মেননের ব্যাখ্যা পেয়ে করণীয় ঠিক করবে ১৪ দল

প্রকাশ | ২২ অক্টোবর ২০১৯, ১৭:০০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং পরবর্তী উপজেলা ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে  মানুষ ভোট দিতে পারেনি- ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের এই বক্তব্যের ব্যাখ্যা চাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ১৪ দলের সমন্বয়ক মোহাম্মদ নাসিম। এরপর জোটের বৈঠকে করণীয় ঠিক করা হবে।

আজ মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ১৪ দল আয়োজিত ‘বাংলাদেশ-ভারত সমঝোতা স্মারক’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এ কথা বলেন তিনি।

নির্বাচন নিয়ে মননের বক্তব্যে ১৪ দল বিব্রত নন বলে জানান নাসিম। বলেন, ‘১৪ দল কোনো ব্যক্তির নয়, এটা জোটবদ্ধ সংগঠন। এটি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, অসাম্প্রদায়িকতা, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে করা আদর্শিক জোট।’

নাসিম বলেন, নির্বাচন নিয়ে মেননের দেওয়া বক্তব্যের ব্যাখা চাওয়া হবে তার কাছে। এরপর জোটের বৈঠকে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে করণীয় ঠিক করা হবে।’

গত শনিবার বরিশালের অশ্বিনীকুমার টাউন হলে ওয়ার্কার্স পার্টির সম্মেলনে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘২০১৮ সালের নির্বাচনে আমিও নির্বাচিত হয়েছি। তার পরও আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, ওই নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি। এমনকি পরবর্তী সময়ে উপজেলা এবং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও ভোট দিতে পারেনি।’

পরদিন রবিবার অবশ্য তার বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে বিবৃতি দেন মেনন। তাতে তিনি বলেন, তার বক্তব্য সম্পূর্ণ উপস্থাপন না করে অংশবিশেষ উত্থাপন করায় এই বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে।

আজকের গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নেননি মেনন। তবে দলের সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা উপস্থিত ছিলেন। দুপুর ১২টায় শুরু হওয়া এই বৈঠক দুই ঘণ্টার বেশি সময় পর শেষ হয়। বৈঠকে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ১৪ দলের সমন্বয়ক মোহাম্মদ নাসিমসহ প্রায় সব শীর্ষ নেতা উপস্থিত ছিলেন।

মেননের বৈঠকে না আসার বিষয়ে ১৪ দলের সমন্বয়ক মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘তার পার্টির সেক্রেটারি এসেছেন। তিনি কেন আসেননি, তা আমি বলতে পারব না।’

ক্যাসিনো অভিযানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হওয়া ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরীর (সম্রাট) জবানবন্দিতে উঠে এসেছে যে রাশেদ খান মেননকে দেড় কোটি টাকা চাঁদা দেওয়া হয়েছে।

১৪ দলের গোলটেবিল বেঠকে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে আলোচনা হয়। নাসিম বলেন, ‘একটি মহল প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে উদ্দেশ প্রণোদিতভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে। সেই অশুভ মহল দুই দেশের সম্পর্ককে বুঝে না বুঝে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। প্রতিবেশীর সঙ্গে সমস্যা থাকতেই পারে, এর সমাধান হবে কূটনৈতিকভাবে।’

আলোচনায় জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘একটি মহল স্বাধীনতার পর জাতির স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে ভারতের সঙ্গে চুক্তি করা হচ্ছে বলে জিকির তুলে আসছে। তারা বারবার ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু কোনো চুক্তিই বাতিল করেনি। তারা পাকিস্তানের চশমা দিয়ে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ককে দেখছে।’

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান বলেন, ‘ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের এ দেশে আশ্রয় দিয়ে, অস্ত্রের ট্রেনিং দিয়ে, তাদের জন্য দশ ট্রাক অস্ত্র এনে ভারতের কাছে মাফ চেয়েছে। তারা যেকোনো সমস্যাকে আরও বড় সমস্যা তৈরি করে।’

ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বার্থ দেখার পাশাপাশি ভারতের মতো প্রতিবেশীর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ধরে রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী ধন্যবাদ পেতেই পারেন।’

বৈঠকে আরও বক্তব্য দেন প্রফেসর সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, অধ্যাপক এ আরাফাতসহ অন্যান্য শরিক দলের নেতারা।

(ঢাকাটাইমস/২২অক্টোবর/এনআই/মোআ)