দুর্জয়-বাশার-পাইলটদের সংবর্ধনা দেবে ভারত

প্রকাশ | ২২ অক্টোবর ২০১৯, ১০:৫৯

ক্রীড়া ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতীয় টেস্ট দলের অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক হয়েছিল সৌরভ গাঙ্গুলীর। ২০০০ সালে ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামেই শুরু হয়েছিল ভারতীয় ক্রিকেটের নতুন অধ্যায়। অধিনায়ক সৌরভের সঙ্গেই টেস্ট অভিষেক হয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দলেরও। আইসিসির স্বীকৃতি পাওয়ার পরে সেটাই ছিল বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট।

ঐতিহাসিক সেই টেস্টে খেলা ক্রিকেটাররা এখন সোনালি অতীত। সৌরভ এখন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট। আর তাঁর আমলেই এবার ইডেনে প্রথম টেস্ট-দ্বৈরথ ভারত ও বাংলাদেশের। ইডেনে দু’‌দেশের প্রথম টেস্ট-সাক্ষাৎকে তাই স্মরণীয় করে তোলাই লক্ষ্য সৌরভের। কী ভাবছেন তিনি?

সৌরভের ঘোষণা, ‘বাংলাদেশের বোর্ডের সঙ্গে কথা বলব। যাঁরা ভারত-বাংলাদেশ প্রথম টেস্টে খেলেছিলেন, সেই দলের ক্রিকেটারদের সংবর্ধনা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সিএবির। বাংলাদেশের বোর্ড প্রেসিডেন্টকে আমন্ত্রণ জানাব। অনুরোধ করব, ওই দলের সদস্যদের যেন টেস্টের প্রথম দিন আসার অনুমতি দেওয়া হয়।’

সেই ঐতিহাসিক ম্যাচের ভারতীয় দলের সদস্যদেরও আমন্ত্রণ জানাবেন সৌরভ। অধিনায়ক হিসেবে সৌরভের অভিষেক টেস্ট দলের সদস্য ছিলেন কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকার, রাহুল দ্রাবিড়, শিবসুন্দর দাস, এস রমেশ, জহির খান, জাভাগল শ্রীনাথের মতো তারকা। তাঁদের সকলকেই আমন্ত্রণ জানানো হবে। সৌরভ বলেছেন, ‘প্রথম দিনের শেষে দু’দলের সদস্যদের স‌ংবর্ধিত করার কথা ভাবা হচ্ছে।’

ম্যাচের প্রথম দিন বাংলাদেশ ও ভারতের দুই প্রধানমন্ত্রীও উপস্থিত থাকতে পারেন। সোমবার সিএবিতে অ্যাপেক্স কাউন্সিলের বৈঠক শেষে সৌরভ বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তিনি হয়তো ২১ নভেম্বর রাতেই শহরে আসছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।’ ২২ নভেম্বর প্রথম দিনের শেষে তাঁদেরই সংবর্ধনা দেওয়ার কথা প্রথম টেস্ট দলের সদস্যদের। এখানেই চমকের শেষ নয়। ইডেনের সমর্থকেরা টেস্ট বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচ দেখতে পাবেন মাত্র পঞ্চাশ রুপির টিকিটে। ইডেনে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচে বেশি সংখ্যক দর্শক আসার জন্য এই সিদ্ধান্তই নিয়েছে সিএবি।

রাঁচিতে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে মাত্র দেড় হাজার টিকিট বিক্রি হয়েছিল প্রথম দিন। ইডেনে প্রথমবার ভারত-বাংলাদেশ টেস্টে মাঠ যাতে ফাঁকা না থাকে সেদিকে নজর রাখছে সিএবি। আগে ১০০, ১৫০ এবং ২০০ রুপির টিকিটে খেলা দেখা যেত। এখন টিকিটের দাম কমে দাঁড়িয়েছে ৫০, ১০০ এবং ১৫০ রুপি প্রতিদিন। সিজন টিকিটের ব্যবস্থা রাখা হয়নি। প্রতিদিনের টিকিট আলাদা করে কিনতে হবে সমর্থকদের।

পশ্চিমবঙ্গের তরুণ ক্রিকেটারদের সুবিধার কথা ভেবেও অভিনব সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিএবি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সল্টলেক ক্যাম্পাসের মাঠ এবং কল্যাণীর বেঙ্গল ক্রিকেট অ্যাকাডেমির মাঠে আবাসিক শিবির তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিএবি। সোমবার অ্যাপেক্স কাউন্সিলের বৈঠকে ঠিক হয়, একই ছাদের তলায় খেলাধুলার সঙ্গে পড়াশোনার ব্যবস্থাও রাখা হবে। সেই সঙ্গে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সল্টলেক ক্যাম্পাসে বসতে চলেছে ফ্লাডলাইট। যাতে নৈশালোকে অনুশীলনের ব্যবস্থা করা যায়। বোর্ডের দিন-রাতের ম্যাচ পরিচালনা করার কথা ভেবেও এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিএবি।

সিএবি-র প্রেসিডেন্ট হিসেবে সৌরভের শেষ বৈঠক ছিল সোমবারই। শেষবার সিএবি প্রেসিডেন্টের চেয়ারে বসে কেমন লাগল? সৌরভের উত্তর, ‘সবকিছুই ছেড়ে যেতে হয়। আমি ভাল স্মৃতি নিয়েই সিএবি ছেড়ে বেরোচ্ছি।’

কলকাতার সমর্থকদের নজরে এখন সেই বাংলাদেশ-ভারত টেস্ট। ম্যাচটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করাই এখন মূল লক্ষ্য সৌরভের।

২০০০ সালের টেস্টের দুই দল

বাংলাদেশ: নাঈমুর রহমান দুর্জয় (অধিনায়ক), খালেদ মাসুদ পাইলট (উইকেটরক্ষক), শাহরিয়ার হোসেন, মেহরাব হোসেন, হাবিবুল বাশার, আমিনুল ইসলাম, আল শাহরিয়ার, আকরাম খান, মোহাম্মদ রফিক, হাসিবুল হোসেন ও রঞ্জন দাস।

ভারত: সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (অধিনায়ক), সৈয়দ সাবা করিম (উইকেটরক্ষক), রাহুল দ্রাবিড়, শচীন টেন্ডুলকার, শিবসুন্দর দাস, এস রমেশ, মুরালি কার্তিক, সুনীল জোশী, অজিত আগরকর, জাভাগল শ্রীনাথ ও জহির খান।

(ঢাকাটাইমস/২২ অক্টোবর/এসইউএল)