চট্টগ্রামে নিউজ গার্ডেনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

প্রকাশ | ০৪ নভেম্বর ২০১৯, ২২:০৪

চট্টগ্রাম ব্যুরো, ঢাকাটাইমস

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান বলেছেন, বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করাই হবে একজন সাংবাদিকের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। তবে সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করতে হলে একটা ভালো

পরিবেশ থাকা দরকার। সাংবাদিকদের ভালো পরিবেশ সৃষ্টি করে দেয়া আমাদের দায়িত্ব।

তিনি সোমবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে নিউজগার্ডেন টুয়েন্টি ফোর ডট কমের ৬ষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও এনজিটিভির উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, বস্তুনিষ্ঠ ও তথ্যনির্ভর সংবাদ পরিবেশন করে দেশ ও জাতিকে সচেতন করতে হবে। 

দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, গণমাধ্যম ও গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য সংবাদের বস্তুনিষ্ঠতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি, আপনারা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন ও গঠনমূলক সমালোচনার মাধ্যমে দেশ ও জাতির কল্যাণে সবাই সাংবাদিকের পেশাগত দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি-সুবিধা নিশ্চিত করাসহ দেশে-বিদেশে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। 

দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদের ব্যুরো চিফ কাজী আবুল মনসুর বলেছেন, সাংবাদিকেরা জাতির বিবেক। গণমাধ্যম সমাজের দর্পণ। সংবাদকর্মীরদের ক্ষুরধার লেখনিতে অনিয়ম, অন্যায়, দুর্নীতি, কুসংস্কার তুলে ধরা হয় পাঠকের সামনে। সমাজের মানুষ হয় সচেতন। আর এই মহৎ কাজের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন সাংবাদিকরা, হচ্ছেন নির্যাতিত এবং হচ্ছেন হয়রানির শিকার। এ উদ্বেগের জায়গা থেকে
আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। 

প্রবীণ সাংবাদিক ও চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের স্থায়ী সদস্য ইসকান্দর আলী
চৌধুরী বলেন, সাংবাদিকরা কোন কালেই কারো প্রতিপক্ষ ছিলেন না। এখনও নেই। সুস্থ ও সুন্দর ভবিষ্যৎ বিনির্মাণের লক্ষ্য নিয়েই তারা এই শঙ্কাকুল পেশায় কাজ করেন। সবারই স্মরণ রাখা উচিত হবে যে- দু-একজন কলমযোদ্ধাকে সরিয়ে দিয়ে
নিজের অপরাধ ঢাকা যায় না। সত্য একদিন বের হবেই। তাই উচিৎ হবে, আত্মশুদ্ধি করা। আর এটা ব্যক্তি, সমাজ তথা রাষ্ট্র সবার জন্যই মঙ্গল। 

প্রবীণ সাংবাদিক ও চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের স্থায়ী সদস্য জাহিদুল করিম কচি বলেন, সাংবাদিকেরা দুরন্ত সাহস নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেন। এজন্যই নানা অনিয়ম-দুর্নীতি রুখে দেয়া যায়। জনগণের অর্থ লোপাট বন্ধ হয়। গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকে। জনকল্যাণ নিশ্চিত করা যায়। সরকারের উচিত হবে, দেশের স্বার্থে সাংবাদিকদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে অনুধাবন করা। যাদের বিরুদ্ধে সাংবাদিক নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগ উঠে, তাদের চিহ্নিত করা এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। এজন্য সরকার ও পুলিশ প্রশাসন দায়িত্বশীলতার ক্ষেত্রে আরো আন্তরিক হবেন- এটাই আমাদের
কাম্য। 

নিউজগার্ডেনের সম্পাদক কামরুল হুদার সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠিত হয়। তিনি বলেন, সাংবাদিকতা একটা মহান পেশা, যদি তা হয়- নির্ভয়ে সত্যের অনুসন্ধান, মিথ্যা এবং চাটুকারিতার সাথে আপস না করা
এবং একটি অভিযোগের সাথে একাধিক ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতার ক্ষেত্রে সকল পক্ষের বক্তব্য নিয়ে সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করা। আমি মনে করি, প্রেস স্টিকার লাগিয়ে মোটরবাইক ড্রাইভ করে সংবাদ সংগ্রহ সাংবাদিকের
একমাত্র কাজ নয়। হালকা চটুল সংবাদ পরিবেশন একজন সাংবাদিকের দৃঢ়তম অবস্থানকে নড়বড়ে করে দেয়- সুনামের বদলে দুর্নাম জোটে। একতরফা সংবাদ পরিবেশন একজন সাংবাদিকের ক্রিয়াকলাপকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

মোজাফফর সিকদারের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন- দৈনিক নয়াবাংলার সম্পাদক জিয়াউদ্দিন এম এনায়েতউল্লাহ। তিনি বলেন, একটি ভুল তথ্য দেশ ও জাতির অমঙ্গল ডেকে আনতে পারে। তাই ভুল সংবাদ পরিবেশন না করে অপরাধী যে দল বা গোষ্ঠীরই হোক, তাদের বিরুদ্ধে লেখনির মাধ্যমে গণসচেতনার সৃষ্টির করতে হবে।

চট্টগ্রাম
রিপোর্টার্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অলিউর রহমান বলেন, সাংবাদিকেরা নিজের সততা ও যোগ্যতা দিয়ে দেশ ও জাতির উন্নয়নে কাজ করতে হবে। যেখানে অনিয়ম দুর্নীতি সেখানেই সাংবাদিকেরদের ক্ষুরধার লেখনী তা দূর হবে। 

যমুনা টিভির ব্যুরো চিফ জামসেদ রেহমান চৌধুরী বলেন, বর্তমান সময়ে সংবাদের নিরপেক্ষতা আর সত্যতা যাচাই করাই প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে। ডিজিটাল বিশ্ব আর অনলাইনের যুগে পৃথিবীর প্রতিটি দেশেই ছাপানো পত্রিকার প্রচারসংখ্যা কমছে। মানুষের হাতেহাতে স্মার্টফোন আর সহজলভ্য ইন্টারনেটের কারণে মানুষ খুব সহজেই সব ধরনের নিউজ হাতের কাছে পেয়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে পত্রিকা, টেলিভিশন ছাড়াও খবরপ্রাপ্তির মাধ্যম হিসেবে যুক্ত হয়েছে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদি।

দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক আলী আব্বাস বলেন, পত্রিকার মাধ্যমে সৃজনশীল লেখক-সাংবাদিক তৈরি হবে। তারা তাদের লেখনীর মাধ্যমে শিল্প ও সাহিত্যকে এগিয়ে নিয়ে জাতির সেবায় নিয়োজিত থাকবেন, দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নেবেন।

নিউজগার্ডেনের বার্তা সম্পাদক সাইফুর রহমান সাইফুল বলেন, একজন সাংবাদিককে হতে হবে অনুসন্ধিৎসু, পাশাপাশি সৃজনশীলতা একজন সাংবাদিককে তার পেশার বাইরেও তাকে সুনাম এবং খ্যাতি এনে দিতে পারে। 

বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি মো. ইলিয়াছ, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ার হোসেন লিপু, দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদের স্টাফ রিপোর্টার শহিদুল ইসলাম, রেডিও টুডের ব্যুরো চিফ সালেহ নোমান, দৈনিক পূর্বদেশের সিনিয়র রিপোর্টার এমএ হোসাইন, চাটগাঁ ডাইজেস্টের সম্পাদক সিরাজুল করিম মানিক, দৈনিক ভোরের কাগজের
সিনিয়র রিপোর্টার প্রীতম দাশ, ভোরের ডাকের ব্যুরো চিফ কিরণ শর্মা, আজকের সূর্যোদয়ের সাংবাদিক গোলাম সরওয়ার, বাস্তুহারা লীগের চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি রাশেদ সোলায়মান, সমাজসেবক মো. হোসেন, চট্টগ্রাম মহানগর মহিলাদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফাতেমা বাদশা, সাধারণ সম্পাদক জেলী চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা বিএনপি নেতা সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, মো. মুসা, সাংবাদিক আমিনুল ইসলাম, ইদ্রিস আলী, জাকির হোসেন, ডা. এম এ মাজেদ, সুমন সেন, দেবাশীষ

দাশ রাজ, হাটহাজারী প্রতিনিধি ওসমান গণি, ব্যবসায়ী আবদুল মালেক, শিক্ষাবিদ আবু তাহের, ১৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা তারিকুল ইসলাম রানা, ভোক্তা অধিকার নেতা সরওয়ার আলম, জাবেদুর রহমান, আবদুল হান্নান কাজল, ব্যবসায়ী শেফায়তুল হক জাবেদ, রাজিব চক্রবর্তী, আরিফুল কবীর, যুবলীগ নেতা টিপু সুলতান, ১৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ মহিলা সম্পাদিকা মনিষা সেন, সমীর কান্তি দাশ, ডা. শ্যামল সেন, নাছির হোসেন, শিশু শিল্পী টক্কি সেন প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/৪নভেম্বর/এলএ)