ডাকসু জিএসসহ ৩৪ শিক্ষার্থী ভর্তি

ঢাবির একাডেমিক কাউ‌ন্সি‌লে সাদা-নীলে বিতণ্ডা!

ঢা‌বি প্রতি‌নি‌ধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৮ অক্টোবর ২০১৯, ২৩:০৬

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ফোরাম একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় বাকবিতন্ডা হয়েছে।

আজ সোমবার বিকেলে অনু‌ষ্ঠিত একাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠকে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার একপর্যায়ে ডাকসু নির্বাচন কেন্দ্র করে ঢাবিতে ৩৪ জন শিক্ষার্থীকে ভর্তির বিষয় নিয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থিত নীল দল এবং বিএনপি সমর্থিত সাদা দলের শিক্ষকদের মাঝে তুমুল বাগবিতণ্ডা হয়। ডাকসুর জিএস ও ছাত্রলীগ থে‌কে অব্যাহ‌তি পাওয়া সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর ‘অবৈধভাবে’ এমফিলে ভর্তি হওয়া নি‌য়েও বিতণ্ডা হয়।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এমন সূত্র জানায়, সোমবার বিকেল তিনটার দিকে ঢাবির সিনেট ভবনে একাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠক শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অধ্যাপক, বিভাগের চেয়ারম্যান, বিভিন্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালকরা একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য। ঢাবি ভিসি অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে সভায় সব মিলিয়ে প্রায় দেড়শতাধিক শিক্ষক অংশ নেন।

সভায় সাদা দ‌লের আহবায়ক ও ঢাবির পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম সভার শেষ দিকে সুযোগ পান বক্তব্য দেওয়ার। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচনে ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনকে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার উদ্দেশ্যে ৩৪ জন শিক্ষার্থীকে অবৈধভাবে ভর্তির প্রতিকার না হতেই ডাকসুর নির্বাচিত জিএসের অপরাধবিজ্ঞান বিষয়ে এমফিলে ভর্তিসংক্রান্ত অনিয়মের কথা প্রকাশিত হয়েছে। আমরা মনে করি এটি ঢাবির ঐতিহ্য ও সুনামের জন্য অত্যন্ত হানিকর ঘটনা। সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়া ঢাবির দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য। কিন্তু আজ এ ঐতিহ্যটিও নষ্ট করে ফেলা হয়েছে।’

প্রথম থেকেই এ অন্যায় কাজের প্রতিবাদ এবং ৩৪ জনের ভর্তি বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন, ভিসি বরাবর স্মারকলিপি, শিক্ষকদের চিঠি দেওয়া এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের শাস্তি দাবি করা হচ্ছে জানিয়ে অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, ‘এরই মধ্যে আমরা ডাকসুর বর্তমান জিএসের বিধি বহির্ভূতভাবে এমফিল ভর্তির সংবাদ জেনে বিস্মিত ও হতবাক হয়েছি। আমরা আবারো এর তীব্র নিন্দা এবং ভর্তি বাতিল ও একটি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অপকর্মের সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে দ্রুত শাস্তির আওতায় আনার জন্য দাবি জানাচ্ছি।’

অবৈধ ভর্তি প্রক্রিয়ার তদন্ত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বরেণ্য ব্যক্তিদের নিয়ে একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠনের প্রস্তাব করে ড. ওবায়দুল ইসলাম বলেন, ‘এই তদন্ত কমিটির কাজ হবে উক্ত ভর্তির অনিয়ম তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা।’

তার এই বক্তব্যের পর আওয়ামী লীগ সমর্থিত নীল দলের অনেক শিক্ষক হট্টগোল শুরু করেন। তারা বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানান। এ সময় ভিসি বক্তব্য প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আপনারা এখানে রাজনীতি করতে এসেছেন।’ তুমুল বাগবিতণ্ডা আর হট্টগোলের মধ্যে অধ্যাপক ওবায়দুল ইসলামের বক্তব্য এক্সপাঞ্জের ঘোষণা দেন ভিসি।

এ বিষ‌য়ে অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম ঢাকাটাইমস‌কে ব‌লেন, ‘সাদা দ‌লের পক্ষ থে‌কে আমি বক্তব্য দি‌য়ে‌ছি। তারপর রুম উত্তপ্ত হয় । তারা বলছে কোনো অনিয়ম হয়নি। আমরা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছি অনিয়ম হয়েছে । পরে ভিসিও বলেছে জিএসের ভর্তিটা উপযুক্ত উপায়ে হয়নি। ফ্যাকাল্টি পাস হ‌য়ে আসেনি। অন্যদিকে ৩৪ জনের ভর্তির বিষয়ে ডিন সাহেব বোঝানোর চেষ্টা করেছেন যে তার ভুল হয়নি।’

ডাকসু নির্বাচনের আগে ঢাবির বা‌ণিজ্য অনুষ‌দের ব্যাংকিং বিভাগের অধীনে পরিচালিত ‘মাস্টার্স অব ট্যাক্স ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রামে’ ৩৪ জন শিক্ষার্থী করা হয়। তাদের কয়েকজন ডাকসু নির্বাচনে অংশ নেন। ডাকসু নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দিতে এই ৩৪ জনকে অনিয়ম করে ভর্তি করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। পরে ডাকসুর নির্বাচিত জিএসের এমফিল ভর্তিতেও অনিয়ম হয়েছে বলে খবর প্রকাশিত হয়।

(ঢাকাটাইমস/২৮অক্টোবর/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

শিক্ষা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :