জাবি ভিসির দুর্নীতি প্রমাণে ব্যর্থ হলে ব্যবস্থা: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০১৯, ১৩:৫৩ | প্রকাশিত : ০৭ নভেম্বর ২০১৯, ১০:৩৯

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হলে অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাবি উপাচার্যের দুর্নীতির প্রমাণ দিতে পারলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হলে অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে দুঃস্থ ও অসচ্ছ্বল সাংবাদিকদের আর্থিক সহায়তা দেওয়ার জন্য এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

জাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে বেশ কয়েকদিন ধরেই আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন ভিসিবিরোধী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

গত মঙ্গলবার আন্দোলনকারী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনার পর সেদিনই জরুরি সিন্ডিকেট সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এছাড়া বিকাল সাড়ে পাঁচটার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশ উপেক্ষা করে আন্দোলন করতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল বিকাল সাড়ে তিনটার মধ্যে হল ছাড়ার জন্য আবার নির্দেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে আন্দোলন করতে থাকেন ভিসিবিরোধী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কয়েকটা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসির বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছে। ক্লাস বর্জন, ভাঙচুর, অবরোধ চলছে। এগুলো সন্ত্রাসী কার্যকলাপ। ছাত্র-শিক্ষকরা এসব কেন করবে?’

‘সময় নষ্ট করবেন, ক্লাস চলতে দেবেন না, ভিসির বাড়িতে, অফিসে আক্রমণ, ভাঙচুর করবেন, দিনের পর দিন ক্লাস বন্ধ থাকবে এটা তো হয় না।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা কথা বলছে, বক্তৃতা করছে, আন্দোলন করেছে সব রেকর্ড থাকবে। তারা যদি প্রমাণ করতে না পারে, মিথ্যা অভিযোগের জন্য তার শাস্তি হবে। এভাবে দিনের পর দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে, সেটা কিন্তু আমরা বরদাশত করব না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভিসির বিরুদ্ধে দুর্নীতির যেসব অভিযোগ তুলেছে, এর সুনির্দিষ্ট তথ্য তো তাদের কাছে থাকার কথা। তারা যদি অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হয়, তাহলে তাদেরও সাজা হবে। যে মিথ্যা অভিযোগ করবে, তার শাস্তি হবে। এটি কিন্তু আইনেও আছে মিথ্যা অভিযোগ করলে আইন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। আমরা কিন্তু সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্বায়ত্তশাসন আছে। কিন্তু প্রতিবছর আমরা ভর্তুকি দেই। এরপরও ক্লাস বন্ধ থাকে, এটা কেন। বুয়েটে আবরার হত্যার ঘটনার পর যা যা প্রয়োজন সব ব্যবস্থা নিলাম। এরপরও আন্দোলন কেন। এরকম চললে ক্লাস বর্জন করলে সাথে সাথে এক্সপেল করতে হবে। ক্লাস কেন বন্ধ থাকবে? দিনের পর দিন আন্দোলন ও ক্লাস বন্ধ কেন?- প্রশ্ন রাখেন শেখ হাসিনা।

অনুষ্ঠানে কিশোর আলোর অনুষ্ঠানে ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল স্কুল এন্ড কলেজে শিক্ষার্থী নাইমুল আবরারের মৃত্যু প্রসঙ্গেও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। আবরারের অপমৃত্যুর ঘটনায় প্রথম আলো কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ছিল বলে মন্তব্য করে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, এমন গর্হিত অপরাধ বরদাস্ত করা যায় না।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা অনুষ্ঠান আয়োজন করে তাদের একটা দায়িত্ব থাকে। রেসিডেন্সিয়ালের একটা ঘটনা ঘটল। আয়োজকরা এটাকে এতটা নেগলেক্ট করেছে! বাচ্চাটা মারা গেছে, এরপরও ঘটনাটা চাপা দিয়ে অনুষ্ঠান চালিয়ে গেছে। ধানমন্ডিতে এতোগুলো হাসপাতাল, তবুও মহাখালীতে নিয়ে গেলো। প্রথম আলো এই ধরনের একটা ঘটনা কীভাবে ঘটায়? তাদের কোনও দায়বদ্ধতা নেই? ছোট ছোট বাচ্চারা এখানে পড়াশোনা করছে। তাদের নিরাপত্তা না দেখা এটাও তো গর্হিত অপরাধ। এটা তো বরদাশত করা যায় না।’

এ সময় ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত হত্যার ঘটনায় সাংবাদিকদের পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। পরে দুঃস্থ সাংবাদিকদের হাতে চেক তুলে দেন সরকারপ্রধান।

ঢাকাটাইমস/৭নভেম্বর/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :