অধ্যক্ষকে পানিতে ফেলার মূল অভিযুক্তরা এখনও অধরা

ব্যুরো প্রধান, রাজশাহী
 | প্রকাশিত : ০৫ নভেম্বর ২০১৯, ১৬:০৬

রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষকে টেনেহিঁচড়ে পানিতে নিক্ষেপের ঘটনার মূল অভিযুক্তরা এখনও অধরাই রয়ে গেছেন। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তাদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু পুলিশ বলছে, তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে শিঘ্রই তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

এদিকে মঙ্গলবার পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত করে ক্লাসে ফিরেছেন। তবে ক্লাসে ফেরার আগেও তারা ক্যাম্পাসে সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত, ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ এবং মূল অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন। তা না হলে তারা আবারও আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছেন।

এসব বিষয় নিয়ে নগর পুলিশের উপকমিশনার সাজিদ হোসেনসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা পলিটেকনিকের শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। মঙ্গলবার সকালে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে অধ্যক্ষের কার্যালয়েই এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় শিক্ষকরাও মূল অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান। পুলিশের পক্ষ থেকে আশ^স্ত করা হয়েছে যে, দ্রুত সময়ের মধ্যেই মূল অভিযুক্তরা ধরা পড়বে।

মিডটার্ম পরীক্ষায় ফেল এবং ক্লাশে অনুপস্থিত থাকা পলিটেকনিক শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক কামাল হোসেন সৌরভকে ফাইনাল পরীক্ষায় সুযোগ দেয়ার জন্য গত শনিবার দুপুরে নেতাকর্মীরা অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিন আহমেদের কার্যালয়ে গিয়ে তাকে চাপ দেন। এ নিয়ে অধ্যক্ষের সঙ্গে তাদের তর্কবিতর্ক হয়। এর জের ধরে দুপুরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অধ্যক্ষকে টেনেহিঁচড়ে ক্যাম্পাসের ভেতরের একটি পুকুরের পানিতে ফেলে দেয়। ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজে ঘটনাটি ধরা পড়ে।

এ ঘটনায় নগরীর চন্দ্রিমা থানায় ৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন অধ্যক্ষ। এতে সাতজনের নাম উল্লেখ করা হয়। এরা হলো- প্রতিষ্ঠানটির কম্পিউটার বিভাগের অষ্টম পর্বের ছাত্র কামাল হোসেন সৌরভ, ইলেকট্রনিক্সের পঞ্চম পর্বের মুরাদ, পাওয়ারের সাবেক ছাত্র শান্ত, ইলেক্টিক্যালের সাবেক ছাত্র বনি, মেকাট্রনিক্সের সাবেক ছাত্র হাসিবুল ইসলাম শান্ত, ইলেকট্রমেডিকেলের সাবেক ছাত্র সালমান টনি, এই বিভাগের সপ্তম পর্বের ছাত্র হাসিবুল এবং কম্পিউটারের সাবেক ছাত্র মারুফ। বাকি আসামিরা অজ্ঞাত। ঘটনার পর শনিবার ও রবিবার রাতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ নয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে মামলার এজাহারে উল্লেখ থাকা মূল অভিযুক্তরা মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়নি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নগরীর চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, মূল অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করতে সব ধরনের প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে অভিযানও চলছে। কিন্তু তাদের নাগাল পাওয়া যাচ্ছে না। তবে গ্রেপ্তার মোট নয়জনের মধ্যে আরিফুল ইসলাম নামে একজন রয়েছে, যাকে ছাত্রলীগের অন্য নেতাকর্মীদের সঙ্গে অধ্যক্ষের কার্যালয়ে গিয়ে দুর্ব্যবহার করতে দেখা গেছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখেই তাকে চিহ্নিত করা হয়েছে।

এদিকে ঘটনা তদন্তে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। অধিদপ্তরের পরিচালক এসএম ফেরদৌস আলম কমিটির প্রধান। রবিবার থেকেই তদন্ত কমিটি ক্যাম্পাসে গিয়ে তদন্ত শুরু করেন। তারা ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের একটি টর্চার সেলের সন্ধান পান। সোমবার সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলে তদন্ত কমিটির সদস্যরা ঢাকায় ফেরেন। মঙ্গলবারই কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার কথা রয়েছে।

এদিকে ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করে ঘটনাটি তদন্ত করছে রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগ। আর ইতিমধ্যে পলিটেকনিক শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক কামাল হোসেন সৌরভকে স্থায়ী বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় কমিটি। একইসঙ্গে রাজশাহী পলিটেকনিকে ছাত্রলীগের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।

ঢাকাটাইমস/৫নভেম্বর/আরআর/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

ফেসবুক আইডি ক্লোন করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ, যুবক গ্রেপ্তার

ফরিদপুর প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দের সঙ্গে পুলিশ সুপারের মতবিনিময়

পতেঙ্গায় ফিশিং বোটের ইঞ্জিন বিস্ফোরণে ৪ জন দগ্ধ

চট্টগ্রামে ঈদকে সামনে রেখে জালনোট চক্রের ৩ সদস্য গ্রেপ্তার

বরিশালে নামাজের সময় মসজিদের এসি বিস্ফোরণ

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দ্রুতগতির লেনে যাত্রী নামানোর অপরাধে ৩৩ যানবাহনকে মামলা 

বরগুনা প্রেসক্লাব দখলের মামলায় ৭ জন কারাগারে  

পর্যটকদের আকৃষ্ট করছে তাহিরপুরের শহীদ সিরাজ লেক

ঝিনাইদহে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু

ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :