দুই শিক্ষকে চলছে শতাধিক শিক্ষার্থীর বিদ্যালয়

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি
 | প্রকাশিত : ২৭ অক্টোবর ২০১৯, ১০:১২

শতাধিক শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে পাবনার চাটমোহর উপজেলার মল্লিকবাইন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তবে তাদেরকে পাঠদানে হিমশিম খেতে হচ্ছে স্কুলের দুই শিক্ষককে। দীর্ঘদিন ধরে মাত্র দু’জন শিক্ষক থাকায় শিক্ষার্থীদের মানসম্পন্ন পাঠদানের ব্যাঘাতের পাশাপাশি পরীক্ষায়ও নিয়মিত ক্লাসও বন্ধ হয়ে গেছে। আর নিয়মিত ক্লাস না হওয়ায় কমে গেছে শিক্ষার্থী উপস্থিতি হার।

শুধু শিক্ষক সংকটই নয়, এই স্কুলে শ্রেণীকক্ষ সংকটও রয়েছে। মাত্র দু’টি কক্ষতে দুই শিফটে শতাধিক শিক্ষার্থীকে কোনও মতে পাঠদান করানো হচ্ছে।

এদিকে দীর্ঘদিন ধরে স্কুলটিতে শিক্ষক সংকট থাকলেও সংশ্লিষ্ট বিভাগ এ ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। শিক্ষা কর্মকর্তাকে একাধিকবার জানানো হলেও ওই বিদ্যালয়ে নতুন কোনো শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়নি। অথচ পৌরশহরসহ উপজেলার বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ে চাহিদারও অধিক শিক্ষক রয়েছে।

গতকাল মল্লিকবাইন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষক না থাকায় প্রাক প্রাথমিক ও প্রথম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা একে অপরের সাথে খুঁনসুটিতে মেতে আছে। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা মোছা. আফরোজা খাতুন পঞ্চম শ্রেণীর চুড়ান্ত মডেল টেস্ট পরীক্ষার প্রশ্নপত্র গোছানো নিয়ে ব্যস্ত।

কাজের ফাঁকে মাঝে মধ্যে ক্লাসে গিয়ে তিনি শিক্ষার্থীদের লিখতে বলে আসছেন। আর সহকারি শিক্ষক আজিজুল ইসলাম কোনো সময় প্রাক প্রাথমিক আবার কেনো সময় প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর ক্লাস নিচ্ছেন। এই সুযোগে কিছু শিক্ষার্থী বাইরে ও শ্রেণীকক্ষের মধ্যে দৌঁড়াদৌড়ি করছিল। দুপুরের দিকে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণীর বেশ কিছু শিক্ষার্থীদের বাইরে দাঁড়িয়ে গল্প করতে দেখা যায়। এ সময় এই প্রতিবেদকের উপস্থিতি টের পেয়ে দ্রুত শিক্ষার্থীরা শ্রেণীকক্ষে চলে যায়।

জানা গেছে, ১৯৭২ সালে স্কুলটি প্রতিষ্ঠার পর ২০১৩ সালে সরকারিকরণ হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১২০ জন। গত বছরের নভেম্বর মাসে ওই স্কুল থেকে অবসরে যান সহকারী শিক্ষক আকবর আলী।

এর আগে একই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে পদায়ন নিয়ে অনত্র বদলী হন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মঞ্জু আরা পারভীন। এরপর ওই স্কুলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকার দায়িত্ব পড়ে আফরোজা খাতুনের ওপর। তিনি এবং সহকারি শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম বর্তমানে শতাধিক শিক্ষার্থীকে পাঠদান করাতে হিমসিম খাচ্ছেন।

এদিকে তিনকক্ষ বিশিষ্ট ভবনের একটি কক্ষে শিক্ষকরা ব্যবহার করে থাকেন। আর দু’টি কক্ষে দুই শিফটে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো হয়। এতে পাঠাদান মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। কমে গেছে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোছা. আফরোজা খাতুন বলেন, ‘বিদ্যালয়ে শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। এ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকসহ শিক্ষকের চাহিদা রয়েছে পাঁচজন। কিন্তু বর্তমানে আমি ও সহকারি একজন ছাড়া আর কেউ নেই।’

‘আমরা দুইজন শিক্ষক পাঁচটি ক্লাসের পাঠদান করতে হিমশিম খাচ্ছি। এ বিষয়ে শিক্ষা অফিসার স্যারকে বেশ কয়েকবার বলেছি। তিনি শুধু আশ্বাস দিয়েছেন। তবে কবে শিক্ষক দেয়া হবে তা জানি না।’

উপজেলা শিক্ষা অফিসার আশারাফুল ইসলাম জানান, ‘বিষয়টি আমি অবগত আছি। আমি ওই স্কুলের জন্য জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে ডেপুটেশনে শিক্ষক চেয়েছিলাম। কিন্তু সেটা পাওয়া যায়নি। তবে নতুন শিক্ষক নিয়োগ হওয়ার পর ওই স্কুলে নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে।’

(ঢাকাটাইমস/২৭অক্টোবর/প্রতিনিধি/ডিএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :