শব্দ মুছে দিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সব দৈনিকের নজিরবিহীন প্রতিবাদ

প্রকাশ | ২১ অক্টোবর ২০১৯, ১৬:১৮ | আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৯, ১৬:৫২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

অস্ট্রেলিয়ায় সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করে তৈরি একটি আইনের প্রতিবাদে দেশটির সব সংবাদপত্র প্রথম পাতার শব্দ কালি দিয়ে মুছে দিয়েছে। সোমবারের প্রকাশিত পত্রিকাগুলোর এমন প্রতিবাদ দেখে দেশটির বিভিন্ন অঙ্গনে আলোচনা চলছে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমেও অস্ট্রেলীয় দৈনিক পত্রিকাগুলোর নজিরবিহীন প্রতিবাদের বিষয়টি ফলাও করে জায়গা পেয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ার সাংবাদিকরা বলছেন, ‘জাতীয় নিরাপত্তা আইন’ এর কারণে সংবাদপত্রের কন্ঠ রোধ করা হয়েছে। এ আইনের ফলে অস্ট্রেলিয়ায় ‘গোপনীয়তার সংস্কৃতি’ তৈরি করেছে।

অন্যদিকে আইনটির পক্ষে সাফাই দিয়ে সরকার বলেছে যে তারা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার পক্ষে। তবে কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়।

গত জুনে দেশটির পুলিশ অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং করপোরেশনে (এবিসি) এবং নিউজ কর্প অস্ট্রেলিয়ার এক সাংবাদিকের বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করলে তা নিয়ে কঠোর সমালোচনা হয়। সংবাদমাধ্যমগুলোর ভাষ্য, আইনের অধীনে ওই সাংবাদিকদের বাড়িতে পুলিশ অভিযান পরিচালনা করেছে।

গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলো দাবি করে, দুই জন সাংবাদিকদের মধ্যে একজন যুদ্ধাপরাধের অভিযোগের ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য পেয়েছিল। আরেকটি অভিযোগ ছিল অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকদের ওপর সরকারি সংস্থার গুপ্তচরবৃত্তির চেষ্টার অভিযোগ নিয়ে।

সংবাদপত্রগুলোর ‘রাইট টু নো কোয়ালিশন (জানার অধিকার জোটের) ব্যানারের ক্যাম্পেইনে সমর্থন জানিয়েছে দেশটির বেশ কয়েকটি টেলিভিশন, রেডিও চ্যানেল এবং অনলাইন আউটলেট।

নিউজ কর্প অস্ট্রেলিয়ার নির্বাহী চেয়ারম্যান মাইকেল মিলার হ্যাশ ট্যাগ রাইটটুনো #righttokno) লিখে একটি টুইট করেন। সেখানে ‘দ্য অস্ট্রেলিয়া’ ও ‘দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ’ পত্রিকাও ছিল।

তিনি বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকদের সরকারকে জিজ্ঞাসা করা উচিত যে তারা (সরকার) আমার কাছ থেকে কী লুকাতে চায়? অস্ট্রেলিয়ার সরকারের ক্রমবর্ধমান গোপনীয়তার বিরুদ্ধে কেন আমাকে দাঁড়াতে হচ্ছে?’

সংবাদপত্রগুলোর মতে, নিরাপত্তাবিষয়ক আইনের কড়াকড়ি আরোপের কারণে দুই দশক ধরে দেশটির অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। জনগণের জানার অধিকারকে খর্ব করা হয়েছে।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ায় গণতন্ত্রে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার গুরুত্ব অনেক। তবে আইনের শাসন ধরে রাখতে হবে। সেটা আমার বা কোনো সাংবাদিক বা যে কারও জন্য প্রযোজ্য হতে পারে।’

গণমাধ্যমের স্বাধীনতাবিষয়ক তদন্তে পাওয়া পর্যালোচনা আগামী বছর দেশটির পার্লামেন্টে উত্থাপনের কথা রয়েছে। এবিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডেভিড অ্যান্ডারসন বলেন, ‘বিশ্বের সবচেয়ে গোপনীয়তাপূর্ণ গণতন্ত্রের দেশ হওয়ার ঝুঁকিতে অস্ট্রেলিয়া।’

ঢাকাটাইমস/২১অক্টোবর/আরআর