দেশভাগের আলোচনায় সাধারণ মানুষের প্রতিনিধিত্ব নেই
ঢাকাটাইমস, শিক্ষা
| প্রকাশিত : ০৩ নভেম্বর ২০১৯, ২০:১৮
দেশভাগের ইতিহাসকে খুব সংকীর্ণ দৃষ্টিতে দেখা হয়। দেশভাগের ইতিহাসকে দেখা হয় শুধু কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে, দোষারোপ বা কৃতিত্বের প্রেক্ষিতে। এখানে সাধারণ মানুষের আখ্যান অনুপস্থিত বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মানববিদ্যা অনুষদের অধিকর্তা ড. মননকুমার মণ্ডল।
গত শুক্রবার রিডিং ক্লাব ট্রাস্ট আয়োজিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনিস্টিটিউটে দেশভাগ-আখ্যান ও প্রত্যাখ্যান: একটি পশ্চিমবঙ্গীয় প্রেক্ষিত শীর্ষক ৩৬২তম সাপ্তাহিক পাবলিক লেকচারে প্রবক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. মননকুমার মণ্ডল।
মননকুমার মণ্ডল বলেন, দেশভাগ নিয়ে গবেষণায় বাংলা ভাষাকে গুরুত্ব দেয়া হয়নি। বাংলার বিভাজন কেবল সামাজিক, অর্থনৈতিক নয়, ভাষিকও। ফলে দেখা যায় দেশভাগ সম্পর্কে বইয়ে যা আছে তা ১০ শতাংশ মানুষের প্রতিনিধিত্ব বহন করে। বৃহৎ জনগোষ্ঠির প্রতিফলন সেখানে নেই।
তিনি আরো বলেন, ১৯৪৭ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত দেশভাগের আলোচনায় ১৯৭১ কে রাখা হয়নি। মঙ্গলকাব্যের কালকেতুর লড়াই বাদ দিলে বাঙালি একটাই বীরত্বপূর্ণ যুদ্ধ করেছে। তবে ১৯৪৭ কে বাদ দিয়ে ১৯৭১কে মহিমান্বিত করে উপস্থাপন করলেও তা অপূর্ণ থেকে যায়। দেশভাগের আলোচনায় রাষ্ট্রের সরব বয়ান যেভাবে এসেছে, ব্যক্তির নীরব দীর্ঘশ্বাস সেভাবে আসেনি।
উক্ত লেকচারে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৬০ জন শিক্ষার্থী। উন্মুক্ত আলোচনায় শ্রোতারা বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর দৃষ্টিভঙ্গিই দেশভাগের বিষয়ে তাদের অবস্থান প্রকাশ করে। দেশভাগের ক্ষেত্রে কেবলমাত্র ব্যক্তিই দায়ী নয়। দেশভাগের ক্ষেত্রে দেশের ভদ্রলোক শ্রেণির ভূমিকা আছে। এবং সাধারণ মানুষের হাহাকার দেশভাগের বর্ণনায় যথাযথভাবে আসেনি।
রিডিং ক্লাব ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণদের একটি সংগঠন। ২০১১ সালে ক্লাবের যাত্রা শুরু হয়। ‘সিরিয়াস’ ধারার বইপত্র নিয়ে তর্ক-বিতর্কের মাধ্যমে জ্ঞানচর্চা করা এবং তরুণদের সাহিত্য সৃষ্টিতে উদ্বুদ্ধ করাই রিডিং ক্লাব ট্রাস্টের কাজ।
ইতোমধ্যে রিডিং ক্লাব আয়োজিত ৩০টি মাসিক পাবলিক লেকচার ও ৩৬১টি সাপ্তাহিক পাবলিক অনুষ্ঠিত হয়েছে। লেকচারগুলোতে বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান, নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস, অর্থনীতিবিদ ও ইতিহাসবিদ আকবর আলি খান, ইংরেজি দৈনিক ‘দ্য ডেইলি স্টার’ এর সম্পাদক মাহফুজ আনাম, লেখক ও গবেষক গোলাম মুরশিদসহ প্রমুখ।
ঢাকাটাইমস/৩নভেম্বর/আরআর