‘কালো হীরা’ কাদাকনাথ এখন রাজশাহীতে

প্রকাশ | ২২ অক্টোবর ২০১৯, ২২:১৭

ব্যুরো প্রধান, রাজশাহী

কুচকুচে কালো মুরগি কাদাকনাথ। শুধু পালকই নয়, চামড়া, ডিম, মাংস, হাড়, কলিজা- সবই কালো। কিন্তু এর পুষ্টিগুণ অন্য জাতের মুরগির তুলনায় বহুগুণ বেশি। তাই বিশেষজ্ঞদের কাছে এই মুরগি ‘কালো হীরা’ নামে পরিচিত। ভারতের মধ্যপ্রদেশের এই মুরগি এখন পাওয়া যাচ্ছে রাজশাহীতে।

মহানগরীর উপকণ্ঠ মাসকাটাদীঘি এলাকায় সাংবাদিক সরকার শরীফুল ইসলামের নিজস্ব খামারে এই মুরগি বড় হচ্ছে।

খামারের তত্ত্বাবধায়ক মাসুদুর রহমান সুইট ঢাকাটাইমসকে জানালেন, বছরখানেক আগে খামারে এই মুরগির বাচ্চা আনা হয়। এখন দুই কেজি ওজনের প্রতিটি মুরগি বিক্রি হচ্ছে  ৮০০ থেকে ১০০০ টাকায়। আর বাচ্চা ফোটানোর উপযোগী ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ৩০ টাকা দরে।

তিনি জানান, দেশি মুরগির মতো কাদাকনাথ মুরগিও উন্মুক্ত স্থানে ছেড়ে পালন করা যায়। এর মাংস দেশি, ব্রয়লার, লেয়ার বা ককরেল মুরগির চেয়ে স্বুসাদু এবং নিরাপদ। রোগীদের পথ্য হিসাবেও অনেকে এই মুরগির মাংস এবং ডিম খান। ওষুধি গুণের কারণেই খামারের মালিক এই মুরগির পালন শুরু করেছেন। তবে সেভাবে প্রচার না হওয়ার কারণে আশানুরূপ সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, কিডনি, যৌন দুর্বলতা এমনকি ক্যানসারের মতো জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীদের জন্য কাদাকনাথ মুরগির মাংস এবং ডিম খুব উপকারী। এই মুরগির মাংসে আমিষের পরিমাণ ২৫ শতাংশের বেশি। অথচ অন্যান্য মুরগিতে এর পরিমাণ ২০ শতাংশ।

 

গবেষণায় দেখা গেছে, এই মুরগির মাংসে কোলেস্টরেল মাত্র শূন্য দশমিক ৭৩ থেকে ১ দশমিক ০৫ শতাংশ, যা অন্য মুরগিতে ১৩ থেকে ২৫ শতাংশ। শুধু তাই নয়, এর মাংসে রয়েছে ১৮ ধরনের হরমোন সমৃদ্ধ এমাইনো এসিড যার মধ্যে ৮টি মানবদেহের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এছাড়া কাদাকনাথ মুরগির মাংসে রয়েছে পরিমিত ভিটামিন বি-১, বি-২, বি-৬, বি-১২, সি, ই, নিয়াসিন, প্রোটিন, সামান্য চর্বি, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, লৌহ ও নিকোটিন এসিড। এগুলোর সবই মানবদেহের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আর যারা উচ্চ রক্তচাপে ভোগেন তাদের জন্য এর ডিম খুবই উপকারী। ডিমে খুবই সমান্য পরিমাণে ফ্যাট ও কোলেস্টেরল রয়েছে। কাদাকনাথ মুরগির ডিম মারাত্মক মাথা ব্যথারও নিরাময়ক হিসেবে কাজ করে। আরও নানা উপকারিতা রয়েছে এই ‘কালো হীরা’ মুরগির।

রাজশাহীর সাবেক পশুপালন বিশেষজ্ঞ ডা. আহসান হাবীব বাবু ঢাকা টাইমসকে জানান, সহজলভ্য নয় বলে এই মুরগি রাজশাহীতে এখনও জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি। তবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এটি অত্যন্ত মূল্যবান। যারা শারীরিক নানা সমস্যায় ভোগেন তারা এই মুরগির মাংস খেলে খুব উপকার পাবেন।

ঢাকাটাইমস/২২অক্টোবর/ইএস