বেড়ায় হুড়াসাগরে খাঁচায় মাছ চাষ
পাবনার বেড়ার হুড়াসাগর নদীতে খাঁচায় মাছ চাষ করে আর্থিক সফলতা অর্জন করার পাশাপাশি স্থানীয় মাছের চাহিদা পূরণ করে দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারগুলোতেও সরবরাহ করা হচ্ছে। বর্তমানে এ পদ্ধতিতে অনেকেই মাছ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। বিশেষ করে বেকার যুবকরা কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে এ পদ্ধতিকে বেছে নিচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বেড়ার হুড়াসাগরের একটি বিশাল অংশজুড়ে খাঁচায় মাছ চাষ করছেন মুন্নাফ মোল্লা ও তার দুই ভাগ্নে। তারা ১০০টি খাঁচা তৈরি করে মাছ চাষ করছেন। মনোসেক্স জাতের তেলাপিয়া তিন মাস আগে এখানে আনা হয়েছে। প্রথমে এসব জাতের তেলাপিয়ার পোনা মাছ সিরাজগঞ্জ থেকে কেনা হয়। এরপর সেগুলো পুকুরে একটু বড় করা হয়। তারপর খাঁচায় চাষের উপযুক্ত হলে এখানে আনা হয়। যখন খাঁচায় মাছ ছাড়া হয় সেগুলোর ওজন ছয়-সাতটি মাছে এক কেজি হয়। তবে বিক্রির সময় দুটি মাছেই এক কেজি পূর্ণ হয়। বর্তমানে তারা পাইকারদের কাছে ১১০-১১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। প্রতিটি খাঁচা বাঁশ দিয়ে তৈরি এবং সর্বোচ্চ সাত ফুট গভীর এবং বিশ ফুট চওড়া। প্রতি বস্তা খাদ্যের দাম এক হাজার টাকা। তবে বর্তমানে মাছের খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং পাইকারি বাজারে দাম কমায় লাভের পরিমাণ খুব সামান্য হচ্ছে বলে জানান মুন্নাফ মোল্লা।
তিনি বলেন, খাঁচায় মাছ চাষের প্রধান সমস্যা হলো খাদ্য নষ্ট হওয়া। যে খাদ্য দেয়া হয় তার একটি অংশ নিচে চলে যায় যা খাঁচার মাছের কাজে আসে না। কিন্তু পুকুরে এই একই পরিমাণ খাদ্যে আরও অন্য মাছ চাষ সম্ভব। কারণ ওই স্তরেও অনেক মাছ থাকে। যা খাঁচায় সম্ভব হয় না। আমি এর সমাধান নিয়ে চিন্তা ভাবনা করছি। তবে যদি কেউ নিজেই নিজের এই প্রজেক্টে শ্রম দিয়ে মাছ উৎপাদন করে, তাহলেই লাভের মুখ দেখা সম্ভব। কিন্তু শ্রমিক দিয়ে কাজ করানো হলে লাভ হয় না।
পাবনা জেলার সিনিয়র মৎস কর্মকর্তা ও বেড়া উপজেলা মৎস কর্মকর্তার অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, খাঁচায় মাছ চাষ একটি লাভজনক পদ্ধতি। এতে মাছের উৎপাদন যেমন বাড়ে, পাশাপাশি মাছের গুণগতমানও উন্নত হয়। কারণ এই মাছ পুকুরে নয় নদীতে চাষ করা হয়। আর নদীর মাছের স্বাদ একটু আলাদা। আমরা খাঁচায় মাছ চাষে উৎসাহিত করছি।
(ঢাকাটাইমস/২৬অক্টোবর/এলএ)