আব্দুর রৌফ চৌধুরীর ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২১ অক্টোবর ২০১৯, ১০:৫৮

মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্য, আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী আব্দুর রৌফ চৌধুরীর ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ (সোমবার)।

১৯৩৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলার সেতাবগঞ্জ পৌরসভাধীন ধনতলা চৌধুরী পরিবারে জন্ম নেন তিনি। মারা যান ২০০৭ সালের ২১ অক্টোবর।

আব্দুর রৌফ চৌধুরী ছিলেন বৃহত্তর দিনাজপুরের (দিনাজপুর, পঞ্চগড়, ঠাঁকুরগাঁও) রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়াঙ্গনের সুপরিচিত ব্যক্তিত্ব। তার একমাত্র ছেলে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী, দিনাজপুর-২ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।

মরহুম আব্দুর রৌফ চৌধুরীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্থানীয় আওয়ামী লীগ দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। কর্মসূচি অনুযায়ী সকাল আটটায় দলীয় কার্যালয়ে জাতীয়, দলীয় এবং কালোপতাকা উত্তোলন করা হবে।

অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে কালো ব্যাচ ধারণ করে সকাল নয়টায় দিনাজপুরে মরহুমের সমাধিতে শ্রদ্ধাজ্ঞলি অর্পণ, সকাল ১০টায় মরহুমের সমাধিস্থল প্রাঙ্গণে দোয়া-মাহফিল। এছাড়াও ২২ শে অক্টোবর আব্দুর রৌফ চৌধুরী অডিটোরিয়ামে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হবে।

অপরদিকে আব্দুর রৌফ চৌধুরী ফাউন্ডেশন মরহুমের সমাধিতে সকাল নয়টায় শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ, সকাল ১০টায় মরহুমের সমাধিস্থল প্রাঙ্গণে দোয়া-মাহফিল ও সকাল ১১টায় সেতাবগঞ্জ ডাকবাংলো প্রাঙ্গণে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করেছে।

এছাড়া রৌফ চৌধুরীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার কবরে স্থানীয় বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন শ্রদ্ধা নিবেদন করবে। পারিবারিকভাবে কোরআনখানি ও মিলাদের আয়োজন করা হয়েছে।

আব্দুর রৌফ চৌধুরী ১৯৫২ সালে সিরাজগঞ্জ থেকে মেট্টিকুলেশন, এরপর ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি ও দিনাজপুর সুরেন্দ্রনাথ কলেজ থেকে বিএ পাস করেন। সিরাজগঞ্জে পড়ার সময়েই তিনি ভাষা আন্দোলনে একজন সক্রিয় সংগঠক ছিলেন এবং এজন্য তাকে কারাবরণ করতে হয়। পরে এইচএসসি পরীক্ষা দেন ঢাকা কলেজ থেকে। সেখানে পড়াবস্থায় বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে দিনাজপুরে ফিরে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করেন।

বৃহত্তর দিনাজপুর (দিনাজপুর-ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড়) জেলার ছাত্রলীগ ও কৃষকলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি সুরেন্দ্রনাথ কলেজের ছাত্র সংসদের নেতৃত্ব দেন। ছিলেন কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতিও। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। দীর্ঘদিন পালন করেছেন দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব। বাংলাদেশ সমবায় ফেডারেশন ও বিআরডিবির প্রতিষ্ঠায়ও তার ভূমিকা ছিল অনন্য।

১৯৬২ সালে হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলন, বঙ্গবন্ধুর প্রণীত ছয় দফা আন্দোলন পরবর্তীতে ছাত্র সমাজের ১১ দফাসহ আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনে রৌফ চৌধুরী ছিলেন প্রথম কাতারে। স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন পূর্বাঞ্চলীয় জোনে মুজিব সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ ও কামরুজ্জামানের দূত হিসেবে তিনি কাজ করেছেন। পঁচাত্তরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ বঙ্গবন্ধু পরিবারকে নির্মমভাবে হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলন এবং পঁচাত্তর পরবর্তী সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলনে রৌফ চৌধুরীর ভূমিকা অসামান্য। যার ফলে তিনি আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার আস্থাভাজন হয়ে ওঠেন।

রৌফ চৌধুরী টানা ১৫ বছর দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। একই সঙ্গে দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। দিনাজপুরে পঁচাত্তর পরবর্তী সামরিক শাসনবিরোধী প্রতিটি আন্দোলনে তার অবদান অসামান্য ছিল।

১৯৮৮ সালে বোচাগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও ১৯৯৬ সালে দিনাজপুর-১ (বীরগঞ্জ-কাহারোল) আসন থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে বাংলাদেশ সরকারের ডাক, তার ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০২ সালে জাতীয় শোক দিবসে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখায় বিএনপি-জামায়াতের হামলায় তিনি গুরুতর আহত হন। পরে অসুস্থাবস্থায় ২০০৭ সালের ২১ অক্টোবর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

ঢাকাটাইমস/২১অক্টোবর/টিএ/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :