  চতুর্থ জাতীয় সম্মেলন যুব সম্মেলন -২০১৯ আয়োজন করে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সিরাক-বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ ইয়ুথ হেলথ একশন  নেটওয়ার্ক (বিহান)। রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে  রবিবার সকালে  এ সম্মেলন শুরু হয়।  উদ্বোধনি অনুষ্ঠানে উপস্তিত ছিলেন, ইউএনএফপিএ বাংলাদেশ কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ ডা. আসা টরকেলসন।

দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলনে অংশ গ্রহণ করছে সারাদেশ থেকে আসা প্রায় ৪০০ কিশোর- কিশোরী ও তরুণ।

পরিকল্পনা অধিদপ্তর এর মহাপরিচালক বলেন, সম্মেলনটি থেকে কেবল পরিবার পরিকল্পনাই নয় নয়, সেই সাথে তরুণদের স্বাস্থ্য অধিকার, নেতৃত্ব, নেটওয়ার্কিং, ইত্যাদি বিষয়েও তরুণরা জ্ঞান লাভ করতে পারে। তাছাড়া এ অনুষ্ঠানটি তরুণদের জন্য একটি মুক্তমঞ্চ যেখানে তারা তাদের প্রজনন ও মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত যেকোন তথ্য অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অভিজ্ঞ পরামর্শকদের কাছ থেকে জেনে নিতে পারে। তিনি বলেন, তরুণদের মতামতকে যেন গুরুত্ব দেয়া হয় এ জন্য জেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসে বলে দেয়া হয়েছে।

কাজী আ খ ম মহিউল ইসলাম বলেন, উন্নত জাতি হিসেবে গড়ে তুলতে হলে অবশ্যই মাতৃমৃত্যু ও শিশু মৃত্যুরহার শূণ্যের কোটায় নামিয়ে আনতে হবে। আর এর জন্য সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে।

সিরাক-বাংলাদেশ এর নির্বাহী পরিচালক এবং সম্মেলনের সেক্রেটারি জেনারেল এস এম সৈকত বলেন, বাংলাদেশের তরুণ- তরুণীদের বিদ্যমান যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা এবং অধিকার নিয়ে এখনই ভাবার সময়। যুব সমাজ আগামির সম্পদ হতে পারে যদি তাদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করা যায়। তিনি বলেন, বিভিন্ন পরিসংখ্যানে দেখা যায় যুবদের মাঝে  প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ক জ্ঞান খুবই সামান্য। এতে করে অপরিকল্পিত গর্ভধারণ, মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যু হার বেরে চলেছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্লানিং এ্যান্ড ডেভলপমেন্ট উইংয়ের সহোকারি ডিরেক্টর দিল আফরোজ বিনতেই আছিয়া বলেন ৫০টি মাদ্রাসা সহ ৩৫০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জেনারেশন ব্রেক থ্রু প্রকল্পের আওতায় যৌন শিক্ষা দেয়া হচ্ছে । এর আওতায় শিক্ষার্থীদের অভিভাককদেরও এ বিষয় বোঝানো হচ্ছে। তিনি বলেন, বাস্তবতা হলো অভিবাবকরা যৌনস্বাস্থ্য সম্পর্কে তাদের সন্তানদের সঙ্গে আলোচনা করতে লজ্জা পায়।     

উদ্বোধনিয় অনুষ্টানে আরও উপস্তিত ছিলেন, পিপিডি এর ডাইরেক্টর  প্রোগ্রাম ডঃ নজরুল ইসলাম, ডিএফআইডি এর হিউম্যান ডেভলপমেনট টিম লিডার ফাহমিদা শবনম ও উইশ টু একশন এর বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড ডাঃ নাদিরা সুলতানা। উদ্বোধনী মূলপ্রবন্ধ বক্তব্য রাখেন, ইউএনএফপিএ বাংলাদেশ এর প্রোগ্রাম স্পেশালিষ্ট ডাঃ আবু সায়েদ মোহাম্মাদ হাসান।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বাংলাদেশে প্রায় ৫ লাখ তরুণ রয়েছে যাদের বয়স (১০-২৪) এবং তারা দেশের মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় ৩০ শতাংশ । বিডি এইচ এস ২০১৪ এর মতে, জন্ম নিরোধ ও যৌনরোগ যেমন এইচ আই ভি, বিষয়ে মাত্র ৩৪ শতাংশ যুবরা জানে। দুই দিন ব্যাপি এ সম্মেলন শেষ হবে সোমবার । সম্মেলনে তরুণ তরুণীদের মাঝে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য  অধিকার সহ পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক তথ্য দেয়া হবে। স্বাস্থ্য সেবায় আমূল অবদান রাখার জন্য আজীবন সম্মাননা দেয়া হয় লালমনিরহাটের জহিরন  বেওয়াকে।

(ঢাকাটাইমস/২১ অক্টোবর /জেআর/ইএস)